কালো জ্বর কি?
কালো জ্বর (ভিসেরাল লেইশম্যানিয়াসিস) ধীর ধীরে বৃদ্ধি হওয়া, প্রচন্ড ছোঁয়াচে দীর্ঘস্থায়ী অসুখ, যা বারবার হওয়া এবং অনিয়মিত জ্বর, উল্লেখযোগ্যভাবে ওজন কমা, যকৃৎ এবং স্প্লিনের ফোলা, এবং অ্যানিমিয়ার দ্বারা চিহ্নিত করা হয়। এটা স্ত্রী বালি-মাছির (ফ্লেবোটোমাইন) কামড়ে ছড়িয়ে পড়ে।
এর প্রধান লক্ষণ ও উপসর্গগুলো কি কি?
কোন অঙ্গ আক্রান্ত হয়েছে তার উপর নির্ভর করে বিভিন্ন প্রকারের লেইশম্যানিয়াসিস দেখা যায়। সবচাইতে সাধারণ হল ত্বক এবং ভিসেরাল বা আন্তরয়ন্ত্রীয় (যকৃৎ এবং স্প্লিনে আক্রমণ করে)। কালো জ্বরের লক্ষণ এবং উপসর্গগুলির মধ্যে রয়েছে:
- খিদে কমে যাওয়া।
- ফ্যাকাশে ভাব এবং যথেষ্ট ওজন কমে যাওয়া।
- দূর্বলতা।
- জ্বর।
- ত্বক - শুকনো, পাতলা এবং আঁশের মতো হয়ে যাওয়া।
- অ্যানিমিয়া বা রক্তাল্পতা।
- স্প্লেনোমেগালি - স্প্লিনের বড় হয়ে যাওয়া, সাধারণত নরম ও অ-সংবেদনশীল হওয়া।
- যকৃৎ- বড়- নরম, মোলায়েম তলের এবং তীক্ষ্ণ প্রান্তের হয়।
এর প্রধান কারণগুলো কি কি?
কালো জ্বর একটা ব্যাধি যেটা ভেক্টর-সংক্রামিত বালি মাছির (স্ত্রী ফ্লেবোটোমাস আর্জেন্টাইপস) দ্বারা ছড়ায়। সংক্রামিত মাছি লেইশম্যানিয়া নামক প্যারাসাইটকে বা পরজীবীকে রক্তে সরবরাহ করে যেটা পরে উপরে উল্লেখ্য উপসর্গের সৃষ্টি করে।
এটি কিভাবে নির্ণয় ও চিকিৎসা করা হয়?
কালো জ্বর দুইভাবে নির্ণয় করা হয়
- উপসর্গগত: উপরে বলা উপসর্গগুলো খুঁটিয়ে নির্ণয় করা হয় এবং এর উপর লক্ষ রাখা হয়।
- পরীক্ষাগারে: প্যরাসাইট বা পরজীবীর বিরুদ্ধে তৈরি অ্যান্টিবডিগুলিকে দেখার জন্য সেরোলজিক্যাল পরীক্ষা করা হয় যেটাতে বায়োপসি বা কাল্চারের মাধ্যমে হাড়ের মজ্জা/স্প্লিন/লিম্ফ নোড বা লসিকা গ্রন্থির টিস্যুর নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এটা নিশ্চিত সনাক্তকরণ হিসাবে বিবেচনা করা হয়।
রোগীর শরীরে প্যরাসাইটকে নষ্ট করার জন্য অ্যান্টি-প্যরাসাইট ওষুধ দেওয়া হয়। কালো জ্বরের প্রথম মৌখিক ওষুধ হল মিল্টিফোসিন। এটা রোগীদের ক্ষেত্রে 95% কার্যকর। কালো জ্বরের টিকা বা এটা আটকানোর ওষুধ এখনো বেরোয়নি তাই যখন কোনো এন্ডেমিক এলাকা যেমন, সাব- সাহারান দেশ, এশিয়া, দক্ষিণ ইউরোপ এবং আমেরিকায় যাবেন তখন সাবধানতা অবলম্বন করা দরকার।
যখন এইসব এন্ডেমিক এলাকায় যাবেন তখন নিজের যেসমস্ত যত্ন নেবার দরকার তার মধ্যে রয়েছে, ফুলহাতা শার্ট ও প্যান্ট পড়া। পোকামাকড় দূরে রাখার স্প্রে ব্যবহার করবেন এবং সন্ধ্যায় ও রাতে যখন বালি মাছি প্রচন্ড সক্রিয় থাকে তখন বাইরে বেরোবেন না।