বাত রোগ (রিউমেটিক ডিসঅর্ডার) কি?
বাত রোগ (রিউমেটিক ডিসঅর্ডার) হল একাধিক সমস্যার সমষ্টি যা হাড়ের সন্ধিস্থল এবং সংযোজক কলা বা ট্যিসুকে আক্রান্ত করে। এর কারণে হাড়ের সন্ধিস্থলে ব্যথা, ফোলাভাব এবং কঠিনতা দেখা যায়।কিছু রিউমেটিক ডিসঅর্ডারে এছাড়াও অন্যান্য অঙ্গ যেমন টেন্ডন বা পেশিবন্ধ, লিগামেন্ট বা অস্থিবন্ধনী, পেশী এবং শরীরের অভ্যন্তরীণ অঙ্গগুলিকে আক্রান্ত করে। অটোইমিউন রোগ যেমন সোরিয়্যাটিক আর্থারাইটিস এবং লুপাস রিউমেটিক ডিসঅর্ডারের অন্তর্গত।
এর প্রধান লক্ষণ এবং উপসর্গগুলি কি কি?
রিউমেটিক ডিসঅর্ডারের প্রধান লক্ষণ এবং উপসর্গগুলি এই রোগের উপর নির্ভর করে। নীচে উল্লেখিত লক্ষণ এবং উপসর্গগুলির তালিকা সাধারণত সর্বাধিক ঘটতে থাকা বাত রোগে (রিউমেটিক ডিসঅর্ডার) দেখা যায়:
লুপাস
- মাথাব্যথা।
- বুকে ব্যথা।
- জ্বর।
- আলোর প্রতি ত্বকের সংবেদনশীলতা।
- হাড়ের সন্ধিস্থলে ফোলাভাব।
- মুখে ক্ষত বা ঘা এবং নাকে ক্ষত বা ঘা।
- চুল উঠে যাওয়া।
- চোখের চারপাশে এবং পায়ে, পায়ের পাতায় এবং হাতে ফোলাভাব।
- নাকের হাড়ে এবং গালে র্যাশ বা ফুসকুড়ি।
রিউমেটয়েড আর্থারাইটিস
- ক্ষুধামান্দ্য।
- হালকা জ্বর।
- হাড়ের সন্ধিস্থলে প্রদাহ।
- অবসাদ।
- হাড়ের সন্ধিস্থলে ব্যথা।
- চলাফেরায় সমস্যা।
স্কেলেরোডারমা
- ত্বকে অস্বাভাবিকতা।
- সকালবেলায় আড়ষ্ঠতা অনুভব করা।
- ত্বকে হলদেটে বা শুষ্ক দাগ বা প্যাচ।
- টানটান, উজ্জ্বল ত্বক।
- আক্রান্ত স্থানে চুল উঠে যাওয়া।
- শরীরের ওজন হ্রাস পাওয়া।
- হাড়ের সন্ধিস্থলে ব্যথা।
সিওগ্রেনের উপসর্গগুলি
এর প্রধান কারণগুলি কি কি?
রিউমেটিক ডিসঅর্ডার বা বাত রোগের প্রধান কারণ এবং ঝুঁকিপূর্ণ দিকগুলি হল:
- মানসিক আঘাত।
- সংক্রমণ।
- বিপাকক্রিয়াতে সমস্যা।
- নির্দিষ্ট কিছু হরমোনের কারণে।
- স্নায়ুতন্ত্রে সমস্যা।
- হাড়ের সন্ধিস্থলে প্রদাহ।
- যে কলা বা ট্যিসু দিয়ে অস্থির শেষভাগ ঢাকা থাকে তার ক্ষতি।
- জিনগত কারণ।
- জাতিগত কারণ।
- রোগ প্রতিরোধকারী কোষ নিরূপণ করতে সমস্যা।
- পরিবেশ দূষণকারী বস্তু।
- স্ত্রীলিঙ্গ।
- বয়স।
এটি কিভাবে নির্ণয় করা হয় এবং এর চিকিৎসা কি?
ডাক্তার আক্রান্ত ব্যক্তির শারীরিক পরীক্ষা করেন এবং চিকিৎসাগত ইতিহাস জেনে নেওয়ার মধ্যে দিয়ে উপসর্গগুলির কারণ খুঁজে বের করেন এবং রোগ সনাক্ত করেন। রক্ত পরীক্ষা এবং আক্রান্ত হাড়ের সন্ধিস্থল থেকে তরল নিয়ে তার পরীক্ষা করা হয় নির্দিষ্ট অ্যান্টিবডি যেমন অ্যান্টি-ডিএনএ, অ্যান্টি-আরএনএ এবং অ্যান্টি- নিউট্রোফিলিক অ্যান্টিবডির যেমন মতো নির্দিষ্ট অ্যান্টিবডির উপস্থিতি জানার জন্য। অস্থির পরিবর্তনগুলিতে নজর রাখার জন্য, ডাক্তার এক্স-রে এবং এমআরআই স্ক্যানের পরামর্শ দিতে পারেন।
রিউমেটিক ডিসঅর্ডার বা বাত রোগে ব্যবহৃত চিকিৎসা পদ্ধতিগুলি হল :
- শারীরিক চিকিৎসা।
- কর্টিকোস্টেরয়েড এবং ননস্টেরয়ডিয়ালের মতো প্রদাহনাশক ওষুধ (এনএনএআইডি) প্রদাহ কমাতে ব্যবহার করা হয়।
- যোগাসন।
- অস্ত্রোপচার।
- অ্যান্টি-রিউমেটিক ওষুধ (ডিএমএআরডি) রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে ব্যবহার করা হয়।
- ব্যায়ামের নিয়মসূচির সংশোধন।
- ব্যাথা উপসমকারী ওষুধ।