কানে কম শোনা কি?
কানে কম শোনা হল শব্দ শোনার ক্ষমতা কমে যাওয়া যা এক বা উভয় কানকে প্রভাবিত করতে পারে। না শোনার অক্ষমতার উপর নির্ভর করে, কানে কম শোনাকে মৃদু, মাঝারি এবং তীব্র হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ করা যেতে পারে। খুব কম থেকে না শোনাকে বধিরতা বলে। এই অবস্থাটি কারণের উপর নির্ভর করে স্থায়ী বা অস্থায়ী হতে পারে।
ডব্লুএইচও অনুসারে, 2050 সালের মধ্যে, সারা বিশ্বজুড়ে 90 মিলিয়নের থেকে বেশি মানুষ শোনার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলবে। ভারত হল সেরকম একটা দেশ যেখানে কানে কম শোনার ব্যাপকতা বেশি।
এর সাথে জড়িত প্রধান লক্ষণ এবং উপসর্গগুলি কি কি?
কানে কম শোনা হল নিজেই একটি উপসর্গ। কানে কম শোনার দিকে ইঙ্গিত করা লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে:
- সশব্দ পরিবেশে শুনতে গেলে কষ্ট হওয়া।
- কথোপকথনের সময় কম প্রতিক্রিয়া।
- খুব জোরে গান শোনা বা টিভি দেখা।
- বারবার অন্যদেরকে এক কথা জিজ্ঞেস করা।
এর প্রধান কারণগুলি কি কি?
কানে কম শোনা সাধারণত স্বাভাবিক বার্ধক্যের প্রক্রিয়ার কারণে বয়স্কদের মধ্যে দেখা যায়, যার ফলে কোষ নষ্ট হয়ে যায়। 40 বছর বয়সের শুরু থেকে আপনি শোনার অসুবিধা অনুভব করা শুরু করতে পারেন।
শিশুদের মধ্যে কানে না শুনতে পাওয়ার অক্ষমতা বিভিন্ন কারণে হতে পারে যেমন:
- জেনেটিক।
- গর্ভাবস্থার সময় সংক্রমণ।
- গর্ভাবস্থায় কিছু নির্দিষ্ট ওষুধ খাওয়া।
- জন্মের এক মাসের মধ্যে জণ্ডিস হওয়া।
- জন্মের সময় কম ওজন হওয়া।
- জন্মের সময় অক্সিজেনের অভাব।
শ্রবণশক্তিকে আক্রান্ত করতে পারে এমন অন্যন্য কারণগুলির মধ্যে রয়েছে:
- মেনিঞ্জাইটিস, মিসেল, মাম্পসের মত রোগ।
- কানে সংক্রমণ হওয়া।
- ওষুধ।
- মাথায় বা কানে ক্ষত।
- কানের খইল।
- কাজের জায়গায় বা বিনোদনমূলক পরিবেশে (কনসার্ট, নাইটক্লাব, পার্টি) আওয়াজের মধ্যে থাকা যার মধ্যে রয়েছে খুব জোর আওয়াজের হেডফোন বা ইয়ারফোনের ব্যবহার করা।
এটি কীভাবে নির্ণয় এবং চিকিৎসা করা হয়?
যদি আপনার মনে হয় যে আপনার শোনার সমস্যা আছে তাহলে ডাক্তারের সাথে কথা বলুন (একটি অডিওলজিস্ট)। আপনার ডাক্তার আপনার কানে কম শোনার কারণ খুঁজে বের করবেন এবং তা নিয়ন্ত্রণের পরিকল্পনা নিশ্চিত করবেন। যদি কানের খইল থাকাই কারণ হয় তাহলে কানের খইল সরিয়ে দিলে কানে কম শোনা ঠিক হতে সাহায্য করবে।
ডাক্তার প্রয়োজনে শ্রবণকারী উপকরণ বা ইমপ্লান্ট ব্যবহার করার পরামর্শ দিতে পারেন। যদি কানে কম শোনা ঠিক না করা যায় তাহলে ঠোঁট পড়া এবং সাইন ভাষা শিখলে তা অন্যদের সাথে কথোপকথনে সাহায্য করতে পারে।
বাচ্চাদের মধ্যে কানে কম শোনা প্রতিরোধ করা যেতে পারে, এইভাবে:
- মিসেল এবং মাম্পের বিরুদ্ধে ভ্যাক্সিনেশন করানো।
- ওটিটিস মিডিয়ার মত সংক্রমণের জন্য স্ক্রীনিং।
- বেশি জোরে আওয়াজ/গান না শোনা।
- বাচ্চারা যাতে কোন জিনিস তাদের কানে ঢুকিয়ে না ফেলে তার জন্য খেয়াল রাখা।
প্রাপ্তবয়স্কদের একটি উচ্চশব্দকারী কর্মক্ষেত্রে কাজ করার সময় কানের সুরক্ষা ব্যবহার করা উচিত।