জলাতঙ্ক রোগ - Rabies in Bengali

Dr. Ajay Mohan (AIIMS)MBBS

February 08, 2019

March 06, 2020

জলাতঙ্ক রোগ
জলাতঙ্ক রোগ

সারাংশ

রেবিস (জলাতঙ্ক) একটি রোগ যা একটি সংক্রমিত প্রাণীর লালার ভাইরাস থেকে ছড়ায়।  বিভিন্ন জন্তু এই রোগ ছড়াতে পারে, তার মধ্যে কুকুর এব্ং বাদুড় হচ্ছে প্রধান। আক্রন্ত প্রাণীটি যখন কামড়ায় বা তার মুখের লালা যদি কোনওক্রমে কোনও খোলা ক্ষতের সংস্পর্শে আসে তাহলে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে। একবার তা ছড়িয়ে পড়লে ভাইরাসটি সুস্থ শরীরে বাসা বাঁধে এবং স্নায়ুতন্ত্রকে আক্রমণ করে, যার ফলে আক্রান্ত ব্যক্তি কোমায় চলে যায় এবং চিকিৎসা না হলে মারা যায়। দু’ ধরনের রেবিস ভাইরাস আছে- ফিউরিয়াস এবং প্যরালিটিক। রেবিসের মূল উপসর্গ আলো সহ্য করতে না পারা, যন্ত্রণা এবং পেশিতে মোচড় বা স্প্যাজম, লালা ঝরা (হাইপারভেন্টিলেশন), এবং জলের প্রতি ভয়। রোগের চূড়ান্ত পর্যায়ে, সাধারণত কোমা এবং পক্ষাঘাত ঘটতে পারে। রেবিসের চিকিৎসার মধ্যে আছে সংক্রমিত এলাকা পরিষ্কার করা এবং কয়েক সপ্তাহ ধরে রেবিস প্রতিরোধী টিকা দেওয়া। যদি সময়মত রেবিস চিকিৎসা না করা হয় তাহলে কিছু জটিলতা দেখা যেতে পারে। কোনও কোনও আক্রান্ত ব্যক্তির তড়কা, শ্বাসবন্ধ, মস্তিষ্ক ফুলে যাওয়া বা প্রদাহ হতে পারে। যদি সঠিক সময়ে চিকিৎসা হয় তাহলে রেবিসে আক্রান্ত ব্যক্তি স্বাস্থ্যকর এবং স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারেন।

জলাতঙ্ক রোগ এর উপসর্গ - Symptoms of Rabies in Bengali

রেবিস হচ্ছে প্রোগ্রেসিভ অসুখ অর্থাৎ রোগ বাড়লে উপসর্গ তীব্র হতে থাকে। কোনও ব্যক্তির ভাইরাস সংক্রমণের সময় থেকে যত সময় বাড়তে থাকে তত উপসর্গ পাল্টাতে থাকে। রেবিসের উপসর্গ বাড়তে 30 থেকে 60 দিন পর্যন্ত যে কোনও সময় লাগে। বিভিন্ন পর্যায়ে রেবিস সংক্রমণের উপসর্গ নিম্নলিখিত ভাবে দেখা যায়:

