পেরিটোনাইটিস - Peritonitis in Bengali

Dr. Ayush PandeyMBBS,PG Diploma

May 10, 2019

March 06, 2020

পেরিটোনাইটিস
পেরিটোনাইটিস

পেরিটোনাইটিস কি?

পেরিটোনিয়ামে প্রদাহ হলো পেরিটোনাইটিস, পেরিটোনিয়াম হলো একরকমের টিস্যু বা কলা যা পেটের আভ্যন্তরীন আস্তরণ গঠনে সাহায্য করে এবং পেটের ভিতরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গকে রক্ষা করে। পেরিটোনাইটিস খুব সাধারণ কিন্তু গুরুতর অবস্থা, যা ব্যাকটেরিয়াঘটিত সংক্রমণ অথবা পেরিটোনিয়াল সার্জারি বা পেরিটোনিয়াল ডায়ালিসিসের জন্য হয়ে থাকে। এই অবস্থার অবিলম্বে চিকিৎসার প্রয়োজন, যদি না চিকিত্‍সা করা হয় তাহলে অবস্থার অবনতি হতে পারে।

এর প্রধান লক্ষণ এবং উপসর্গগুলি কি কি?

এর লক্ষণ এবং উপসর্গগুলি হলো:

এর প্রধান কারণগুলি কি কি?

পেরিটোনাইটিসের সবথেকে সাধারণ কারণ হল হঠাৎ ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণ, যা মুখ্য হতে পারে (কোনও অন্তর্নিহিত রোগ ছাড়া) অথবা গৌণ, যেখানে অন্য কোনও অঙ্গ থেকে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে। যদিও পেরিটোনাইটিসের আরও অন্যান্য কারণ থাকতে পারে। পেরিটোনাইটিসের অন্য কারণগুলি সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হলঃ

  • পেটে ঘা বা আঘাত
  • পেরিটোনিয়াল ডায়ালিসিস- পেরিটোনিয়াল তরলের ডায়ালিসিস, যেখানে তরলটিকে একটি মেশিনের সাহায্যে ফিল্টার করা হয়।
  • পেটের অস্ত্রোপচার।
  • অ্যাপেন্ডিসাইটিস
  • পেটে আলসার
  • ক্রোন্স ডিসিজ- অন্ত্রের একধরণের প্রদাহজনিত রোগ।
  • অগ্ন্যাশয় এবং শ্রোনীতে প্রদাহ।
  • পিত্তাশয় অথবা অন্ত্রে সংক্রমণ।
  • ডায়ালিসিসের পর ফাঙ্গাল সংক্রমণ।
  • খাবার খাওয়ানোর জন্য টিউবের ব্যবহার।

এটি কিভাবে নির্ণয় এবং চিকিৎসা করা হয়?

যদি উপরে আলোচিত কোনও লক্ষণ আপনি দেখতে পান তাহলে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। রোগীর মেডিক্যাল হিস্ট্রির সঙ্গে ডায়াগ্নস্টিক মূল্যায়ন শুরু হয়। নীচে রোগ নির্ণয়ের পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করা হলো:

  • পেটের শারীরিক পরীক্ষা।
  • রক্ত পরীক্ষা।
  • পেরিটোনিয়ামে কোন ব্যাকটেরিয়া আক্রমণ করেছে তা জানতে রক্তের কালচার করা হয়।
  • পেটের তরলের বিশ্লেষণ।
  • যদি আপনার পেরিটোনিয়াল ডায়ালিসিস চলে তাহলে ডায়ালিসিস থেকে নির্গত পদার্থের বিশ্লেষণ।
  • আল্ট্রাসাউন্ড ইমেজিং।
  • পেরিটোনিয়ামে কোনও ছিদ্র আছে নাকি জানতে সিটি স্ক্যান এবং এক্স-রে করা হয়।
  • ল্যাপ্রোস্কপি- পেটের ভিতরে একটি ক্যামেরাযুক্ত টিউব ব্যবহার করে কারণের উৎস জানার চেষ্টা করা হয়।

পেরিটোনাইটিসের সত্বর চিকিৎসার প্রয়োজন নাহলে যদি সংক্রমণ ছড়িয়ে যায় তাহলে মাল্টিপেল অরগ্যান ফেলিওরের সম্ভাবনা থাকে। চিকিৎসা পদ্ধতি সম্পর্কে নীচে আলোচনা করা হলো:

  • ওষুধঃ অ্যান্টিবায়োটিক্স, অ্যান্টি-ফাঙ্গাল।
  • সংক্রামিত টিসু বাদ দিতে অস্ত্রোপচার করা হয়।
  • প্রদাহ এবং সংক্রমণ কমাতে ইন্ট্রা-অ্যাবডোমিনাল ল্যাভেজ দিয়ে পেটের ভিতরের অংশ পরিষ্কার করা হয়।
  • কোনও কোনও রোগীর ক্ষেত্রে রি-লাপ্রোটোমির (একটি খোলা অস্ত্রোপচার) প্রয়োজন হতে পারে, যেখানে অস্বাভাবিকত্ব সম্পর্কে জানতে নতুন করে পেটে কাটা হয়।

চিকিৎসা না করা হলে, পেরিটোনাইটিস ছড়িয়ে পড়তে পারে এবং সেপ্টিসেমিয়া (রক্তে সংক্রমণ ছড়িয়ে যাওয়া) এবং শক হতে পারে। এর জন্য পেট ফোলা বা টিস্যু মৃত্যু হতে পারে, যা প্রাণঘাতী হতে পারে। তাই পেরিটোনাইটিসের কোনও লক্ষণ বা উপসর্গকে এড়িয়ে যাওয়া উচিৎ নয় এবং আপনার চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিৎ।



তথ্যসূত্র

  1. OMICS International[Internet]; Peritonitis.
  2. Sujit M. Chakma et al. Spectrum of Perforation Peritonitis. J Clin Diagn Res. 2013 Nov; 7(11): 2518–2520. PMID: 24392388
  3. K Soares-Weiser. Antibiotic treatment for spontaneous bacterial peritonitis. BMJ. 2002 Jan 12; 324(7329): 100–102. PMID: 11786457
  4. R.J.E.Skipworth and K.C.H.Fearon. Acute abdomen: peritonitis. Surgery,March 2008, 26 (3); 98-101. Volume 26, Issue 3, Pages 98–101
  5. Carlos A Ordonez,Juan Carlos Puyana. Management of Peritonitis in the Critically Ill Patient. Surg Clin North Am. 2006 Dec; 86(6): 1323–1349. PMID: 17116451