স্কেবিস কাকে বলে?
স্কেবিস হল ক্ষুদ্র ইচ মাইট (আটপাযুক্ত পোকা) দ্বারা সংঘটিত অত্যন্ত সংক্রামক একটি অসুখ। এই পরজীবীগুলিকে (মাইট) খালি চোখে দেখা যায়না, কিন্তু মানুষের ত্বককে এরা প্রজনন ক্ষেত্র হিসাবে ব্যবহার করে। যখন এই পোকাগুলি ত্বকের নিচে প্রবেশ করে ডিম পাড়ে, তখন অনাক্রম্য তন্ত্রের প্রতিক্রিয়ার ফলে তীব্র চুলকানির সৃষ্টি হয়, যা সাধারণত রাতে বৃদ্ধি পায়। শিশু ও বয়স্কদের উপর এদের আক্রমণের প্রবণতা তুলনায় বেশি। উষ্ণ আবহাওয়ার জন্যও এই অবস্থার বৃদ্ধি পায়। ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণের ফলে এটি আরো জটিল চেহারা নিতে পারে, এর থেকে ত্বকে ক্ষতের সৃষ্টি, হার্টের রোগ, সেপ্টিসেমিয়া (রক্তে ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণের প্রবেশ), এমনকি কিডনির সমস্যা পর্যন্ত হতে পারে।
যথাযথ চিকিৎসা করা হলে এই ইচ মাইটগুলির মৃত্যু হয় এবং সংক্রমণ সেরে যায়। কিন্তু চিকিৎসা না করলে এই পোকাগুলি অনায়াসে আরো বংশবিস্তার করে এবং সমস্যার বৃদ্ধি ঘটায়।
এর প্রধান লক্ষণ ও উপসর্গগুলি কি?
এই সমস্যাটির উপসর্গগুলি হল:
- একটানা চুলকানি।
- ত্বকে ফুসকুড়ি ওঠা বা ত্বক আঁশের মত হয়ে যাওয়া।
- ত্বকে ক্ষতের সৃষ্টি।
দেহের যে কোন অংশের ত্বকে এই সমস্যাটির সৃষ্টি হতে পারে; তবে নিচে উল্লিখিত অংশগুলিতে এর প্রভাব সবথেকে বেশি দেখতে পাওয়া যায়:
- হাতে, বিশেষত নখের চারপাশে ও আঙুলের ফাঁকে।
- বগল, কনুই এবং কব্জিতে।
- স্তনবৃন্তে।
- কুঁচকিতে।
স্কেবিসের ইনকিউবেশন পিরিয়ড (উন্মেষ পর্ব) হল 8 সপ্তাহ।
এর প্রধান কারণগুলি কি?
ইচ মাইট একজন মানুষ থেকে অন্যজনের মধ্যে স্থানান্তরিত হতে পারে, এটি হতে পারে সরাসরি ত্বকের সংস্পর্শের মাধ্যমে, অথবা অন্যের বিছানা, কাপড় বা আসবাবপত্র ব্যবহারের মাধ্যমে। একইভাবে, এই পোকাগুলি মার থেকে সদ্যোজাতের শরীরে যেতে পারে। কোন গ্রাহক ছাড়া এই পোকা 3-4 দিন অবধি বেঁচে থাকে।
কিভাবে এটির নির্ণয় করা হবে এবং এর চিকিৎসা কি?
দীর্ঘস্থায়ী চুলকানি এবং বুক ও যৌনাঙ্গের আশেপাশে স্কেবিস নডিউল দেখে এই সমস্যাটি নির্ণয় করা হয়। এরপর ত্বকের চেঁছে নেওয়া অংশ মাইক্রোস্কোপের তলায় পর্যবেক্ষণ এই নির্ণয়করণ নিশ্চিত করতে সাহায্য করে।
প্রয়োজন অনুযায়ী যথাযথ ক্রিম, লোশন ও ট্যাবলেট ব্যবহারের মাধ্যমে স্কেবিসের জটিলতা এড়ানো সম্ভব। চিকিৎসক ঘাড়ের নিচ থেকে দেহে অবস্থিত সংক্রমণে প্রয়োগের জন্য উপযুক্ত লোশন ও ক্রিমের নির্দেশ দেবেন।
সংক্রমিত ব্যক্তির পরিবারের অন্যান্য সদস্য ও যৌনসঙ্গীর জন্যও একই চিকিৎসার পরামর্শ দেওয়া হয়। চিকিৎসা বন্ধ করে দেওয়ার পর আবার চুলকানি বা ফুসকুড়ি দেখা দিলে পুনরায় চিকিৎসা শুরু করার দরকার হতে পারে।
এই সম্পর্কে কয়েকটি সাবধানতা অবলম্বন করা যেতে পারে:
- পরিষ্কার বিছানা ও কাপড়ের ব্যবহার।
- 50 সেলসিয়াস বা তার বেশি তাপমাত্রায় কাপড় ধোয়া।