  • ইনকিউবেশন  ( উন্মেষপর্ব )
    সংক্রমণের পর প্রথম দিনগুলিতে ক্ষতস্থান ঘিরে চারপাশে শিরশিরানি বা যন্ত্রণার অনুভূতি থাকে। তার সঙ্গে কিছু অস্বাচ্ছন্দ্য যেমন চুলকানি, যা রোগের প্রথম ইঙ্গিত হতে পারে কিন্তু এগুলিকে তেমন গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয় না।
  • প্রোড্রোমাল
    ধীরে ধীরে বমিভাব, শীত শীত লাগা, ঠান্ডা, এবং জ্বর দেখা যায়। এই পর্যায়ে পেশিতে ব্যাথা এবং অন্যান্য উপসর্গের সঙ্গে অসহিষ্ণুতা দেখা যায়। এই উপসর্গগুলিকে বহু সময়ে সাধারণ ভাইরাস সংক্রমণ বা সাধারণ ফ্লু বলে ধরে নেওয়া হয়।  
  • চূড়ান্ত নিউরোলজিক পিরিয়ড বা অবস্থা
     সময়ের সঙ্গে সঙ্গে উপসর্গ তীব্র আকার ধারণ করে, যখন প্রবল জ্বর আসে, অসংলগ্নতা দেখা দেয়, এবং রোগী আক্রমণাত্মকও হয়ে উঠতে পারে। এই পর্যায়ে রোগীর তড়কা হওয়া খুবই স্বাভাবিক। অন্যান্য যে সমস্ত উপসর্গ দেখা যায় তার মধ্যে খিঁচুনি, আংশিক পক্ষাঘাত, আলোতে ভয়, ঘন ঘন শ্বাস, এবং লালা ঝরা (হাইপারভেন্টিলেশন) অন্যতম।
  • অন্তিম পর্যায়
    রেবিসে আক্রান্ত ব্যক্তি জলের সংস্পর্শে এলে দুশ্চিন্তা এবং প্যানিক অ্যাটাকে ভুগতে পারেন। এই অবস্থাকে সাধারণভাবে বলা হয় হাইড্রোফোবিয়া বা জলে আতঙ্ক। এই পর্যায়ে যখন সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ ধীরে ধীরে ক্ষতিগ্রস্ত হতে শুরু করেছে তখন আক্রান্ত ব্যক্তির শ্বাসের জন্য সাহায্য  এবং বাঁচিয়ে রাখার জন্য চিকিৎসা প্রয়োজন। শেষ পর্যন্ত আক্রান্ত ব্যক্তি কোমায় চলে যায় এবং শ্বাসকষ্টের জন্য পেশি নড়ানোর শক্তি থাকে না। এই পর্যায় বেশিদিন থাকে না এবং কয়েকদিনের মধ্যেই রোগী মারা যায়।
myUpchar doctors after many years of research have created myUpchar Ayurveda Kesh Art Hair Oil by using 100% original and pure herbs of Ayurveda. This Ayurvedic medicine has been recommended by our doctors to more than 1 lakh people for multiple hair problems (hair fall, gray hair, and dandruff) with good results.
Bhringraj Hair Oil
₹546  ₹850  35% OFF
BUY NOW

জলাতঙ্ক রোগ এর চিকিৎসা - Treatment of Rabies in Bengali

কোন সময়ে, কোন প্রাণী কামড়েছে, এবং উপসর্গের চেহারা কীরকম, তার ওপর চিকিৎসা পদ্ধতি নির্ভর করবে। রেবিসের সাধারণ চিকিৎসার পদ্ধতি নিম্নরূপ:

  • নিরাময় গুণসম্পন্ন সাবান এবং জল দিয়ে ক্ষতস্থান অন্তত 15 মিনিট ধরে ভাল করে ধুয়ে ফেলা এবং সংক্রমণ মুক্ত করা। যদি ত্বকের মধ্যে ছিদ্র হয়ে থাকে তাহলে ওপর থেকে তোড়ে সাবান জল ফেলে পরিষ্কার করতে হবে। খুব প্রয়োজন না হলে ক্ষতস্থান সেলাই না করাই ভাল।
  • এরপর, টেটেনাস এবং/ বা অ্যান্টিবায়োটিক ইনজেকশন দিতে হবে।
  • প্রাথমিক চিকিৎসার পর আক্রান্তকে রেবিসের টিকা দিতে হবে। যদি ওই ব্যক্তিকে কোনও বাড়ির পোষ্য প্রাণী কামড়ে থাকে এবং কোনও উপসর্গ না দেখা যায় (আসিম্পটোম্যাটিক), তাহলে চিকিৎসক ওই ব্যক্তি এবং প্রাণীটিকে দিন কয়েকের জন্য সতর্কতার সঙ্গে নজরে রাখার পরামর্শ দেবেন। যদি পোষ্যটিকে নজরে রাখা না জায় তাহলে ওই এলাকায় কোনও রেবিসের আক্রমণ দেখা গিয়েছে কিনা তা সমীক্ষা চালিয়ে দেখা হবে। যদি পরীক্ষা চালিয়ে প্রাণীটির মধ্যে রেবিসের চিহ্ন পাওয়া যায়, তাহলে সেটিকে মেরে ফেলতে হবে এবং তারপর পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে রেবিসের পরীক্ষা চালানো হবে। যদি, যেখানে প্রাণীটিকে দেখা গিয়েছে সেখানে রেবিসের চিহ্ন না পাওয়া যায় তাহলে কিছু প্রতিরোধী ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজন হবে না।
  • যদি প্রাণীটি যাকে কামড়েছে তার মধ্যে রেবিসের উপসর্গের ইঙ্গিত পাওয়া যায় তাহলে চিকিৎসক অবিলম্বে প্রতিরোধী চিকিৎসা শুরু করে দেন। রেবিস প্রতিরোধী ইমিউনোগ্লবিন ইনজেকশন দিয়ে চিকিৎসা করা হয় যা রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে এবং শরীরে রেবিসকে বাসা বাঁধতে দেয় না। পনেরোদিন ধরে পরপর এই ধরনের 5 টি ইনজেকশন দেওয়া হয়। যেখানে প্রাণীটিকে নজরে না রাখা যায় সেই অবস্থায় কিছু চিকিৎসক প্রতিশেধক হিসাবে এই ইনজেকশনগুলি দেওয়ার পরামর্শ দিতে পারেন। যদি বন্য প্রাণী কামড়ায় তাহলে প্রায় সর্বক্ষেত্রে এই চিকিৎসা শুরু করে দেওয়া হয়।
  • যে সব ক্ষেত্রে উপসর্গ দেখা দিয়েছে কিন্তু প্রতিরোধী চিকিৎসার সময় পার হয়ে গিয়েছে, সেখানে তড়কা যাতে না হয় তার জন্য ওষুধ দেওয়া হয়। দুশ্চিন্ত দূর করার জন্য পেশি নমনীয় রাখার  রিল্যাক্স্যান্ট এবং ওষুধের সঙ্গে ব্যাথা কমানোর ওষুধ প্রয়োগ করা হয়।
  • চিকিৎসা চলাকালীন সময়ে ওই ব্যক্তিকে সতর্কতার সঙ্গে নজরে রাখা এবং রোগ বেড়ে যাওয়ার  কোনও ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে কিনা সেদিকে লক্ষ রাখা জরুরি। সেরকম কোনও ইঙ্গিত দেখা দিলে চিকিৎসককে সতর্ক করা প্রয়োজন।

