সেডেশন (অনুত্তেজনা) কাকে বলে?
কিছু নির্দিষ্ট যন্ত্রণাদায়ক প্রণালী অথবা অস্বস্তিকর বা উদ্বেগজনক নির্ণয়করণ পরীক্ষার সময়ে যে প্রক্রিয়ার সাহায্যে রোগীর চেতনাকে অবদমিত করে রাখা হয় তাকে বলে সেডেশন।
কেন এটি করা হয়?
কিছু নির্দিষ্ট চিকিৎসাপ্রণালী ও নির্ণয়করণ পদ্ধতিতে অংশগ্রহণের পূর্বে রোগীকে শান্ত করার জন্য সেডেশন প্রক্রিয়াটি ব্যবহার করা হয়। এটি রোগীর মধ্যে আচ্ছন্ন অবস্থার সৃষ্টি করে যা তাকে পদ্ধতিটি চলাকালীন বিশ্রাম করতে বা ঘুমোতে সাহায্য করে। সেডেশন দুই প্রকারের হয়, কনশাস বা সচেতন সেডেশন এবং ডিপার বা গভীরতর সেডেশন। কনশাস সেডেশন একটি মাঝারি প্রকৃতির সেডেশন যা বিভিন্ন খাওয়ার ওষুধকে সম্মিলিত ভাবে ব্যবহার করে এবং এটি করা হয় মূলত যেকোন এন্ডোস্কোপি প্রক্রিয়ার পূর্বে। ডিপার সেডেশন ব্যবহৃত হয় অস্ত্রোপচারের সময়। কৃত্রিম শ্বাসক্রিয়া বা এন্ডোট্রেকিয়াল নালির সহনশীলতার জন্য ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে (সঙ্কটজনক রোগীর তত্ত্বাবধানের জন্য) কড়া সেডেশনের প্রয়োজন হয়।
কাদের এটির প্রয়োজন হয়?
নিচে উল্লিখিত প্রক্রিয়াগুলির ক্ষেত্রে রোগীর সেডেশন প্রয়োজন হয়:
- ডেন্টাল (দাঁতের) ইমপ্লান্ট বা ডেন্টাল ফিলিং।
- স্তন ও অন্যান্য অঙ্গের বায়োপ্সি।
- ছোটখাট অস্ত্রোপচার যেমন, ভাঙা পায়ের মেরামত বা ত্বকের ইমপ্লান্ট।
- বিভিন্ন নির্ণয়করণ প্রক্রিয়া, যেমন এন্ডোস্কোপি বা টি স্ক্যান।
- বয়স্ক রোগীদের ক্ষেত্রে।
কিভাবে এই প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হয়?
রোগী যদি অন্তস্বত্তা হন, বা দুগ্ধ ক্ষরণের পর্যায়ে থাকেন, বা কোন ওষুধ বা সাপ্লিমেন্ট নিয়ে থাকেন তবে তা অবশ্যই চিকিসাদাতাকে জানাতে হবে। সেডেশন প্রক্রিয়ার জন্য চিকিৎসকের নির্দেশিত ওষুধ দেওয়া হয় অথবা এটি ইনজেকশনের মাধ্যমে শিরাতেও প্রয়োগ করা যেতে পারে।
কোন চিকিৎসাপ্রণালীর জন্য এটি ব্যবহৃত হচ্ছে তার উপর নির্ভর করে সেডেশন হতে পারে মাঝারি প্রকৃতির, এক্ষেত্রে রোগি আচ্ছন্ন অবস্থায় থাকে কিন্তু কথা বলতে পারে। অথবা এটি হতে পারে গভীর সেডেশন যার ফলে রোগীর ঘুম পায় এবং শ্বাসের গতি কমে আসে, কিন্তু সে প্রণালী চলাকালীন সজ্ঞানে থাকে, যদিও তার ঘটনাটির কোন স্মৃতি থাকেনা।
অতিরিক্ত সেডেশনের ফলে যকৃৎ বা কিডনি ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে। প্রণালী সম্পন্ন হয়ে গেলে সেডেশনের উপাদানটির প্রভাব ক্রমে কমিয়ে আনা হয় এবং রোগী ধীরে ধীরে চেতনা ফিরে পায়। সেডেশন একটি অপেক্ষাকৃত নিরাপদ প্রক্রিয়া; তবে এর সম্ভাব্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলি হল হৃদস্পন্দনের মাত্রার পরিবর্তন, শ্বাসক্রিয়ার গতিকমে যাওয়া, মাথা যন্ত্রণা বা বমিভাব। ছাড়া পাওয়ার পরে রোগী তার স্বাভাবিক দৈনন্দিন ক্রিয়াকলাপ ও খাদ্যাভ্যাসে ফিরে যেতে পারে।