রাতকানা রোগ কি?
রাতকানা হল একটা রোগ যাতে রাতে বা স্বল্প আলোতে দৃষ্টিশক্তির অবনতি হয়। এটি হল প্রাথমিক চিকিৎসাগত উপসর্গ যা ভিটামিন A র অভাবকে চিহ্নিত করে, এবং রেটিনাল সিরামের মাত্রায় স্বল্পতাকে বিশেষভাবে নির্দেশিত করে।
এর প্রধান লক্ষণ ও উপসর্গগুলি কি কি?
চিকিৎসাগত লক্ষণ ও উপসর্গগুলি হল হালকা আলোতে দুর্বল দৃষ্টিশক্তি, রাতে ড্রাইভিং করার সময় অসুবিধা এবং লঘু পরিমাণে চোখের অস্বস্তি দেখা দেওয়া। প্রাথমিক লক্ষণগুলি হল অন্ধকারে চোখে খুব বেশী সমস্যা হওয়া কম মাত্রায় রেটিনাল সিরাম সঞ্চারের কারণে (1.0 মাইক্রোমোল/লিটার এর নীচে) এবং বিটটের দাগ। এই দাগ বিশেষভাবে পরিলক্ষিত হয় ভিটামিন এর অভাবে এবং চোখের পাশে (বাইরে) কোণাকৃতি, শুষ্ক, সাদাটে ফেনাবিশিষ্ট ক্ষত সৃষ্টি দ্বারা এর বৈশিষ্ট্যগুলি প্রকাশ পায়।
এর প্রধান কারণগুলি কি কি?
চোখের ভিতরে, ভিটামিন A অপ্সিনের সাথে সমন্বয়সাধণ করে রোডোপসিন উৎপন্ন করে, যা হল চোখে রডের অভ্যন্তরস্থ আলোক-সংবেদী দৃষ্টিসংক্রান্ত রঞ্জক পদার্থ। আমাদের চোখে দুপ্রকারের আলোক গ্রাহক আছে, রড ও কোন। রডগুলি হালকা আলোতে দেখতে সাহায্য করে কিন্তু রঙীন কিছু দেখতে সাহায্য করে না। কোনগুলি একমাত্র উজ্জ্বল আলোতে সক্রিয় হয় এবং আমাদের রঙীন বস্তু দেখতে সাহায্য করে। রোডোপসিনের মাত্রার পতন ঘটলে এবং তার কার্যকারিতা কমে যায়, এই কারণেই রাতকানা রোগ হয়।
ভারতের মতো উন্নয়নশীল দেশে, ভিটামিন এর অভাব খুব সহজেই দেখা যায় যার কারণ হল অপুষ্টি, এবং তারসাথে সঠিকভাবে পোষকপদার্থ শরীরে শোষিত না হওয়া। এরকমই আরেকটি সমস্যা, যা ভিটামিন এর অভাবের কারণে হয় না, সেটি হল রেটিনিটিস পিগমেন্টোসা, এটি একটি বংশগত রাতকানা রোগ যা জিনগত ত্রুটির কারণে হয়।
কিভাবে এটি নির্ণয় করা হয় ও এর চিকিৎসা কি?
রাতকানা রোগ নির্ণয় করা হয় চিকিৎসাগত পদ্ধতি ও চিকিৎসাগত পূর্ব ইতিহাস জানা এবং তার থেকে ভিটামিন এ সিরামের কম মাত্রায় উপস্থিতি প্রমাণের মাধ্যমে, বিটটের দাগ ও ইলেক্ট্রোরেটিনোগ্রাফীর অস্বাভাবিক ফলাফল রডের কার্যকারিতা কমে যাওয়াকে প্রমান করে।
2,00,000 আইইউ ভিটামিন এ তিনদিন সেবনের মাধ্যমে, ও তারপর 50,000 আইইউ ভিটামিন এ পরবর্তী 14 দিন অথবা 1-4 সপ্তাহ পর পর্যায়ক্রমে একটি বাড়তি ডোজ নেওয়ার মাধ্যমে এই অভাবের চিকিৎসা করা ও রোগটির সম্পূর্ণ নিরাময় করা হয়। ভিটামিন এ সমৃদ্ধ খাদ্যের বেশিরভাগ উৎস উদ্ভিতজাত, যেমন নটেশাক, গাজর, বেল পেপারস, ক্যাপসিকাম, লেবুজাতীয় ফল, পাকা পেঁপে, আম, এবং অন্যান্য লাল-হলদে রঙের ফল ও শাকসবজি। প্রাণীজ উৎসগুলি হল, ডিম ও মাখন, যেগুলি হল ভিটামিন এ সমৃদ্ধ। যারা ভিটামিন এ সমৃদ্ধ ওষুধ সেবন সহ্য করতে পারেন না, তাদের জন্য পেশীতে ভিটামিন এ প্রয়োগ করা হয়ে থাকে। যেহেতু ভিটামিন এর অভাব হল একটি পদ্ধতিগত রোগ, তাই চোখের ড্রপ ব্যবহারে কোন সুফল পাওয়া যায় না।