সারাংশ
জন্ডিস (কামলা রোগ) একটি অসুখ যেখানে টোটাল সিরাম বিলিরুবিন'এর (টি-এস-বি) মাত্রা 3 এমজি/ডিএল'র বেশি হয়ে যায়। এর লক্ষণগুলির মধ্যে আছে ত্বক, চোখের সাদা অংশ এবং মিউকাস ঝিল্লি (শরীরের ভিতরের নরম অংশগুলির আস্তরণ যেমন মুখ) হলদে হয়ে যাওয়া। নবজাতক শিশুদের সাধারণত জন্ডিস (কামলা রোগ) থাকে, কিন্তু প্রাপ্তবয়স্কদেরও এই রোগে ভুগতে হতে পারে। বড়দের অন্যান্য লক্ষণও থাকে যেমন, পেট ব্যথা, ক্ষুধামান্দ্য, ওজন হ্রাস, ইত্যাদি। শিশুদের ক্ষেত্রে ফোটোথেরাপী এবং রক্ত সঞ্চালন করতে হয়। বড়দের ক্ষেত্রে অসুখের কারণটি বাদ দিতে হবে, ওষুধ-পত্রের ব্যবহার এবং কখনও কখনও শল্য চিকিৎসা করতে হয়। যদি চিকিৎসা না করা হয়, তাহলে অসুখটি শিশুদের মস্তিষ্ককে প্রভাবিত করতে পারে। এছাড়াও অন্যান্য জটিলতা, যেমন সেপসিস, যকৃত এবং বৃক্কের অসুখ বা ব্যর্থতা হতে পারে।
বিলিরুবিনের বিপাক
আমাদের দেহে নতুন লোহিত রক্ত কণিকা (আর-বি-সি) ক্রমাগত তৈরি হতে থাকে আর পুরানোগুলি ধ্বংস হতে থাকে। এই প্রক্রিয়া চলাকালীন, পুরানো আর-বি-সি'র ভিতরে থাকা হিমোগ্লোবিন ভেঙে গিয়ে গ্লোবিন, লোহা আর বিলিভার্ডিন তৈরি হয়। আমাদের হাড়ের মজ্জার ভিতরে গ্লোবিন আরে লোহাকে পুনঃব্যবহার করে নতুন হিমোগ্লোবিন তৈরি হয়। ওদিকে, বিলিভার্ডিন আবার ভেঙে গিয়ে বিলিরুবিন নামক উপজাত পদার্থ তৈরি করে। এই বিলিরুবিনকে যকৃত নিয়ে গিয়ে আরও বিপাক প্রক্রিয়া তে পাঠানো হয়। এই প্রক্রিয়াজাত বিলিরুবিন পিত্তনালীর মধ্যে দিয়ে বয়ে গিয়ে পৌঁছায় অন্ত্রে। সেখানে এটি ভেঙে গিয়ে সৃষ্টি হয় ইউরোবিলিনোজেন ও স্টারকোবিলিনোজেন। ইউরোবিলিনোজেনকে শুষে নিয়ে রক্তে ছেড়ে দেওয়া হয়, যার কিছু অংশ আবার আমাদের যকৃতে ফিরে আসে এবং বাকিটাকে বৃক্ক পাঠিয়ে দেয় প্রস্রাবে। স্টারকোবিলিনোজেন মলের সাথে শরীরের বাইরে চলে যায়।