ভেরিকোজ ভেইনস কি?
ভেরিকোজ ভেইনস হল সেইসমস্ত শিরা যেগুলো রক্ত টানার সময় ফুলে যায় ও বড় হয়ে যায়। এগুলোকে চামড়ার নিচে খালি চোখেও দেখা যায়; এরা প্যাঁচানো অবস্থায় থাকে, ফোলা নীল রংএর বা গাঢ় বেগুনি রংএর। সাধারনত এগুলো পায়ে দেখা যায় কিন্তু এগুলো শরীরের অন্যান্য অংশেও দেখা যেতে পারে।
এর প্রধান লক্ষণ ও উপসর্গগুলো কি কি?
বেশীরভাগ রোগীর ক্ষেত্রে ভেরিকোজ ভেইনস দীর্ঘ সময়ের জন্য কোনো উপসর্গহীন থাকে। এই অবস্থার সাধারণ উপসর্গ হলো:
- পায়ে ব্যথা।
- পায়ে ফোলা।
- পায়ে বা কাভসে খিঁচুনি।
- থাই ও কাভসে মাকড়সার মতোন সবুজ শিরার উপস্থিতি।
- ভেরিকোজ ভেইনস এর জায়গায় চুলকানি।
- শুকনো, আঁশের মত, অস্বস্তিকর ত্বক।
- ত্বকে ক্ষত যেটা তাড়াতাড়ি ঠিক হয় না।
এর প্রধান কারণগুলো কি কি?
শিরার দেয়ালের ও ভালভের দূর্বলতার জন্য, শিরা থেকে রক্ত টানলে এগুলো ফুলে যায়, পেঁচিয়ে যায় এবং গুটিয়ে থাকে, যেমন ভেরিকোজড। সাধারণত, ভাল্ভ মাধ্যাকর্ষণের বিপরীতে রক্তকে উপরে ঠেলে দেয় কিন্তু যখন এগুলো দূর্বল হয়, তখন শিরার মধ্যে রক্ত একজায়গায় জমা হয় এবং ভেরিকোজ ভেইনসের সৃষ্টি করে।
যে সমস্ত কারণে এটা হয়:
- অনেকক্ষন ধরে দাঁড়িয়ে থাকা উদাহারনস্বরূপ, পেন্টার্স, বাস বা ট্রেনের সহায়ক, শিক্ষক, ইত্যাদি।
- স্ত্রী লিঙ্গ।
- গর্ভাবস্থা।
- বেশীই ওজন।
- বৃদ্ধ বয়স।
- পরিবারে কারোর ভেরিকোজ ভেইনস আছে।
- বিরল কোনো দশা যেমন, পেলভিসে টিউমার, শিরাতে রক্ত জমাট বেঁধে থাকা।
এটা কিভাবে নির্ণয় ও চিকিৎসা করা হয়?
চিকিৎসকরা পায়ের পরীক্ষা করান কোনো পরিবর্তন ঘটেছে কিনা দেখার জন্য।
- ত্বকের রং।
- পায়ে ঘা সেরে গেছে বা সারে নি।
- ত্বক গরম হয়ে যাওয়া।
- লালভাব।
শিরার মধ্যে রক্তচলাচল লক্ষ করার জন্য, ও কোনো রক্ত জমাট বেঁধে আছে কিনা দেখার জন্য ডপলার আল্ট্রাসাউন্ড স্ক্যান করার পরামর্শ দেওয়া হয়। খুব প্রচলিত না, কিন্তু কোনো কোনো ক্ষেত্রে নির্ণয় পুষ্টি করার জন্য অ্যান্জিওগ্রাম করার পরামর্শও দেওয়া হয়।
চিকিৎসাতে নিম্নলিখিত পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়:
- কম্প্রেসন স্টকিংস - এটা ফোলা কমাতে সাহায্য করে এবং পায়ে মৃদু চাপসৃষ্টি করে, যেটা রক্তকে ধাক্কা দিয়ে হৃদয়ের কাছে পৌঁছে দেয় এবং রক্তের টান কম করে দেয়।
- অ্যাবলেসন থেরাপী- ভেরিকোজ ভেইনস নষ্ট করার জন্য রেডিওফ্রিকোয়েন্সি অ্যাবলেশন, লেসার অ্যাবলেসন।
- স্ক্লেরোথেরাপি- যেখানে কোনো এজেন্ট ইন্জেক্ট করে ঢোকানো হয় শিরায় রক্ত সরবরাহ বন্ধ করতে।
- স্ক্লেরোথেরাপি (ফ্লেবেক্টমি)- ক্ষতিগ্রস্ত শিরা বাদ দিয়ে দেওয়া কারণ পাশে সমান্তরাল শিরা আছে রক্ত সরবরাহের জন্য।
- প্রচন্ড গুরুতর অবস্থায় লাইগেশন ও ক্ষতিগ্রস্ত শিরা বাদ দিয়ে দেওয়া।
নিজে কিভাবে যত্ন নেবেন
- বেশীক্ষন দাঁড়াবেন না।
- দিনে অন্তত 3-4 বার 15 মিনিট পা উপরে করে রাখবেন।
- শরীরের নিম্নভাগে চাপ কমাতে ওজন কমান।
- রক্ত সরবরাহের উন্নতির জন্য শারীরিক ব্যায়াম করুন। এই অবস্থায় হাঁটা বা সাঁতার কাটা খুবই ভাল।
- কোনো খোলা ঘা বা ক্ষতের যত্ন নিন।
- পায়ে আর্দ্রতা বজায় রাখুন এবং ত্বককে শুকনো হয়ে যেতে বা ফেটে যেতে দেবেন না।