দুর্বলতা কি?
শরীরের এক বা একাধিক মাংসপেশীর কর্মক্ষমতা হ্রাস পাওয়াকে দুর্বলতা বলে। কিছু ব্যক্তি শুধুমাত্র দুর্বল লাগার অনুভূতি উপলব্ধি করেন, কিন্তু শারীরিকভাবে কোনওরকম শক্তিক্ষয় উপলব্ধি করেন না, উদাহরণ হিসেবে, ব্যথার জন্য দুর্বলতা বোধ হওয়ার কথা বলা যেতে পারে। আবার কিছু মানুষ কর্মক্ষমতা হ্রাসের ব্যাপারটি শুধুমাত্র শারীরিক পরীক্ষার সময় বুঝতে পারেন, একে “অবজেক্টিভ উইকনেস” বলে।
এর প্রধান লক্ষণ ও উপসর্গগুলি কি কি?
দুর্বলতার সঙ্গে যুক্ত লক্ষণ ও উপসর্গগুলি হল:
- অসাড়ভাব।
- প্রচণ্ড মাথাযন্ত্রণা।
- বিভ্রান্তিবোধ।
- হাঁটতে সমস্যা।
- ক্লান্তি।
- মাংসপেশীতে ব্যথা অনুভব করা অথবা ব্যথাভাব।
- তন্দ্রালুভাব।
- মাথা ঘোরা।
- খিদে কমে যাওয়া।
- শ্বাস নিতে সমস্যা।
এর প্রধান কারণগুলি কি কি?
শারীরিক দুর্বলতার অন্তর্নিহিত কারণ হল নির্দিষ্ট স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যা যেমন:
- শরীরে সোডিয়াম ও পটাশিয়ামের মাত্রাল্পতা।
- শ্বাসযন্ত্র অথবা মূত্রলানীর সংক্রমণ।
- থাইরয়েড হরমোনের স্বল্প বা উচ্চমাত্রা।
- গুলেন-বার সিন্ড্রোম।
- মাইস্টিনিয়া গ্রাভিস (একটি দীর্ঘস্থায়ী রোগ, যা মাংসপেশীকে দু্র্বল করে দেয়)।
- স্ট্রোক।
- অসুস্থ থাকার কারণে অক্ষমতা, বিশেষত বয়ষ্ক ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে।
- ইন্টেনসিভ কেয়ার ইউনিট (আইসিইউ) মায়োপ্যাথি (আইসিইউতে লম্বা সময় থাকার কারণে মাংসপেশীর ক্ষয়)।
- মাস্কুলার ডিস্ট্রফি, হাইপোক্যালিমিয়া (পটাশিয়ামের মাত্রাপ্লতা) এবং অ্যালকোহলিক মায়োপ্যাথির মতো সাধারণ মায়োপ্যাথি (মাংসপেশীর টিস্যু বা শরীরকলার রোগ)।
- পোলিও।
- দৈহিক পরিশ্রম।
- কম ঘুম হওয়া।
- অনিয়মিত ব্যায়াম।
- জ্বরের মতো অসুখে ভোগা।
- অসম্পূর্ণ পুষ্টি।
এটি কিভাবে নির্ণয় করা হয় এবং এর চিকিৎসা কি?
নিম্নলিখিত পদ্ধতিগুলি দুর্বলতা নির্ণয়ে ব্যবহৃত হয়:
- শারীরিক পরীক্ষা: চলন ক্ষমতা, তৎপরতা এবং করোটির স্নায়ুর কার্যকারিতা পরীক্ষা করা হয়।
- কর্মক্ষমতা পরীক্ষা: দুর্বলতার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ, পেশীর দৃশ্যমান সঙ্কোচন, মাধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রতিকূলে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সঞ্চালন, প্রতিবর্তী ক্রিয়া এবং অনুভূতির মতো পরিমাপকগুলি দ্বারা পরীক্ষা করা হয়।
- হাঁটাচলার ভঙ্গিমা পর্যবেক্ষণ করা হয়।
- দুর্বলতার কারণ অনুসন্ধানে চিকিৎসাজনিত ইতিহাস যাচাই করা হয়।
দুর্বলতার অন্তর্নিহিত কারণের চিকিৎসা প্রদানের মাধ্যমে দুর্বলতার চিকিৎসা করা হয়। গুরুতর দুর্বলতা সমস্যায় ভোগা মানুষদের প্রয়োজন পড়লে হাসপাতালে ভর্তি করার পরামর্শ দেওয়া হয়। মাংসপেশীর কার্যক্ষমতার ক্ষয় কমাতে রোগীদের সাহায্যার্থে অকুপেশনাল থেরাপি এবং ফিজিক্যাল থেরাপি করানোরও পরামর্শ দেওয়া হয়।