ওভার অ্যাক্টিভ ব্লাডার সিন্ড্রোম বা অতিসক্রিয় মূত্রাশয় রোগ কি?
অতিসক্রিয় মূত্রাশয় রোগ বলতে সেই অবস্থাকে বোঝায়, যেখানে কোনও ব্যক্তি মূত্র ত্যাগ করার হঠাৎ এবং অনিবার্য তাড়না অনুভব করেন। এই তাড়না দিনে যেকোনও সময় অনুভূত হতে পারে। এই রোগটি খুবই সাধারণ এবং কোনও ব্যক্তির দৈনিক জীবনে অসুবিধা এবং সামাজিক পরিস্থিতিতে অস্বস্তির সৃষ্টি করতে পারে।
এর সাথে জড়িত প্রধান লক্ষণ এবং উপসর্গগুলি কি কি?
অতিসক্রিয় মূত্রাশয় রোগে নিন্মলিখিত উপসর্গগুলি লক্ষ্য করা যেতে পারে:
- মূত্রত্যাগের করার তীব্র তাড়না: এই তাড়না অনিবার্য হতে পারে এবং চেপে রাখা খুবই কঠিন। এর ফলে অনিচ্ছাকৃতভাবে কিছুটা প্রস্রাব বেরিয়ে যায়, যা আর্জেন্সি ইউরিনারি ইনকন্টিনেন্স নামে পরিচিত।
- বারবার প্রস্রাব করা: অতিসক্রিয় মূত্রাশয়ের কারণে কোনও ব্যক্তির স্বাভাবিকের চেয়ে বেশিবার প্রস্রাব হতে পারে। (আরও পড়ুন: বারবার মূত্রত্যাগ করার কারণ এবং প্রতিকার)।
- ঘুমে ব্যাঘাত: হঠাৎ করে মূত্রত্যাগ করার তাড়নার ফলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে রাত্রিবেলা বারবার ঘুম থেকে উঠতে হতে পারে। এতে ঘুমে ব্যাঘাত ঘটতে পারে।
- যদি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি মানসিক চাপ ও উদ্বিগ্নতা উপলব্ধি করেন তাহলে অতিসক্রিয় মূত্রাশয় রোগ আরও খারাপ আকার নিতে পারে।
এর প্রধান কারণ কি?
অতিসক্রিয় মূত্রাশয় রোগের অন্তর্র্নিহিত কারণ মূত্রাশয়ের পেশীগুলির অতিরিক্ত সংকোচন, যা বারবার প্রস্রাব করার তাড়না উৎপন্ন করে। তবে, ঠিক কি কারণে পেশীগুলির সংকোচনে অস্বাভাবিকতা আসে, তা এখনও পরিষ্কার নয়।
দেখা গিয়েছে, এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মূত্রাশয় মস্তিস্কে বার্তা পাঠাতে পারে যে মূত্রাশয় বরে উঠেছে, কিন্তু আদৌ তা ভর্তি হয়নি।
কিছু কিছু ক্ষেত্রে, অতিসক্রিয় মূত্রাশয় রোগ মস্তিষ্কের কোনও রোগের কারণে হতে পারে, যেমন:
এটি কিভাবে নির্ণয় এবং চিকিৎসা করা হয়?
অতিসক্রিয় মূত্রাশয় রোগ নির্ণয়ের জন্য চিকিৎসক সাধারণত উপসর্গ সম্পর্কে জানতে চান এবং তারপর সংক্রমণের কোনও লক্ষণ আছে কিনা তা জানতে, শারীরিক পরীক্ষা করেন অথবা মূত্র পরীক্ষা করান। মূত্র প্রবাহের গতি এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি মূত্রাশয় সম্পূর্ণরূপে খালি করছে কিনা, তা মূল্যায়ন করার জন্য ফ্লো টেস্ট করা হতে পারে।
এই রোগের চিকিৎসার জন্য ব্লাডার ট্রেনিং করানো হয়, এর ফলে কোনও ব্যক্তি মূত্রাশয়ের গতিবিধির উপর কিছু মাত্রায় নিয়ন্ত্রণ আনতে পারেন এবং মূত্রত্যাগের তাড়নাকে খানিকটা বিলম্বিত করা যায়। ওষুধ দেওয়া হতে পারে, কিন্তু পেলভিক ব্যায়াম করা, ক্যাফেন ও অ্যালকোহল বর্জন আর অতিরিক্ত ওজন কমানোর মতো জীবনযাত্রায় কিছু পরিবর্তন এই রোগের পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
কিছু ক্ষেত্রে সার্জারি সুপারিশ করা যেতে পারে।