পেনিস ডিসঅর্ডার অথবা লিঙ্গের রোগ কি?
পেনিস বা লিঙ্গ হলো পুরুষের কপিউলেটরি অর্থাৎ মৈথুনাঙ্গ, যা পুরুষের প্রজনন পদ্ধতির একটি অংশ। লিঙ্গের রোগ শুধুমাত্র অস্বস্তি বা ব্যথার কারণ নয়, সেই সঙ্গে আক্রান্ত ব্যক্তির যৌন ক্রিয়াকেও প্রভাবিত করে এবং তা থেকে প্রজনন সংক্রান্ত চিন্তার উদ্রেক হতে পারে। লিঙ্গের সাধারণ সমস্যার মধ্যে রয়েছে - ইরেক্টাইল ডিসফাংশন, ব্যালানাইটিস, প্রিয়াপিজম, পাইরোনিস ডিজিজ এবং অত্যন্ত বিরল রোগ পেনাইল ক্যান্সার।
এর প্রধান লক্ষণ এবং উপসর্গগুলি কি?
উপসর্গগুলি অন্তর্নিহিত অবস্থার অনুরূপ হয় নিম্নলিখিত কারণগুলির দ্বারা বর্ণনা দেওয়া যেতে পারে এবং সেইভাবে বর্ণনা করা যেতে পারে:
- ইরেক্টাইল ডিসফাংন - এটি সবচেয়ে সাধারণ অবস্থা, যেখানে ইরেকশন বা ঋজুতা বজায় রাখতে অসুবিধা অথবা অক্ষমতা হয়।
- প্রিয়াপিজম একটি যন্ত্রণাদায়ক অবস্থা, এই অবস্থায় লিঙ্গ 4 ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে ঋজু হয়ে থাকে।
- ফিমোসিস - এই অবস্থায় লিঙ্গের উপরের চামড়া খুব শক্ত হয়ে যায় এবং আপনা থেকে পিছন দিকে সরতে পারে না, তার ফলে প্রচণ্ড ব্যথা হয়।
- পাইরোনিস ডিজিজ - এই রোগে লিঙ্গের ভিতরের আস্তরণে স্কার বা অস্থিস্থাপক টিস্যুর শক্ত পিণ্ড তৈরি হওয়ার ফলে লিঙ্গ যখন ঋজু হয়, তখন তা একদিকে বেঁকে যায়। চামড়ার উপরের এই রোগে লিঙ্গে ফুসকুড়ি, চুলকানি, ত্বক বিবর্ণতা এবং আলসার বা ঘা হয়ে যায়।
এর প্রধান কারণ কি?
- প্রিয়াপিজমের কারণগুলির মধ্যে রয়েছে নির্দিষ্ট কিছু ওষুধ গ্রহণ, মদ, আঘাত, মেরুদণ্ডের অবস্থা।
- প্রিম্যাচিওর ইজাকুলেশন বা শীঘ্রপতন প্রধানত উদ্বিগ্নতা, মানসিক চাপ এবং যৌনতা দমনের ইতিহাসের কারণে হয়।
- ফিমোসিস সাধারণত সেইসব পুরুষদের মধ্যে দেখা যায়, যাঁরা খৎনা অথবা লিঙ্গের অগ্রভাগের চামড়া ছাড়াননি।
- পাইরোনিস রোগের সঠিক কারণ অজানা, কিন্তু ভাস্কুলাইটিস, আঘাত এবং বংশগত কারণগুলি কিছু সংযুক্ত কারণ।
- ধূমপান এবং এইচপিভি (হিউমান প্যাপিলোমা ভাইরাস ) পেনিস ক্যান্সারের গুরুত্বপূর্ণ কারণ।
এটি কিভাবে নির্ণয় এবং চিকিৎসা করা হয়?
রোগ নির্ণয় সাধারণত লিঙ্গ এবং অন্ডকোষের পরীক্ষার মাধ্যমে করা হয়। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির প্রজনন ক্ষমতা সংরক্ষিত আছে কি না, তা সুনিশ্চিত করার জন্য রুটিন স্পার্ম কাউন্ট এবং লোকাল সোনোগ্রাফি করা হয়। চিকিৎসা কারণের ওপর নির্ভর করে হয়।
- প্রিয়াপিজমের চিকিৎসায় একটি সূঁচের মাধ্যমে লিঙ্গ থেকে বের করে নেওয়া হয়।
- ফিমোসিসের চিকিৎসার জন্য প্রায়শই অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হয়।
- পাইরোনিস ডিজিজ যদি মৃদু হয়, 15 মাসের মধ্যে বিনা চিকিৎসাতেই আপনা থেকেই সেরে যায়।
- পেনিস ক্যান্সারের চিকিৎসায় অস্ত্রোপচার, রেডিয়েশন এবং কেমোথেরাপির সাহায্য নেওয়া হয়।
পেনিস ডিসঅর্ডার অথবা লিঙ্গের রোগের মোকাবিলা করা যন্ত্রণাদায়ক এবং এটি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির আবেগ তাড়িত মানসিক অবস্থাকে প্রভাবিত করে পারে।
নির্দিষ্ট কিছু স্ব-যত্নের টিপস রয়েছে যা লিঙ্গের রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে এবং এইভাবে ব্যক্তিকে সুস্থ যৌন জীবন দেয়। অন্তর্ভুক্ত টিপস হল
- লিঙ্গকে পরিষ্কার রাখা।
- নিয়মিত যৌনাঙ্গের পরীক্ষা করানো।
- একাধিক যৌনসঙ্গী না রাখা।
- আঁটোসাঁটো অন্তর্বাস না পরা।
- প্রচণ্ড উত্তাপের সংস্পর্শ থেকে লিঙ্গকে রক্ষা করা।
- ধূমপান ত্যাগ।
যদি লিঙ্গে কোনওরকম অস্বাভাবিক পরিবর্তন দেখা দেয়, তাহলে সময়মতো রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসার জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির সঙ্গে সঙ্গে ডাক্তার দেখানো উচিত।