ইম্পেটিগো কি?
ইম্পেটিগো একধরণের সাধারণভাবে পরিলক্ষিত ত্বকের রোগ যার দ্বারা শিশুরা আক্রান্ত হয়; এই রোগে ত্বকে ঘা বা ক্ষত সৃষ্টি হয় যার ফলে চুলকানি সৃষ্টি হয় এবং এটি ভীষণ ভাবে সংক্রামক। যেহেতু এটি শিশুদেরই বেশি হয়, তাই এটি 'স্কুল সোর’ বলেও পরিচিত। এটি একটি ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ যা সাধারণত উপরের ত্বককে আক্রান্ত করে এবং 7 থেকে 10 দিনের মধ্যে নিজে থেকেই সেরে যায়।
এটির প্রধান লক্ষণ এবং উপসর্গগুলি কি কি?
দুই ধরণের ইম্পেটিগো রয়েছে:
- নন-বুলাস ইম্পেটিগো
- চুলকানিযুক্ত ঘা বা ক্ষত
- ঘা বা ক্ষতগুলি ফেটে গেলে সেখানে লালবর্ণের ত্বক পরিলক্ষিত হয়
- ক্ষতের কাছে ফোলা গ্রন্থি দেখা যায়।
- মধুর বর্ণের কঠিন আবরণ তৈরী হয় ঐ স্থানে।
- বুলাস ইম্পেটিগো - এর কারণে ত্বকের উপর একগুচ্ছ তরলপূর্ণ ফোস্কা তৈরী হয় যার চারপাশের ত্বক লালবর্ণ ধারণ করে না। মেঘলা হলুদ রঙের যে ফোস্কাগুলি তৈরী হয় তা স্বচ্ছ প্রকৃতির হয় এবং তারপর ত্বক পুরু হয়ে খোলসযুক্ত ঘা বা ক্ষত সৃষ্টি করে ফেটে যাওয়ার আগে এরপর দাগ বা ক্ষত চিহ্ন না সৃষ্টি করে নিজে থেকেই সেরে যায় এগুলি।
এর প্রধান কারণগুলি কি কি?
এটি সাধারণত স্টাফিলোকক্কাস অরিয়াস বা স্ট্রেপ্টোকক্কাস পায়োজেনিসের কারণে হয়। ডে কেয়ার সেন্টার, ঘিঞ্জি এলাকা এবং যেসব খেলাতে একজনার অন্যজনার ত্বকের সাথে ছোঁয়া লাগে তার ফলে ইম্পেটিগো ছড়াতে পারে। একজিমা বা চিকেন পক্স রোগে আক্রান্ত শিশু অতিরিক্ত সংক্রমণ হিসেবে ইম্পেটিগোতে আক্রান্ত হতে পারে। চুলকানোর ফলে ত্বক ফেটে যায় এবং ব্যাকটেরিয়ার পক্ষে ত্বকে প্রবেশ করা খুব সহজ হয় যায়। এই ব্যাকটেরিয়াগুলি ছারপোকার কামড়ে, ত্বকের ফুসকুড়ি, কাটা বা ত্বক পুড়ে যাওয়ার মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করতে পারে। এটি সাধারণত উষ্ণ আর্দ্র জলবায়ুতে দেখা যায়।
এটি নির্ণয় এবং চিকিৎসা কিভাবে করা হয়?
চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ বা ডার্মাটোলজিস্ট ত্বকের পরীক্ষা করে ইম্পেটিগো নির্ণয় করতে পারেন। ফোস্কার থেকে কিছুটা নমুনা নিয়ে তা পরীক্ষা করতে পাঠানো হয় কোন ধরণের ব্যাকটেরিয়া এই সংক্রমণ সৃষ্টি করেছে তা জানার জন্য।
ইম্পেটিগো সাধারণত খুব গুরুতর কোন রোগ নয় এবং এটি 2 থেকে 3 সপ্তাহের মধ্যে ঠিক হয়ে যায়। লঘু প্রকারের ইম্পেটিগোর ক্ষেত্রে, অ্যান্টিবায়োটিক ক্রিম ব্যবহার করার পরামর্শ দেওয়া হয়। যদি সংক্রমণ ছড়িয়ে পরে এবং গুরুতর হয়ে ওঠে তাহলে অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ খেতেও বলা হতে পারে।
যে জায়গাতে ইম্পেটিগো হয়েছে সেখানে ক্রিম ব্যবহার করার আগে ও পরে হাত ধুয়ে নেওয়া সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ যাতে সংক্রমণ না ছড়ায়। আপনি নিজেও ক্ষত জায়গাগুলিতে হাত লাগাবেন না এবং অন্য ব্যক্তিদেরও হাত লাগাতে দেবেন না। আক্রান্ত শিশুদের স্কুল, ডে কেয়ার সেন্টার বা সর্বসাধারণের ব্যবহৃত স্থানে না পাঠানোই উচিত। রোগটি যাতে না ছড়ায় তার জন্য, রোগীর তোয়ালে, বিছানাপত্র এবং জামাকাপড় গরম জলে ধোয়া উচিত ( প্রায় 60 ডিগ্ৰী উষ্ণতা বিশিষ্ট জলে)।