ডিস্টোনিয়া কি?
বিভিন্ন পেশীসংক্রান্ত রোগের একত্রিত নাম হল ডিস্টেনিয়া যা বারংবার অনৈচ্ছিক পেশীর আন্দোলন এবং অস্বাভাবিক অঙ্গভঙ্গির নেতৃত্ব দেয়। পেশীগত আন্দোলন একটি মাত্র পেশীতে, তাদের একটি গোষ্ঠীতে বা শরীরের সমগ্র পেশীতে হতে পারে। এই আন্দোলন বারংবার হয় এবং খিল ধরা এবং মোচড় থেকে কাঁপুনিতে পরিবর্তিত হতে পারে।
এর প্রধান লক্ষণ এবং উপসর্গগুলি কি কি ?
পেশীর অতিরিক্ত সক্রিয়তা হল ডিস্টোনিয়ার প্রধান লক্ষণ। উপসর্গগুলি আপনার শরীরের যে কোন অংশে এবং যে কোন বয়সে দেখা দিতে পারে। রোগটি সাধারণত আরত্ত স্থিতিশীল বা খারাপ হয়, কিন্তু বিরলক্ষেত্রে উল্টোটাও হতে পারে। ডিস্টোনিয়ার সাথে যুক্ত নিম্নলিখিত সাধারণ উপসর্গগুলি হল:
- পায়ের পাতায় খিল ধরা এবং টান ধরা
- হঠাৎ ঘাড়ে ঝাঁকুনিপূর্ণ অান্দোলন
- এক বা দুই চোখের ঘনঘন পাতা পড়া বা চোখ বন্ধের সময় খিঁচুনি
- হাতের অনৈচ্ছিক ঝাঁকুনিপূর্ণ আন্দোলন
- কথা বলতে এবং চিবতে সমস্যা
এই উপসর্গগুলির গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল যে তারা শুরুতে হালকা হয় এবং চাপ বা অবসাদের দ্বারা প্ররোচিত হয়, কিন্তু রোগটি খারাপের দিকে গেলে, এগুলিই ঘনঘন এবং লক্ষনীয় হতে পারে। তাদের এমনকি অস্বাভাবিক অঙ্গভঙ্গি হতে পারে।
এর প্রধান কারণগুলি কি কি ?
ডিস্টোনিয়ার ক্লিনিক্যাল উপসর্গগুলির কারণ সনাক্ত করতে সাহায্য করে, এবং একবার সঠিক কারণ জানা গেলে, চিকিৎসার পরামর্শ দেওয়া যেতে পারে। যাইহোক, অধিকাংশ ক্ষেত্রে, সঠিক কারণ জানা যায় না। নিম্নলিখিত কারণগুলি ডিস্টোনিয়ার বৃদ্ধিতে সাহায্য করতে পারে :
- জেনেটিক বা জিনগত কারণ : 1-2 শতাংশ ক্ষেত্রে কতগুলি ত্রুটিপূর্ণ জিনের কারণে ডিস্টোনিয়া হতে পারে
- পারকিনসনের রোগ, সেরিব্রাল পালসি এবং মাল্টিপেল স্ক্লেরোসিসের মত অবস্থাগুলি
- অক্সিজেন কমে যাওয়া
- কার্বন মনোক্সাইডের বিষক্রিয়া
এটির নির্ণয় এবং চিকিৎসা কিভাবে করা হয়?
ডিস্টোনিয়ার রোগ নির্ণয়ে বিবেচিত বিষয়গুলির মধ্যে রয়েছে পরিবারের ইতিহাস, রোগীর বয়স, শরীরের আক্রান্ত অংশ এবং ডিস্টোনিয়া আলাদা বা অন্য আন্দোলন ব্যাধি সঙ্গে মিলিত কিনা। ডিস্টোনিয়ার উপস্থিতি বোঝার জন্য আক্রান্ত অংশের শারীরিক পরীক্ষা করার সুপারিশ করা হতে পারে। যাইহোক, একইরকম উপসর্গের সাথে রোগ নির্ণয় নিশ্চিত করতে এবং অন্যান্য রোগ বাতিল করতে, নিম্নলিখিত পরীক্ষাগুলির প্রয়োজন:
- এমআরআই (MRI) ব্যবহার করে নিউরোইমেজিং
- জিনগত পরীক্ষা
- স্নায়ুর অবস্থা পরীক্ষা এবং সোমাটোসেনশরি ইভোকড পোটেনশিয়াল পরীক্ষর মত নিউরোফিজিওলজিক্যাল পরীক্ষা
- অপথ্যালমোলজিক্যাল পরীক্ষা
- রক্ত পরীক্ষা
- কোষের বায়োপসি
একবার ডিস্টোনিয়া নির্ণয় নিশ্চিত করা গেলে, চিকিৎসার সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে। ডিস্টোনিয়ার চিকিৎসায় স্বাস্থ্যবিধিগুলি হল :
- শারীরিক এবং পেশাগত থেরাপি : রোগীর জন্য কাস্টমাইজড ব্যায়াম সহায়ক হতে পারে।
- মৌখিক ওষুধ :
- অ্যান্টিকোলিনারজিক্স
- পেশীর রির্যাক্সটেন্টস
- ডোপামিনারজিক
- গাবারজিক্স (গামা-অ্যামাইনোবিউটেরিক অ্যাসিড- আরজিক্স)
- বোটুলিনাম নিউরোটক্সিন : বোটুলিনাম টক্সিন ইনজেকশনের প্রভাব 3-4 মাস থাকে, তারপরে পরবর্তী শটের (নিক্ষেপের) জন্য আপনাকে ক্লিনিকে যাওয়ার প্রয়োজন হতে পারে।
- অস্ত্রোপচারগত হস্তক্ষেপ :
- নিউরোমডিউলেশন
- অ্যাবলেটিভ এ্যাপ্রোচেস
- প্রান্তস্থ বা পেরিফেরাল সার্জারিস
শিক্ষা এবং পরামর্শদান : উপরিউক্ত থেরাপিগুলির অনেকগুলি সম্পূর্ণভাবে আরোগ্যক্ষম নয়, সুতরাং এই অবস্থা সম্পর্কে শিক্ষা এবং কাউন্সেলিং সহায়ক হতে পারে।