জীবনশৈলী ব্যবস্থাপনা (লাইফস্টাইল ম্যানেজমেন্ট)

 যদি সঠিক সময়ে নির্ণয় করা সম্ভব হয় তাহলে রেবিস নিয়ন্ত্রণ করা এবং তার কার্যকরী চিকিৎসা সম্ভব, যার ফলে রেবিসে আক্রান্ত ব্যক্তি স্বাভাবিক এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করতে পারেন। রেবিসের চিকিৎসার কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে, যা কিছুদিন পর্যন্ত স্থায়ী থাকতে পারে। এই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার মধ্যে আছে যন্ত্রণা, বমিভাব, পেট খারাপ, এবং মাথা ঘোরা। এই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলি সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কমে যায়। তবে, আক্রান্ত ব্যক্তি যাতে ফের সংক্রমিত না হন সেদিকে নজর রাখতে হবে। যদি জীবনধারা এমন হয় যেখানে রেবিস আক্রমণের সম্ভাবনা বেশি, যেমন কোনও দুঃসাহসিক কাজকর্ম করতে হয় বা বন্যপ্রাণীর সংস্পর্শে থাকতে হয়, তাহলে ভবিষ্যতে আরও বেশি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। যেখানে এই ধরনের ঘটনা ঘটে সেখানে সমস্ত বিচ্ছিন্ন প্রাণীদের পরীক্ষা করা এবং স্থানীয় পুর কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করা প্রয়োজন।



তথ্যসূত্র

  1. Rozario Menezes. Rabies in India. CMAJ. 2008 Feb 26; 178(5): 564–566. PMID: 18299543
  2. Sudarshan MK. Assessing burden of rabies in India. WHO sponsored national multi-centric rabies survey (May 2004). Assoc Prev Control Rabies India J 2004; 6: 44-5
  3. BMJ 2014;349:g5083 [Internet]; Concerns about prevention and control of animal bites in India
  4. Center for Disease Control and Prevention [internet], Atlanta (GA): US Department of Health and Human Services; Rabies
  5. World Health Organization [Internet]. Geneva (SUI): World Health Organization; Rabies
  6. World Health Organization [Internet]. Geneva (SUI): World Health Organization; Rabies
  7. Rupprecht CE. Rhabdoviruses: Rabies virus. In: Baron S, editor. Medical Microbiology. 4th edition. Galveston (TX): University of Texas Medical Branch at Galveston; 1996. Chapter 61
  8. Center for Disease Control and Prevention [internet], Atlanta (GA): US Department of Health and Human Services; Compendium of Animal Rabies Prevention and Control, 2003*

জলাতঙ্ক রোগ জন্য ঔষধ

Medicines listed below are available for জলাতঙ্ক রোগ. Please note that you should not take any medicines without doctor consultation. Taking any medicine without doctor's consultation can cause serious problems.