পীতজ্বর কি?
এটি একটি গুরুতর ভাইরাল সংক্রমণ, যা সাধারণত আফ্রিকা এবং মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকায় পাওয়া যাওয়া এডিস ইজিপ্টি মশার মাধ্যমে ছড়ায়। এই রোগটি ইয়েলো জ্যাক বা ইয়েলো প্লেগ নামেও পরিচিত। পীতজ্বরের ভাইরাসে সংক্রমিত মশারাই শুধুমাত্র পীতজ্বরের কারণ হতে পারে, কামড়ানোর পর। কিছু ব্যক্তির মধ্যে জন্ডিসের মতো গায়ের চামড়া ও চোখের সাদা অংশ হলদেটে হয়ে যাওয়ার লক্ষণ দেখা যায়, সেজন্য এর সঙ্গে হলুদ বা পীত শব্দটি যোগ হয়েছে।
এর প্রধান লক্ষণ এবং উপসর্গগুলি কি কি?
পীতজ্বরের স্টেজ বা পর্যায় অনুযায়ী উপসর্গগুলিকে শ্রেণিবদ্ধ করা যেতে পারে:
- ক্ষুধামান্দ্য, জ্বর, জন্ডিস, ফ্লাশিং, মাথাব্যথা, গাঁটের ব্যথা, পেশীর ব্যথা এবং বমি হল স্টেজ 1-এ দেখা দেওয়া সাধারণ লক্ষণ।
- স্টেজ 1-এর উপসর্গ চলে যায় এবং বেশিরভাগ ব্যক্তিই সুস্থ হয়ে ওঠেন। কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে, উপসর্গ 24 ঘণ্টা পর আবার ফুটে ওঠে।
- লিভার, হার্ট ও কিডনির সমস্যা; রক্তপাতের রোগ; কোমা; মলে রক্ত; প্রলাপ; চোখ, মুখ ও নাক দিয়ে রক্ত পড়ার মতো গুরুতর লক্ষণ স্টেজ 3-তে অনুভূত হয়।
এর প্রধান কারণ কি?
সংক্রমিত মশার কামড়ের ফলে পীতজ্বর হয়। কামড় খাওয়ার পর তিন থেকে ছয় দিন পর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির মধ্যে উপসর্গ ফুটে উঠতে শুরু করে।
এটি কিভাবে নির্ণয় এবং চিকিৎসা করা হয়?
রোগ নির্ণয়ে সাধারণত উপসর্গের উপস্থিতির জন্য শারীরিক পরীক্ষা করা হয়। পীতজ্বরের অন্যান্য লক্ষণ আছে কি না, তা যাচাই করার জন্য ডাক্তার হয়তো বিভিন্ন রকম প্রশ্ন করতে পারেন। ডাক্তারের যদি পীতজ্বরের ব্যাপারে সন্দেহ হয়, তাহলে রোগ নির্ণয় সুনিশ্চিত করার জন্য রক্ত পরীক্ষা করাতে বলতে পারেন। রক্ত পরীক্ষায় লিভার ও কিডনির মতো অঙ্গের বিকলতা ধরা পড়ে যেতে পারে।
নির্দিষ্ট কোনও চিকিৎসা উপলব্ধ নয়, কিন্তু উপসর্গ অনুযায়ী চিকিৎসা পদ্ধতি সাধারণত অনুমোদন করা হয়, এর মধ্যে রয়েছে:
- প্রচণ্ড রক্তপাতের ক্ষেত্রে রক্ত এবং রক্তজাত উপাদানের ট্রান্সফিউশন।
- কিডনি বিকলতার ক্ষেত্রে ডায়ালেসিস।
- ডিহাইড্রেশন প্রতিরোধে বা শরীরে তরলের ঘাটতি মেটাতে শিরার মাধ্য়মে শরীরে তরল প্রবেশ করানো।
ইয়েলো ফিভার প্রবণ অঞ্চলে যাওয়ার আগে টীকা নিয়ে নিলে পীতজ্বর প্রতিরোধ করা যেতে পারে।