বিশ্রামহীনতা বা অস্থিরতা কি?
একই জায়গায় থেকে একটি কাজ স্থিরভাবে ক্রমাগত না করতে পারার অক্ষমতাকে অস্থিরতা বলে। এটির বিশদ লক্ষণ ও উপসর্গগুলি বিভিন্ন ব্যক্তিদের মধ্যে বিস্তীর্ণভাবে ভিন্ন আকারে প্রকাশ পায়। এটি শারীরিক ও মানসিক উভয় ক্ষত্রেই প্রভাব ফেলে।
এর সাথে জড়িত প্রধান লক্ষণ ও উপসর্গগুলি কি কি?
- প্রধানত, অস্থিরতা অধিক কাজকর্ম করার মতো দেখায়। অর্থাৎ একজন ব্যক্তি একই স্থানে বেশিক্ষণ একনাগারে বসে থাকতে পারে না এবং বার বার স্থান পরিবর্তনের প্রয়োজন অনুভব করেন।
- এইধরনের অস্থির ব্যক্তিকে কোন দীর্ঘ সময়ের কথোপকথন বা কাজে জড়িত রাখা খুব কঠিন বিষয়।
- যে সকল ব্যক্তির মধ্যে অস্থিরতা আছে সেই ব্যক্তিরা বসে থাকার সময় পায়ে বেদনাদায়ক শির টেনে ধরা অনুভব করতে পারেন।
- হাত পায়ে ঝিনঝিন ধরা, অবশ ও কম্পনের মতো সংবেদনশীলতা ও আরও কিছু অন্যান্য লক্ষণ দেখা দিতে পারে।
- ঘুমের সময় বার বার উদ্বিগ্নতা ও বিভ্রান্তির জন্য, অস্থির ব্যক্তির ঘুমাতে সমস্যা হয়।
- গুরুতর ক্ষেত্রে, কেউ কেউ বুক ধরপরের সাথে অতিরিক্ত ঘেমে যাওয়া অনুভব করেন।
এর প্রধান কারণগুলি কি কি?
- সাধারণত বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অস্থিরতার কারণগুলি ওষুধের সাথে সম্পর্কিত। এটেনসন ডিফিকট হাইপারএকটিভিটি ডিসর্ডার (এডিএইচডি) ও অ্যাস্থমা ইত্যাদি রোগ ঘুমের ওষুধ ও বমি কমানোর ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার সাথে জড়িত।
- অস্থিরতার আরেকটি সাধারণ কারণ ক্যাফিনের আসক্তি বা এর অত্যধিক ব্যবহার, চা বা কফি মত উপাদানে প্রচুর মাত্রায় ক্যাফিন থাকে।
- স্ক্রিতজোফ্রেনিয়া, এডিএইচডি, স্মৃতিভ্রংশ ও উদবিগ্নতার মতো নিউরোলজিক্যাল অবস্থার সাথে অস্থিরতার বিষয় জড়িত।
- ব্যক্তির মধ্যে হাইপারথাইরয়েডিজম এর হরমোনাল অস্বাভাবিকতাও অস্থিরতা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ।
কিভাবে এটি নির্ণয় ও চিকিৎসা করা হয়?
- বিভিন্ন কারনের সাথে অস্থিরতা জড়িত। একজন বিশেষজ্ঞ পূর্ব চিকিৎসার তথ্য ও উপসর্গগুলির ওপর ভিত্তি করেই রোগটি নির্ণয় করেন।
- নির্ণয়ে পৌঁছানোর জন্য চিকিৎসকের কাছে আপনার জীবনধারা ও কি কি ওষুধ গ্রহণ করছেন বা কোন শারীরিক পরীক্ষা করেছেন কিনা সে সম্পর্কে জানানো অতি গুরুত্বপূর্ণ।
- ফার্মাসোলজিক্যাল ম্যানেজমেন্টের পরিবর্তে, তুলনামূলক ভাবে জীবনশৈলী ও অভ্যাস পরিবর্তনের মাধ্যমেও অস্থিরতার চিকিৎসা করা সম্ভব।
- চিকিৎসক আপনাকে সামঞ্জস্যপূর্ণ ঘুমের সময়সূচি বজায় রাখতে এবং রাতে পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে পরামর্শ দেবেন।
- অস্থিরতার উন্নতিসাধনে চিকিৎসক আপনাকে ক্যাফেন স্বল্প পরিমানে গ্রহণের পরামর্শ দেবেন।
- যদি ওষুধের কারণে এই অবস্থা সৃষ্টি হয় তবে ওষুধের ডোজ বন্ধ বা সংশোধন করার আগে আপনার চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি শরীরের ওপর অকল্পনীয় পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ঘটাতে পারে।
- এডিএইচডি ও স্ক্রিতজোফ্রেনিয়ার মতো স্বাস্থ্য পরিস্থিতির ক্ষেত্রে উপযুক্ত ঘুমের ওষুধ বা নিদ্রা আকর্ষণকারী ওষুধ দেওয়া হতে পারে।