ভ্রমণকালীন অসুস্থতা কি?
ঘুরতে গিয়ে আকস্মিক বমি বমি ভাব বা বমি হওয়াকে ভ্রমণকালীন অসুস্থতা বলে। বাচ্চা, গর্ভবতী মহিলা, এবং কোনও নির্দিষ্ট ওষুধ খান এমন কেউ এই অবস্থার বিশেষভাবে প্রবণ হন। মস্তিকের ভিতর স্নায়ুর মাধ্যমে অনুভূত আন্দোলনের সাথে কান, চোখ, পেশী ও জয়েন্টের মাধ্যমে আসা সংকেতের অমিল হলে, এই সংবেদন অনুভূত হয়।
এর প্রধান লক্ষণ এবং উপসর্গগুলি কি কি?
সাধারণ উপসর্গগুলির মধ্যে রয়েছে:
- বমি বমি ভাব এবং বমি হওয়া।
- পেট খারাপ হওয়া।
- হালকা মাথাচাড়া।
- ঠান্ডা ঘাম হওয়া।
- ত্বক ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়া।
- মাথা ব্যথা।
গুরুতর উপসর্গগুলির মধ্যে রয়েছে
- দেহের ভারসাম্য হারিয়ে ফেলা।
- মাথা ঘোরা।
- মুখ থেকে লালা পড়া।
- নিঃশ্বাস নিতে অসুবিধা হওয়া।
- অসুস্থ বোধ করা।
এর প্রধান কারণগুলি কি কি?
ভ্রমণকালীন অসুস্থতার উপসর্গগুলি পরিলক্ষিত হয় যখন কান, চোখ, পেশী এবং জয়েন্টগুলি মতো সংবেদনশীল অঙ্গ থেকে মস্তিষ্ক অসংলগ্ন বার্তা পায়। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়, যদি কোনও ব্যক্তি বিমানে ভ্রমণ করেন তখন তিনি বাইরের দোলাচল দেখতে পান না কিন্তু শরীর এটা উপলব্ধি করে। সংকেতের এই অসংলগ্নতাই অস্বস্তি এবং ভ্রমণকালীন অসুস্থতা তৈরি করে।
কারণগুলি হল:
- বাস্তবিক, চাক্ষুষ অথবা ভার্চুয়াল গতি। যেমন নৌকা, গাড়ি, বিমান বা ট্রেনে ভ্রমণ।
- পর্যাপ্ত ঘুম না হলে এই সমস্যা বাড়তে পারে।
- মজার রাইড এবং খেলার মাঠের সরঞ্জামও এই গতি দুর্বলতা বা ভ্রমণকালীন অসুস্থতা ঘটাতে পারে।
এটি কিভাবে নির্ণয় এবং চিকিৎসা করা হয়?
নিম্নলিখিত ধাপে নির্ণয় করা হয়:
- অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ভ্রমণকালীন অসুস্থতা নিজে থেকেই ঠিক হয়ে যায়।
- কারণ জানার জন্য উপসর্গগুলির বিশ্লেষণ করা হয়।
- ল্যাবরেটরি পরীক্ষার প্রয়োজন হয় না।
- হলপাইক ম্যান্যুভারের মতন শারীরিক পরীক্ষা দ্বারা ভ্রমণকালীন অসুস্থতা নিশ্চিত করা হয়।
নিম্নলিখিত চিকিৎসার মধ্যে রয়েছে:
- বমি বমি ভাব দূর করতে আদার সম্পূরক বস্তু সাহায্য করতে পারে।
- ভ্রমণকালীন অসুস্থতা কমাতে স্কোপোলামাইন, ডাইমেনহাইড্রেট এবং মেক্লিজাইনের মত ওষুধের পরামর্শ দেওয়া হতে পারে।
গ্রহণ করা প্রতিরোধ ব্যবস্থাগুলির মধ্যে রয়েছে:
- দিগন্তের দিকে অথবা দূরবর্তী স্থির বস্তুর দিকে তাকান। ভারসাম্যের এই পুনর্নির্মাণ ভিতরের অঙ্গের পুনরভিযোজনে সাহায্য করে যা ভারসাম্য বজায় রাখে এবং ভ্রমণকালীন অসুস্থতা হ্রাস করে।
- ভ্রমণকালে বই পড়া বা কোনও বৈদ্যুতিক যন্ত্রের ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন।
- ধূমপান, মদ্যপান, ক্যাফিন, চড়া গন্ধ, তেলমশলাযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন।
- ভ্রমণের আগে হাল্কা খাবার খান।
- আরামদায়ক স্থানে, চোখ বন্ধ করে এবং ঘাড় সোজা করার সাথে পিঠে হেলান দিয়ে বসুন।
- চুইংগাম চিবালে কোনও অজ্ঞাত কারণে গাড়ির অসুস্থতা হ্রাস পায়।