নন-অ্যালার্জিক রাইনাইটিস কাকে বলে?
নন-অ্যালার্জিক রাইনাইটিসের বৈশিষ্ট্য হল নাকের অভ্যন্তরের প্রদাহ বা ফুলে যাওয়া যা অ্যালার্জিক উপাদানের কারণে ঘটে না। বিভিন্ন নন-অ্যালার্জিক উপাদান, যেমন ধোঁয়া, বায়ুচাপের পরিবর্তন, শুষ্ক বায়ু, সংক্রমণ ইত্যাদির ফলে এই সমস্যার সৃষ্টি হয়। এই রোগের প্রক্রিয়াটি এলার্জিক প্রতিক্রিয়ার অন্তর্ভুক্ত নয়, এটি প্রদাহের ফলে ঘটে।
এর প্রধান লক্ষণ ও উপসর্গগুলি কি?
নন-অ্যালার্জিক রাইনাইটিসে আক্রান্তের মধ্যে নিম্নলিখিত উপসর্গগুলি দেখা যেতে পারে:
- বন্ধ নাক।
- নাকের ভিতর ও আশেপাশে অস্বস্তি।
- অত্যধিক হাঁচি।
- নাক দিয়ে জল পড়া।
- ঘ্রাণ ও স্বাদের অনুভূতি হ্রাস।
- ক্ষুধার হ্রাস।
নাক, গলা ও চোখের চুলকানি সাধারণত অ্যালার্জিক রাইনাইটিসে দেখতে পাওয়া যায়। নন-অ্যালার্জিক রাইনাইটিসে এই উপসর্গগুলির উপস্থিতি বিরল।
এটির প্রধান কারণগুলি কি কি?
যদিও এই সমস্যাটির নির্দিষ্ট কারণ পরিষ্কারভাবে জানা নেই, বিভিন্ন নন-অ্যালার্জিক উপাদান নন-অ্যালার্জিক রাইনাইটিস ঘটাতে সাহায্য করে। এগুলি হল:
- বায়ুদূষণ।
- মদ্যপান।
- তেল মশলাযুক্ত খাদ্য।
- কিছু ওষুধ, যেমন আইবুপ্রোফেন ও এসপিরিন।
- শুষ্ক আবহাওয়া।
- তীব্র গন্ধ যেমন পারফিউম ও ব্লিচিং এজেন্টের গন্ধ।
- ব্যাকটেরিয়াল ও ভাইরাল সংক্রমণ।
কিভাবে এটি নির্ণয় করা হয় এবং এর চিকিৎসা কি?
এই রোগটি নির্ণয়ের জন্য চিকিৎসক নিম্নোক্ত এক বা একাধিক নির্ণয়করণ পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারেন:
- শারীরিক পরীক্ষা।
- সমস্যার জন্য দায়ী অ্যালার্জেন শনাক্তকরণ করতে স্কিন টেস্ট করা হয়। এই পরীক্ষা অ্যালার্জিক রাইনাইটিসকে সম্ভাব্য কারণ থেকে বাতিল করতে সাহায্য করে।
- ইমিউনোগ্লোবিউলিন ই নামক যে এন্টিবডিকে ইমিউন সিস্টেম অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়ায় উৎপাদন করে, রক্তে তার মাত্রা জানতে রক্তপরীক্ষা করা হয়। কমপ্লিট ব্লাড কাউন্ট (সিবিসি) পরীক্ষার সাহায্যে রক্তে ইওসিনোফিল (এক প্রকার শ্বেত রক্তকণিকা)-এর সংখ্যা জানা যায়, যা এলার্জির আরেকটি নির্ণায়ক। সুতরাং, রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে এলার্জিক প্রতিক্রিয়ার সম্ভাবনাকে বাতিল করা যেতে পারে।
নন-অ্যালার্জিক রাইনাইটিসের চিকিৎসা হল সমস্যার কারণগুলোকে এড়িয়ে চলা ও উপসর্গগুলির উপশম।
- যদি ওষুধের কারণে এটি ঘটে থাকে তবে চিকিৎসক ওই ওষুধের পরিবর্তে অন্য ওষুধের পরামর্শ দিতে পারেন।
- যদি অত্যধিক নেসাল ডিকনজেস্টেন্ট ব্যবহারের ফলে এই সমস্যার সৃষ্টি হয় তবে সেটির ব্যবহার বন্ধ করে দিতে হবে।
- নাক পরিষ্কার করতে স্যালাইন সলিউশন দিয়ে নেসাল ইরিগেশন করতে হবে।
- কর্টিকোস্টেরয়েড, ডিকনজেস্টেন্ট, এন্টিকলিনার্জিক অথবা এন্টিহিস্টমিনিক নাকের স্প্রে বন্ধ নাক ছাড়ানোর জন্য ব্যবহার করা হয়।