ফিতা কৃমির সংক্রমণ কি?
ফিতা কৃমি একপ্রকার চ্যাপ্টাকৃতি কৃমি যা প্রাণীর (মানুষ, পশুদের) পেটের ভিতরে থাকে। যখন কোন উৎসের মাধ্যমে মানব শরীরে ফিতাকৃমি প্রবেশ করে,তখন বিভিন্ন শারীরিক সমস্যার কারণে ফিতাক্রিমির সংক্রমণ হয়।
একজন ব্যক্তি ফিতাকৃমির ডিম ও লার্ভা দ্বারাও সংক্রামিত হতে পারেন।
এর প্রধান লক্ষণ ও উপসর্গগুলি কি কি ?
- বমিভাব ও বমিকরা ফিতাকৃমির সংক্রমণের প্রাথমিক উপসর্গের সাথে জড়িত। জ্বরের সাথে দুর্বলতা, ক্লান্তি, এবং ডায়রিয়ার মতো উপসর্গগুলিও দেখা দিতে পারে।
- ব্যক্তির খাবার ইচ্ছা কমে যেতে পারে।আবার ব্যতিক্রমে, অত্যাধিক খিদের অনুভুতিও হতে পারে(স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি)।
- যদি শরীরের মধ্যে কৃমিগুলি এক জয়েগা থেকে অন্য জয়েগায় যায়, সেক্ষেত্রে মাথাযন্ত্রনা এবং খিঁচুনির মতো গুরুতর স্নায়ুবিক সমস্যার উপসর্গগুলি দেখা দিতে পারে।
- ফিতাকৃমির অ্যালারজেনগুলি ছড়িয়ে পরার ফলে রোগীর শরীরে অ্যালার্জি ও ফুসকুড়ির প্রতিক্রিয়া দেখা যেতে পারে।
এর প্রধান কারণগুলি কি কি ?
- সংক্রামিত গরু বা শুকরের মতো উৎস থেকে ফিতাকৃমি মানব শরীরে ছড়িয়ে পরতে পারে। উৎস অনুযায়ী, ছয় ধরণের ফিতাকৃমি আছে যা মানব শরীরে সংক্রমণ ছড়ায়।
- কাঁচা বা সঠিকভাবে রান্না না করা সংক্রামিত পশুর মাংস খাওয়া বা দূষিত জল পান করলে তা ব্যক্তিকে সংক্রামিত করতে পারে।
- সংক্রামিত ব্যক্তির হাতে তৈরি খাদ্যও অন্য ব্যক্তির শরীরে সংক্রমণ ছড়াতে পারে।
- নিজস্ব পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার অভাব যেমন খাবারে হাত দেওয়ার আগে ভালোভাবে হাত না ধোয়া ও অপরিষ্কার হাতে রান্না করা সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে।
কিভাবে এর নির্ণয় ও চিকিৎসা করা হয় ?
- যদি আপনি ফিতাকৃমির সংক্রমণের উপসর্গগুলির সাথে জড়িত হন, সেক্ষত্রে কৃমি ও তার ডিম খুঁজে পাওয়ার জন্য মলের নমুনা পরীক্ষা করা হয়।
- কিছু ক্ষেত্রে ক্রিমিগুলির নমুনায় অনুপস্থিত থাকলেও, সংক্রমণটি বর্তমান হতে পারে, সেই জন্য অনেকগুলি মলের নমুনা সংগ্রহ করা হয়।
- তলপেটে ফোলা বা সিস্টের সম্ভাবনা থাকলে তা নির্ণয়ের জন্য বিশেষত সিটি স্ক্যান, এমআরআই বা অ্যালট্রাসাউনডের ব্যবহার করা হয়।
- শরীরে সংক্রমণ ও ফিতাকৃমির বিরোধী কোন অ্যান্টিবডি আছে কিনা নিশ্চিত করার জন্য রক্ত পরীক্ষা করা হয়।
- কিছুক্ষেত্রে, শরীরে ফিতাকৃমি থাকা স্বত্বেও ব্যক্তির ক্ষেত্রে উপসর্গগুলি নাও দেখা দিতে পারে।
- সংক্রমণের জন্য যথাযথ ওষুধ প্রয়োগ করা হয়। ওষুধের কোর্সটি সম্পূর্ণ করা অত্যন্ত জরুরী।
- এক্ষত্রে যদি ব্যথা বা ফোলাভাব থাকে তাহলে প্রদাহ-নাশক ওষুধগুলির সাথে, কৃমি ও তার ডিমগুলি নষ্ট করতে হেল্মিন্থিক নাশক অ্যাল্বেনডাজোলের মত ওষুধগুলি দেওয়া হয়।
- গুরুতর ক্ষেত্রে, লিভার ও ফুসফুসে গুরুতর সংক্রমণের জন্য, এগুলি বাদ দিতে অস্ত্রপচারের প্রয়োজন হতে পারে।
- প্রত্যেক রোগীর নিজস্ব পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার দিকে যত্নবান হওয়া উচিত এবং পুনরায় সংক্রমণ এড়াতে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস করা উচিত।