গর্ভাবস্থায় ব্যথা কি?
গর্ভাবস্থায় শরীরে নানারকম পরিবর্তন ঘটে যেমন হরমোনঘটিত পরিবর্তন যেহেতু এর ফলে বেড়ে ওঠা বাচ্চার জন্য শরীরে প্রয়োজনীয় জায়গা প্রস্তুত হয়। শরীরের স্বাভাবিক শারীরবৃত্তিয় পদ্ধতিতে অনেক পরিবর্তন ঘটে, যার ফলে শরীরের বিভিন্ন অংশে ব্যথা সৃষ্টি হয়।
এই রোগের প্রধান লক্ষণ এবং উপসর্গগুলি কি কি?
গর্ভাবস্থায় ব্যথার সাথে সংযুক্ত লক্ষণ এবং উপসর্গগুলি হল:
- কোষ্ঠকাঠিন্য।
- নাক দিয়ে রক্তপাত।
- অবসাদ।
- মুত্রত্যাগের সময় সমস্যা।
- আবেগ এবং অনুভূতিতে পরিবর্তন।
- চিন্তা করা।
- পায়ে ফোলাভাব।
- শরীরে স্ফীতভাব।
- বমি বমি ভাব।
- বমি।
- মাড়ি থেকে রক্তপাত।
- ভয়ার্ত ভাব।
- ঘাম হওয়া।
- ওজন বৃদ্ধি।
- জ্বর।
- স্তনে ব্যাথা।
- যোনি স্রাব।
- ভুলে যাওয়ার অভ্যাস।
- শরীর ঠান্ডা হয়ে যাওয়া।
- বুকজ্বালা।
- শ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্যা - ডিস্পোনিয়া।
এই রোগের প্রধান কারণগুলি কি কি?
গর্ভাবস্থায় ব্যথার মূল কারণগুলি হল:
- প্রিক্লামসিয়া (উচ্চ রক্তচাপ) যেটি মাথাব্যথা বা মাইগ্রেনের কারণ।
- জরায়ুর চারপাশের পেশী এবং লিগামেন্টগুলি প্রসারিত হতে শুরু করে যার কারণে তলপেটের একদিকে বা উভয়দিকে ব্যথা সৃষ্টি হয়।
- জবায়ুর ক্রমবর্ধমান ওজনের কারণে পায়ে ব্যাথা, যন্ত্রণার অনুভূতি বা অসাড়তা অনুভব হয়।
- গর্ভাশয় শরীরে এবং পিঠে চাপ সৃষ্টি করে যার কারণে পিঠে যন্ত্রনা হয়।
- প্লাসেন্টাল অ্যাবরাপশন, একটি অবস্থা যার ফলে প্লাসেন্টা জরায়ু থেকে আলাদা হয়ে যায়, এর ফলে ক্রমাগত যন্ত্রনা হয়।
- গর্ভবতি মহিলাদের মধ্যে পায়ের পাতা এবং পায়ে টান ধরার প্রবণতা থাকে ফলে পেশীতে আকস্মিক এবং তীব্র ব্যাথা উৎপাদন হয়।
- মুত্রনালীর সংক্রমণ পিঠের নীচের দিকে ব্যথা এবং তলপেটের ব্যথার কারণ।
- কিছু মহিলাদের মধ্যে, হাড়ের সন্ধিগুলি আলগা হয়ে যায় এবং শ্রোণী অঞ্চলে অস্থায়ীত্ব সৃষ্টি হয় যার কারণে নিতম্ব এবং পায়ে ব্যাথা হয়।
- একটপিক প্রেগন্যান্সি হল, একটি অবস্থা যার ফলে নিষিক্ত ডিম্বক জরায়ুর বাইরে প্রোথিত হয়, এটি রক্তপাতের সাথে তীব্র ব্যাথা সৃষ্টি করতে পারে।
- বার বার হওয়া গর্ভস্রাবে মাঝারি থেকে তীব্র পিঠে ব্যাথা হতে পারে।
এই রোগের নির্ণয় এবং চিকিৎসা কিভাবে হয়?
গর্ভাবস্থায় ব্যাথার কারণ নির্ণয় করার জন্য, কোনো অন্তর্নিহিত কারণ আছে কিনা খুঁজে বার করতে ডাক্তার চিকিৎসাজনিত ইতিহাস জানতে চান। ডাক্তার শারীরিক পরীক্ষা করে দেখেন এবং রোগীর দ্বারা উল্লেখ করা উপসর্গগুলির বিবরণ লিপিবদ্ধ করেন।
গর্ভাবস্থায় ব্যথার চিকিৎসা করতে নিম্নলিখিত পদ্ধতিগুলি ব্যবহার করা হয়, যেমন:
- আফিমজাত এনালগেসিকস, নন-স্টেরইডাল অ্যান্টি-ইনফ্লেমাটরি ড্রাগসের (এনএসএআইডিএস) মতো সেবনের ওষুধগুলি এবং ব্যাথা হ্রাস করতে ব্যথানাশক দেওয়া হয়।
- সর্বদা যন্ত্রণার থেকে মুক্তি দিতে ফেনটানিল প্যাচেস।
- যদি ব্যথা প্রেগন্যান্সি বা গর্ভাবস্থা ছাড়া অন্য কারণে হয় যেমন গলব্লাডারে প্রদাহ, ফেটে যাওয়া এপেন্ডিক্স, কিডনিতে পাথর, পেপটিক আলসার ইত্যাদি তাহলে অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হয়।