নেক্রোটাইজিং এন্টারোকোলাইটিস কি?
সদ্যোজাত শিশুদের মধ্যে দেখা দেওয়া নেক্রোটাইজিং এন্টারোকোলাইটস হলো অন্ত্রের একটি গুরুতর রোগ। এটি সাধারণত স্বাভাবিক সময়ের আগে জন্ম নেওয়া 1.5 কেজির কম ওজনের বাচ্চাদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। এই রোগে, ব্যাক্টেরিয়া ঘটিত সংক্রমণের ফলে অন্ত্রের দেওয়ালে প্রদাহ এবং ক্ষতি হয়, যা থেকে অন্ত্রে ছিদ্র দেখা দিতে পারে। অন্ত্রের থেকে মল অ্যাবডোমিনাল ক্যাভিটি বা উদর গহ্বরে নির্গত হতে পারে, যা থেকে গুরুতর সংক্রমণ হতে পারে।
এর প্রধান লক্ষণ এবং উপসর্গগুলি কি কি?
প্রতিটি শিশুর মধ্য লক্ষণ ভিন্ন হয় আর প্রথম দু’সপ্তাহের মধ্যেই তা ফুটে ওঠে। নিম্নলিখিত লক্ষণ এবং উপসর্গগুলি মূলত দেখা যায়:
- তলপেট ফাঁপা এবং ফুলে ওঠা।
- মলে রক্ত।
- হৃদস্পন্দনের মাত্রা হ্রাস (আরও পড়ুন: ব্রাডিকার্ডিয়ার কারণ এবং চিকিৎসা)।
- পেট খারাপ।
- রক্ত চাপ হ্রাস।
- শ্বাস-প্রশ্বাসে অস্থায়ী বিরাম।
- অলসতা।
- তলপেটের অংশ লাল এবং সংবেদনশীল।
এর প্রধান কারণগুলি কি কি?
এই রোগের সঠিক কারণ এখনও অজানা। অক্সিজেন সরবরাহ এবং রক্তপ্রবাহে স্বল্পতার কারণে দুর্বল হয়ে পড়া অন্ত্রের দেওয়াল কম ওজন নিয়ে জন্মানো সদ্যোজাতদের মধ্যে নেক্রোটাইজিং এন্টারোকোলাইটিসের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয় এবং এই অবস্থার জন্য দায়ী হতে পারে। খাবারে থাকা ব্যাক্টেরিয়া অন্ত্রের দুর্বল দেওয়ালগুলিকে আক্রমণ করতে পারে, যে কারণে অন্ত্রে প্রদাহ, ক্ষতি এবং ছিদ্র দেখা দেয়।
এটি কিভাবে নির্ণয় এবং চিকিৎসা করা হয়?
নেক্রোটাজিং এন্টারোকোলাইটিস নির্ণয়ের জন্য নিম্নলখিত টেস্টগুলি করানো হয় :
- এক্স-রে: এক্স-রে দেখিয়ে দেবে তলপেটে বুদবুদের উপস্থিতি আছে কি না।
- অন্যান্য রেডিওগ্রাফিক পদ্ধতি: লিভার অথবা অন্ত্রের বাইরে উদর গহ্বরে রক্ত সরবরাহকারী রক্তবাহিকার মধ্যে হাওয়ার বুদবুদ রয়েছে কি না, তার ইঙ্গিত দেয় এটি।
- সূঁচ প্রবেশ: উদর গহ্বরে প্রবেশ করানো সূঁচ যদি অন্ত্রের তরল বের করতে পারে, তাহলে তা অন্ত্রে ছিদ্রের ইঙ্গিত দেয়।
শিশুর অবস্থার উপর নেক্রোটাইজিং এন্টারোকোলাইটিসের সঠিক চিকিৎসা পদ্ধতি নির্ভর করে। নেক্রোটাইজিং এন্টারোকোলাইটিসের চিকিৎসায় নিম্নলিখিত পদ্ধতিগুলি রয়েছে:
- মুখ দিয়ে খাওয়া বন্ধ করা।
- অর্গ্যাস্টিক টিউবের সাহায্যে উদর ও অন্ত্র থেকে তরল এবং হাওয়ার বুদবুদ বের করা।
- শিরায় প্রবেশ করানো তরলের তদারকি করা।
- অ্যান্টিবায়োটিক দিলে তার তদারকি করা।
- শিশুর অবস্থা দেখার জন্য এক্স-রে’র সাহায্যে নিয়মিত পরীক্ষা করা।
- তলপেটে ফোলা অবস্থার ক্ষেত্রে শ্বাস-প্রশ্বাসে সাহায্যের জন্য বাইরে থেকে অক্সিজেন প্রদান।