হিট ক্র্যাম্প কি?
সাধারণত হাতের বা পায়ের পেশীতে যে যন্ত্রণা অনুভূত হয় অথবা টান বা খিঁচুনি ধরে, তাকে হিট ক্র্যাম্প বলে। মাঝেমধ্যে কোনও ব্যক্তি আবার পেটের অংশে হিট ক্র্যাম্প অনুভব করতে পারেন। এই ধরণের ক্র্যাম্প বেশ কয়েকদিন ধরে থাকে এবং বেশ গুরুতর আকারও নিতে পারে। গরম আবহাওয়াতে যাঁরা প্রচণ্ড শারীরিক পরিশ্রম করেন, তাঁরাই হিট ক্র্যাম্পের কবলে পড়েন।
এর প্রধান লক্ষণ ও উপসর্গগুলি কি কি?
হিট ক্র্যাম্পের প্রধান লক্ষণ হলো পা, হাত অথবা পেটের পেশীতে তীক্ষ্ণ এবং তীব্র ব্যথা অনুভব করা।
বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই, হিট ক্র্যাম্পে আক্রান্ত ব্যক্তি অত্যাধিক ঘাম ঝরা ও জলতেষ্টাও উপলব্ধি করেন।
শিশু, অল্পবয়সী বাচ্চা এবং বয়ষ্কদের হিট ক্র্যাম্পে আক্রান্ত হওয়ার বেশি সম্ভাবনা থাকে কারণ, তাঁদের শরীর হয়তো বাইরের তাপমাত্রার সঙ্গে শরীরের তাপমাত্রাকে ঠিকমতো নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না।
এর প্রধান কারণ কি?
হিট ক্র্যাম্প বা গরমের কারণে শরীরে পেশীতে টান ধরার প্রধান কারণ হলো ডিহাইড্রেশন অর্থাৎ শরীরে জলের অভাব এবং ইলেক্ট্রোলাইট ইমব্যালেন্স অর্থাৎ শরীরে বিভিন্ন খনিজের মাত্রার অসমতা যা গরম আবহাওয়ার মধ্যে অত্যাধিক ঘাম ঝরার কারণে হয়। প্রচণ্ড শারীরিক পরিশ্রমের কারণে ঘামের মাধ্যমে শরীর থেকে যখন খনিজ অত্যাধিক পরিমাণে বার হয়ে যায়, তখন পেশীতে টান বা খিঁচুনি ধরে, আর তার ফলে যন্ত্রণা দেখা দেয়।
কিছু মেডিকেল রিসার্চ বা চিকিৎসা সংক্রান্ত গবেষণার মতে, যখন প্রচণ্ড শারীরিক পরিশ্রম করা হয়, তখন পেশী অত্যাধিক ক্লান্ত হয়ে পড়ে। আর এর ফলে শরীরের পেশীগুলি নিজেদের সঙ্কোচনকে অনবরত নিয়ন্ত্রণ করার স্বাভাবিক সক্ষমতা হারিয়ে ফেলে এবং তার থেকেই পেশীতে খিঁচুনি বা টান ধরে।
কিভাবে নির্ণয় ও চিকিৎসা করা হয়?
ডাক্তার লক্ষণ ও উপসর্গগুলি শুনেই বলে দিতে পারবেন যে হিট ক্র্যাম্প হয়েছে কি না এবং তার রোজকার কাজের পরিমাণের সম্পর্কে প্রশ্ন করেন। প্রয়োজন মনে করলে ডাক্তার শারীরিক পরীক্ষা করে দেখেন যে শরীরে জল ও খনিজের অভাব রয়েছে কি না।
কোনও ব্যক্তি যদি হিট ক্র্যাম্প অনুভব করেন, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে তাঁর যা করা উচিত:
- শারীরিক প্ররিশ্রমসাধ্য কাজকর্ম বন্ধ রাখা।
- বিশ্রামের জন্য ঠাণ্ডা জায়গা খোঁজা।
- ঠাণ্ডা জলে চান করে নেওয়া।
- বেশি করে তরল পান করা এবং জলের সঙ্গে মেশানো যায়, এরকম রিহাইড্রেশন সল্ট বা লবণ সেবন করা।
- ব্যথা কমাতে যে পেশীগুলিতে যন্ত্রণা হচ্ছে, সেগুলিকে আলতো করে মালিশ করা।
হিট ক্র্যাম্পে আক্রান্ত ব্যক্তির যদি বমি হয় থাকে বা বমিভাব আসে, তাহলে ডাক্তার তাঁকে ইন্ট্রাভেনাস (আইভি) ফ্লুইড অর্থাৎ স্যালাইন দিতে পারেন। পেশীর যন্ত্রণা কমানোর জন্য চিকিৎসক যন্ত্রণা উপশমকারী ওষুধও দিতে পারেন।