কব্জিতে ফ্র্যাকচার (কব্জির হাড় ভেঙে যাওয়া) কি?
কব্জি 8 টি ছোটো হাড় দিয়ে গঠিত যেটা বাহুর 2 টি লম্বা হাড়ের সাথে যুক্ত থাকে একটা হাড়ের সন্ধি গঠনের জন্য। এই আটটি হাড়ের যে কোনো একটা হাড় ভেঙে গেলেই কব্জিতে ফ্র্যাকচার বা কব্জির হাড় ভেঙে যাওয়া ঘটে। এটা কতটা যন্ত্রণাদায়ক হতে পারে, সেটা নির্ভর করে কতটা গুরুতরভাবে ভেঙেছে ও আঘাতের কারণের উপর।
এর প্রধান লক্ষণ ও উপসর্গগুলো কি কি?
- কব্জিতে ফ্র্যাকচারের (কব্জির হাড় ভেঙে যাওয়া) উপসর্গগুলো অন্যান্য পরিচিত হাড় ভাঙার মতোই হয়।
- আপনার ব্যথা অনুভূত হবে, যেটা প্রচন্ড ভাবে হবে যদি আপনি ভাঙা কব্জিটা সামান্য নাড়ানোরও চেষ্টা করেন।
- কব্জিতে ব্যথার সাথে ফোলাভাব এবং কালশিটে দাগও থাকতে পারে।
- যদি ভাঙার কারণে ত্বকের নিচের শরীরকলাগুলি উন্মুক্ত হয়ে যায়, তাহলে সংক্রমণের সম্ভাবনা থাকে।
- যখন হাড় ভেঙে যায় তখন কব্জি এমন কি বৃদ্ধাঙ্গুলেরও আকার বিকৃত দেখাতে পারে।
- ব্যথা ছাড়াও, ব্যাক্তিটি একটা চিনচিনে সুঁচ ফোটানোর মতো অনুভূতি এবং হাতে অসাড়তা বোধ করেন।
- যদি হাড় নিজের জায়গা থেকে সরে যায়, তাহলে একে ডিসপ্লেস্ড ফ্র্যাকচার বলা হয়।
এর প্রধান কারণগুলি কি কি?
- কব্জিতে ফ্র্যাকচার সাধারণত পড়ে যাওয়ার কারণে হয়ে থাকে। যখন কোন ব্যাক্তি নিজের হাতের উপরে এমনভাবে পড়ে যাতে কব্জিতে আঘাত লাগে বা পুরো শরীরের ভরটা কব্জির উপর পরে তাহলে কব্জিতে ফ্র্যাকচার হয়।
- কব্জিতে কোনো ভারী জিনিস দিয়ে জোরে আঘাত লাগা বা কব্জির উপর কোনো ভারী জিনিস পড়ে গেলেও কব্জির হাড় ভেঙে যেতে পারে।
- খেলাধুলায় কোনো বিশেষ গতিবিধির জন্যও কব্জির হাড় ভেঙে যেতে পারে।
এটি কিভাবে নির্ণয় করা হয় ও এর চিকিৎসা কি?
- শারীরিক পরীক্ষা দ্বারা ফোলাভাব বা কালসিটে দাগের অস্তিত্ব জানা যায়। চিকিৎসক কব্জির এক্স-রে করতে দেন এক্ষেত্রে।
যদি সন্দেহ করা হয় যে হাড় অনেক টুকরোয় ভেঙেছে, তাহলে সিটি স্ক্যান বা এমআরআই করতে বলা হয়। চিকিৎসা পদ্ধতিটি স্থির হবে কোন হাড় ভেঙেছে, কতটা গুরুতরভাবে ভেঙেছে এবং হাড়টা নিজের জায়গায় আছে না জায়গা থেকে সরে গেছে তার ভিত্তিতে।
- চিকিৎসক ব্যথা কমানোর জন্য ওষুধ দেন ও যদি সংক্রমণ হয় তাহলে অ্যান্টিবায়োটিক দেন।
- স্প্লিন্ট বা বন্ধফলক অথবা কাস্ট হোল্ড বা ঢালাই দ্বারা হাড় আঁটিয়া রাখার ব্যবস্থা করা হয় হাড়টিকে স্বস্থানে রাখার জন্য ও তাকে স্থিতিশীল করার জন্য। হাড় না সরে যাওয়ার ক্ষেত্রে এটি ফলদায়ক হয়।
- কখনো কখনো, প্লেট এবং স্ক্রু দরকার পরে হাড়কে স্বস্থানে স্থিতিশীল করতে। এটা একটা অপারেশন প্রক্রিয়া সরে যাওয়া হাড় ঠিক করার ক্ষেত্রে।
- কব্জির ব্যায়াম ও ফিজিওথেরাপি, যেভাবে চিকিৎসক বলে দেবেন, সেভাবে করলে লাভদায়ক হয়।
- গুরুতর জটিলতা না থাকলে বেশীরভাগ হাড় ভাঙা 8 সপ্তাহেই ঠিক হয়ে যায়। যাইহোক, সম্পূর্ন সুস্থ হতে কয়েকমাস সময় লাগতে পারে।