টক্সোপ্লাজমোসিস কি?
টক্সোপ্লাজমোসিস এক ধরনের পরজীবী সংক্রমণ যা সাধারণভাবে খুঁজে পাওয়া টক্সোপ্লাজমা গণ্ডীর দ্বারা সৃষ্ট হয়। এই পরজীবী বিভিন্ন পশু ও পাখি, বিশেষত বিড়ালের মধ্যে দেখতে পাওয়া যেতে পারে।
এর প্রধান লক্ষণ ও উপসর্গগুলি কি কি?
এই সংক্রমণটি কোন উপসর্গকে তৈরি না করে নীরবে থেকে যেতে পারে। তবে, উপসর্গগুলি, যদি বিস্তারিত হয়, তবে তা ব্যক্তির রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতার ওপর ভিত্তি করে ভিন্ন হতে পারে। যে সমস্ত ব্যক্তি শক্তিশালি রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতার সাথে জড়িত, তাদের ক্ষেত্রে নীচে দেওয়া উপসর্গগুলি লক্ষ্য করা যেতে পারে:
- মাথাব্যথা।
- জ্বর।
- মাংসপেশিতে ব্যথা।
- গলায় ঘা।
- গলার মধ্যে থাকা লিম্ফ নড বা লসিকা গ্রন্থি ফুলে যাওয়া।
দুর্বল রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা সাথে জড়িত ব্যক্তিদের, নীচে দেওয়া উপসর্গগুলি তৈরি হতে পারে:
- খিঁচুনি।
- প্রচণ্ড মাথাব্যথা।
- দৃষ্টি শক্তি বা দেখতে সমস্যা হওয়া।
- মানসিক অস্থিরতা বা বিভ্রান্তির সৃষ্টি।
এর প্রধান কারণগুলি কি কি?
টক্সোপ্লাজমোসিস, নীচে দেওয়া কারণগুলির জন্য হতে পারে:
- যেহেতু পরজীবীগুলি পশু প্রজাতির মধ্যে থাকে তাই অর্ধেক রান্না হওয়া মাংস খাওয়ার ফলে তা সংক্রমণ ঘটাতে পারে।
- দূষিত জল গ্রহণের মাধ্যমে মানব শরীরে পরজীবীগুলি প্রবেশ করতে পারে।
- সংক্রামিত বিড়ালের মলের সংস্পর্শে এলে সংক্রমণ ছাড়াতে পারে।
- কিছু ক্ষেত্রে, সংক্রামিত মায়ের গর্ভে থাকা শিশু (জন্মগত সংক্রমণ) বা সংক্রামিত রক্ত শরীরে দেওয়ার মাধ্যমে সংক্রমণ ছড়াতে পারে।
এটি কিভাবে নির্ণয় ও চিকিৎসা করা হয়?
পদ্ধতিগতভাবে টক্সোপ্লাজমোসিস নির্ণয় করতে, নীচে দেওয়া পরীক্ষাগুলি করা হতে পারে:
- রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে শরীরে পরজীবী নাশক অ্যান্টিবডিগুলিকে দেখা হয়
- সিটি স্ক্যান।
- এমআরআই স্ক্যান।
- বায়োপসি।
- পরজীবীগুলিকে দেখতে মল পরীক্ষা করা হয়।
নির্ণয়টি সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার পর, চিকিৎসক অ্যালবেন্ডাজোলের মত অ্যান্টিহেলমিন্থিক্স ওষুধগুলির সাহায্যে সংক্রমণের চিকিৎসা করতে পারেন। তবুও, বেশিরভাগ ব্যক্তির ক্ষেত্রে, উপসর্গগুলি কিছু সপ্তাহের মধ্যে বিনা চিকিৎসাতেই সেরে যেতে পারে।
দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার সাথে জড়িত ব্যক্তিদের কাছে ওষুধগুলি গুরুত্বপূর্ণ। কোন জটিলতা না থাকলে সংক্রমণটি সহজেই নিরাময় করা যায়।
সংক্রমণ প্রতিরোধ করার জন্য, এটি সম্পূর্ণভাবে প্রস্তাবিত যে, সকলে যেন ভালোভাবে রান্না করা মাংস খায় এবং বিড়ালের আবর্জনা পরিষ্কার করার সময় স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখে। কাঁচা মাংসে হাত দেওয়ার পর সাবান ও জল দিয়ে হাত ধুয়ে সংক্রমণের বিস্তার রোধ করা জরুরি।