কিডনি প্রতিস্থাপন কি?
একজন রোগীর (গ্রাহক) ক্ষতিগ্রস্ত কিডনিকে বাদ দিয়ে সেইস্থানে অন্য সুস্থ ব্যক্তির (দাতা) কিডনি স্থাপনের সাথে জড়িত প্রক্রিয়াকে কিডনি প্রতিস্থাপন বলা হয়। ভারতে লক্ষাধিক জনসংখ্যার প্রতি 151-232 টি ক্ষেত্রে রোগীর মধ্যে শেষ পর্যায়ের মুত্রাশয়জনিত রোগের (ইএসআরডি) কারণে কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়। বিশ্বব্যাপী, প্রাপ্ত খবর অনুযায়ী প্রতি বছর 2 লক্ষেরও বেশি মানুষের কিডনি প্রতিস্থাপন ও ডায়ালাইসিসের মতো পদ্ধতির প্রয়োজন হয়।
এটি কেন করা হয়?
ক্ষতিগ্রস্থ কিডনি প্রক্রিয়ার সাথে জড়িত ইএসআরডি রোগীকে একজন সুস্থ কিডনি দাতা তার কিডনি দানের মাধ্যমে কিডনি প্রতিস্থাপনে সাহায্য করে।প্রধানত ইএসআরডি আছে এমন ব্যাক্তিকে নির্দেশ করেই কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়। যে প্রধান উপসর্গগুলি প্রতিস্থাপনের প্রয়োজন আছে কিনা নির্ণয় করতে সাহায্য করে সেগুলি হলো:
- হাত,পা ও মুখে অতিরিক্ত ওয়েডেমা (ফুলে যাওয়া)।
- মাথাযন্ত্রনা।
- উচ্চ রক্তচাপ।
- চামড়ায় ফ্যাকাশেভাব বা বিবর্ণতা।
- কফির মতো গাড় রঙের মূত্র নির্গত হওয়া।
- ক্লান্তিভাব।
- চামড়ায় কোথাও চুলকানো।
এটা কাদের প্রয়োজন?
অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে, যদি চিকিৎসা না করা হয়, তাহলে কিডনির কার্যকরীতার পর্যায়ক্রমে অবনতি হতে পারে। অন্তরভুক্ত পরিস্থিতিগুলির জন্য কিডনি প্রতিস্থাপনের প্রয়োজন হয়:
- ওষুধের দ্বারা নিয়ন্ত্রনে ব্যর্থ উচ্চ রক্তচাপ।
- ওষুধের দ্বারা নিয়ন্ত্রনে ব্যর্থ রক্তে উচ্চমাত্রায় শর্করার উপস্থিতি (আরও পরুন: ডায়াবেটিস প্রতিরোধ)।
- পলিসিষ্টিক কিডনি রোগ।
- উচ্চ রক্তচাপের প্রভাবে নেফ্রস্কলেরোসিস (এক ধরনের কিডনির রোগ)।
- গ্লোমেরুলনেরাইটিস (এক রকমের কিডনির রোগ) এর মতো গ্লোমেরুলার রোগ।
- রক্তবাহিকার অবস্থান অনুযায়ী, বিশেষত নির্দিষ্ট কোন কিডনির রোগ।
কিভাবে এই কাজটি সম্পাদন করা হয়?
একজন জীবিত বা মৃত ব্যক্তির কিডনি সংগ্রহ করেই কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়। পৃথকীকরণ এড়াতে বা সামঞ্জস্য বজায় রাখতে দাতা ও গ্রহিতার মধ্যে রক্ত পরীক্ষা করা হয়। এই প্রক্রিয়াটি অ্যানেস্থেসিয়ার মাধ্যমে করা হয়ে থাকে। সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি হতে 2-4 ঘণ্টার বেশি সময় লাগেনা। প্রক্রিয়াটি সহজভাবে করার জন্য, জটিলতাগুলি যত্ন সহকারে দেখা হয়।
প্রক্রিয়াটি হওয়ার পর,দাতার কিডনিটি গ্রাহকের পেটে যাতে অঙ্গ প্রত্যাখ্যান না করে সংযোগ বজায় রাখে সেইজন্য স্টেরয়েডের মতো প্রত্যাখ্যানহীন ওষুধগুলি প্রয়োগ করা হয়।
কিডনি প্রতিস্থাপন সফলভাবে হওয়ার পরে,সাধারণত রোগীকে পেরিটোনিয়াল বা হেমোডিয়ালিসিসের মতো চিকিৎসা দেওয়ার আর প্রয়োজন হয় না। যদি, কোনক্ষেত্রে প্রতিস্থাপন কার্যকরী না হয়, তাহলে রোগীর পুনরায় ডায়ালেসিস পদ্ধতির প্রয়োজন হতে পারে।