বুকের সংক্রমণ - Chest Infections in Bengali

Dr. Nabi Darya Vali (AIIMS)MBBS

May 07, 2019

March 06, 2020

বুকের সংক্রমণ
বুকের সংক্রমণ

বুকের সংক্রমণ কি?

বুকের সংক্রমণ আসলে শ্বসনতন্ত্রের নিচের অংশের সংক্রমণ যেটা ফুসফুস এবং ব্রংকিকে প্রভাবিত করে। এই সংক্রমণের মধ্যে প্রধানত রয়েছে ব্রংকাইটিস, যা হলো ফুসফুসের বিশাল বায়ুপথের প্রদাহ এবং নিউমোনিয়া, যা হলো ফুসফুসের বায়ুথলির প্রদাহ। সব বুকের সংক্রমণের প্রাথমিক লক্ষণ হলো একটানা কাশি, ঠান্ডা লাগাজ্বর। এটা পূর্বাভাস করা হচ্ছে যে 2030 সালের মধ্যে বুকের সংক্রমণ সারা বিশ্ব জুড়ে সবথেকে সাধারণ সংক্রমণ বলে গণ্য হবে।

এর প্রধান লক্ষণ ও উপসর্গগুলি কি কি?

যদিও বুকের সংক্রমণে একটানা কাশি একটা সাধারণ উপসর্গ, এছাড়াও আরো কিছু সাধারণ লক্ষন ও উপসর্গ দেখা যায় যেমন:

কাশি এবং শ্বাসকষ্টকে অ্যাস্থমার সাথে গুলিয়ে ফেলা হতে পারে। বুকের সংক্রমণ অ্যাস্থমার উপসর্গগুলিকে আরো খারাপ করে তুলতে পারে।

এর প্রধান কারণগুলি কি কি?

বুকের সংক্রমণ অনেকগুলো কারণে হতে পারে। ছোট শিশুদের, ধূম্রপানকারীদের, এবং গর্ভবতী মহিলাদের বুকের সংক্রমণ হওয়ার প্রবনতা বেশী থাকে। কিছু অবস্থা যেমন, অটোইমুন অসুখ এবং ইন্টারস্টিশিয়াল ফুসফুসের অসুখের কারণেও বারবার বুকের সংক্রমণ হতে পারে। চলুন একবার বুকের সংক্রমণের সাধারণ কারণগুলো দেখে নেওয়া যাক।

  • একটানা ঠান্ডা এবং ফ্লু: এর জন্য বায়ুপথে প্রদাহ এবং সংক্রমণ হতে পারে।
  • ঘনঘন দূষিত বায়ু এবং ধুলোর সংস্পর্শে আসা: যেকোনো প্রকার দূষকই বায়ুপথের আস্তরনে অস্বস্তি সৃষ্টি করতে পারে।
  • মাইক্রোঅর্গানিজমের কারণে সংক্রমণ: ব্রংকাইটিস সাধারণত রাইনোভাইরাস বা ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের কারণে হয়, কোনো কোনো বিরল ক্ষেত্রে, ব্যাকটিরিয়ার কারণেও এটা হয়। নিউমোনিয়া একটা ব্যাকটিরিয়াল সংক্রমণের কারণেই হয়, যদিও, ভাইরাস, মাইক্রোপ্লাসমা এবং ফাঙ্গির কারণেও নিউমোনিয়া হতে পারে।

এটি কিভাবে নির্ণয় ও চিকিৎসা করা হয়?

স্টেথোস্কোপের সাহায্যে  বুকের পরীক্ষার দ্বারা বুকের সংক্রমণ নির্ণয় করা হয়। বুকের পরীক্ষার সঙ্গে নিচে উল্লেখ করা পরীক্ষাগুলিও করা হয় যা সঠিক চিকিৎসার ধরণ নির্ণয় করতে সাহায্য করে:

  • বুকের এক্স-রে।
  • থুথু পরীক্ষা।
  • স্পাইরোমিটারের সাহায্যে পালমোনারী কার্যকলাপ পরীক্ষা।
  • পাল্স অক্সিমেট্রি (রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা পরিমাপের জন্য)।

ব্রঙ্কাইটিস তীব্র ও কখনও দীর্ঘমেয়াদী হতে পারে। সাধারণত নিম্নলিখিত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ব্রঙ্কাইটিসের চিকিৎসা করা হয়:

  • নেবুলাইজারের সাহায্যে স্টেরয়েড গ্রহণ।
  • মৌখিক স্টেরয়েড।
  • মৌখিক ইন্টারলিউকিন ইনহিবিটরস।
  • ব্রঙ্কোডাইয়ালেটরস।

নিউমোনিয়া আক্রান্ত রোগীদের উচ্চ ডোজের অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগ করে চিকিত্‍সা করা হয় যা আক্রমনকারী ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে কার্যকরী। চিকিৎসকরা নিউমোনিয়াতে আক্রান্ত রোগীদের সাধারণত ম্যাক্রোলাইড বা বেটা-ল্যাক্টাম অ্যান্টিবায়োটিক দেন সাথে জ্বরের জন্য অ্যান্টিপাইরেটিকস (জ্বর কমানোর ওষুধ) ও দেন। এছাড়াও, উভয়প্রকার বুকের সংক্রমণে, নিজে কিভাবে নিজের যত্ন নেবেন নিচে বলা হল:

  • প্রচুর পরিমাণে জল খান।
  • বিশ্রাম নিন।
  • ধূমপান এড়ান।
  • বন্ধ নাক খোলার ড্রপ ব্যবহার করুন।

যদিও কিছু ক্ষেত্রে অবস্থা গুরুতর হয় এবং অক্সিজেনের দরকার পড়ে, সময়মতো নির্ণয় ও চিকিৎসার সাহায্যে বুকের সংক্রমণ সহজেই নিয়ন্ত্রণ করা যায়।



তথ্যসূত্র

  1. Verma N et al. Recent advances in management of bronchiolitis.. Indian Pediatr. 2013 Oct;50(10):939-49. PMID: 24222284
  2. Evertsen J et al. Diagnosis and management of pneumonia and bronchitis in outpatient primary care practices.. Prim Care Respir J. 2010 Sep;19(3):237-41. PMID: 20490437
  3. Peter Wark et al. Bronchitis (acute). BMJ Clin Evid. 2015; 2015: 1508. PMID: 26186368
  4. Better health channel. Department of Health and Human Services [internet]. State government of Victoria; Chest infections
  5. Chapman C et al. Risk factors for the development of chest infections in acute stroke: a systematic review.. Top Stroke Rehabil. 2018 Sep;25(6):445-458. PMID: 30028658