করনিয়াল আলসার কাকে বলে?
করনিয়াল আলসার, যেটা কেরাটাইটিস নামেও পরিচিত, সেটা আসলে চোখের কর্নিয়াতে গুরুতর রকমের প্রদাহজনিত অবস্থা। ভারতে এর সামগ্রিক প্রাদুর্ভাব কত, তা এখনও অজানা।
এই রোগের প্রধান লক্ষণ ও উপসর্গ কি কি??
যে উপসর্গগুলি লক্ষ্য করা যায়:
- চোখ লাল হয়ে যাওয়া
- চোখে ব্যথা ও ফোলাভাব
- পূঁজ জমা অথবা সেই রকম কিছু বের হওয়া
- চোখ জ্বালা করা
- চোখ দিয়ে জল পড়া
- আলো সহ্য করতে না পারা
- ঝাপসা দৃষ্টি
- চোখের পাতা ফুলে যাওয়া
- কর্নিয়াতে সাদা ছোপ পড়ে যাওয়া
এর প্রধান কারণগুলি কি কি?
করনিয়াল আলসার হওয়ার কারণগুলি হলো:
- ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ:
- সাধারণত, যাঁরা কন্ট্যাক্ট লেন্স ব্যবহার করেন, তাঁদের মধ্যে দেখা যায়। বিশেষ করে যাঁরা অনেকক্ষণ ব্যবহার করেন।
- ভাইরাসের সংক্রমণ:
- প্রধানত, হারপিস সিমপ্লেক্স ভাইরাস কারণে কোল্ড সোর্ বা ঠান্ডা লেগে যে ঘা তৈরি হয়।
- অতিরিক্ত ধকল, দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং বেশি রোদে বেরোনো।
- ছত্রাকের সংক্রমণ:
- ছত্রাকের সংক্রমণ স্টেরোয়েড জাতীয় আই-ড্রপ ব্যবহার করলে অথবা ঠিক মতো কন্ট্যাক্ট লেন্স ব্যবহার করতে না জানলে কর্নিয়াতে সংক্রমণ হতে পারে।
- পরজীবী ঘটিত সংক্রমণ:
- একান্থামোবিক সংক্রমণ।
- চোখ কোনওভাবে পুড়ে গেলে বা আঘাত পেলে।
ক্ষতির কারণ যা যা হতে পারে:
- কন্ট্যাক্ট লেন্সের ব্যবহার।
- কোল্ড সোর বা চিকেন পক্স হওয়া।
- স্টেরোয়েড জাতীয় আই-ড্রপ ব্যবহার করা।
- চোখের পাতার কোনও ব্যধি থাকা।
- কর্নিয়া আঘাত পেলে বা পুড়ে গেলে।
এর নির্ণয় এবং চিকিৎসা কিভাবে করা হয়?
নিয়মিত চোখের পরীক্ষা করানো, সাথে সাথে যদি কোনও চিকিৎসাজনিত ইতিহাস থেকে থাকে বা পুরনো কোনও চোখের আঘাত থেকে থাকে এবং কন্ট্যাক্ট লেন্স ব্যবহার করেন কিনা ইত্যাদি খেয়াল রাখা। এছাড়া, আর যেসব :
- স্লিট ল্যাম্প টেস্ট।
- ফ্লুরোসেইন স্টেইন: করনিয়াল কোনও ক্ষতি হয়েছে কিনা তা নির্ধারণ করার জন্যে।
- চোখ থেকে নমুনা নিয়ে পরীক্ষা করে দেখা: কি ধরণের সংক্রমণ হয়েছে, তা নির্ধারণ করার জন্য।
- কনফোকাল মাইক্রোস্কোপি: করনিয়াল প্রতিটি কোষের ছবি তোলার জন্য।
- হাই ডেফিনেশন ফোটোগ্রাফি।
করনিয়াল আলসার চিকিৎসার জন্য অ্যান্টিবায়োটিক, অ্যান্টিব্যাক্টিরিয়াল বা অ্যান্টিফাংগাস আই-ড্রপ ব্যবহার করা হয়। সংক্রমণ কমে গেলে স্টেরোয়েড জাতীয় আই-ড্রপও দেওয়া হয়। ব্যথা থাকলে পেইন-কিলারও দেওয়া হয়, যদি থাকে।
অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে করনিয়াল প্রতিস্থাপন বা ট্রান্সপ্লান্ট করে দৃষ্টি ফিরিয়ে আনা হয়
নিজের যত্ন কিভাবে নেবেন:
- চোখকে রক্ষা করে এমন চশমা বা রোদচশমা পরে নিজের চোখ রক্ষা করুন
- ঘুমোনোর আগে কন্ট্যাক্ট লেন্স খুলে রাখুন.
- সংক্রমণ এড়াতে ঠান্ডা জল দিয়ে বারবার চোখ ধুয়ে নিন.
সম্পূর্ণভাবে দৃষ্টি হারানো বা অন্ধ হওয়ার আগেই চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞকে অবিলম্বে দেখান।