টনসিলাইটিস কি?
টনসিলাইটিস বলতে টনসিল (গলার পিছনে দুইপাশে অবস্থিত গ্রন্থি)-এর সংক্রমণকে বোঝায়। টনসিল লসিকা প্রণালীর অঙ্গ, যা আমাদের শরীরে রোগপ্রতিরোধক ব্যবস্থা বজায় থাকার জন্য দায়ী। এই গ্রন্থির প্রদাহ থেকে টনসিলাইটিসের উপসর্গ দেখা দেয়। শিশুদের মধ্যে এই সংক্রমণ সাধারণ ব্যাপার এবং প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যেও দেখা যায়।
এর প্রধান লক্ষণ এবং উপসর্গগুলি কি কি?
টনসিলাইটের উপসর্গ নিম্নরূপ হতে পারে:
- গলায় খসখসেভাব।
- গলায় ব্যথা।
- খাবার গেলার সময় ব্যথা।
- জ্বর।
- টনসিল ফুলে ওঠা।
- মুখে দুর্গন্ধ।
- টনসিলে হলুদ অথবা সাদা স্তর পড়া।
- মাথাব্যথা।
উপসর্গগুলি প্রায়শই যন্ত্রণাদায়ক হয় এবং এর ফলে প্রচণ্ড অস্বস্তি হতে পারে। অল্পবয়সী বাচ্চাদের এরসঙ্গে বমি বমি ভাব এবং পেটব্যথা অনুভব হতে পারে।
এর প্রধান কারণগুলি কি কি?
টনসিলাইটিস ভাইরাস অথবা ব্যক্টেরিয়া ঘটিত সংক্রমণ এবং প্রায়শই তারসঙ্গে সর্দি লাগে। সেজন্য, নাক দিয়ে জল পড়া, কাশি ও জ্বরের মতো সামান্য সর্দি লাগার লক্ষণ ধীরে ধীরে টনসিলাইসের উপসর্গে রূপ নিতে পারে, যেহেতু উপসর্গগুলি গুরুতর আকার নেয়।
এটি কিভাবে নির্ণয় এবং চিকিৎসা করা হয়?
টনসিলাইটিসের বিরুদ্ধে টীকাকরণ সম্ভব নয় এবং সেজন্য একে সহজে প্রতিরোধ করা যায় না। কোনও ব্যক্তি হয়তো তার জীবদ্দশায় টনসিলাইটিসে একাধিকবার ভুগতে পারেন।
উপসর্গের পরীক্ষা এবং জীবাণু চিহ্নিত করার জন্য গলার স্রাবের নমুনা পরীক্ষাগারে বিশ্লেষণের মাধ্যমে টনসিলাইটিস নির্ণয় করা যেতে পারে।
ব্যাক্টেরিয়ার কারণে যদি টনসিলাইটিস হয়, তাহলে অ্যান্টিবায়টিক গ্রহণ চিকিৎসার সবচেয়ে কার্যকরী উপায়। তবে, ভাইরাসের কারণে টনসিলাইটিস হলে, কারণ নির্মূলে ওষুধ কাজে লাগে না। উপসর্গ কমানে নিম্নলিখিত উপায় অবলম্বন করা যেতে পারে:
- জ্বর কমাতে প্যারাসিটামল নেওয়া।
- বেশি করে আরাম করা।
- প্রচুর পরিমাণে তরল পান।
- নরম খাবার খাওয়া।
- নুন জল দিয়ে গার্গেল করা।
- বেদনানাশক ওষুধ ব্যবহার (কেবলমাত্র ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়ার পরই)।