গিলয় (গুলঞ্চ) বা টিনোস্পোরা হচ্ছে একটি পর্ণমোচী উদ্ভিদ যা ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে বহুলভাবে জন্মায়। প্রশমণের গুণ এবং স্বাস্থ্যকর উপাদানের জন্য আয়ুর্বেদিক এবং ঘরোয়া চিকিৎসায় এটির কদর অসামান্য। বস্তুত, স্বাস্থ্যের সার্বিক উপকারিতার ক্ষেত্রে এর কার্যকারিতার জন্য আয়ুর্বেদে এটিকে ‘‘রসায়ন’’ নামে অভিহিত করা হয়। শুনলে আপনি আগ্রহী হয়ে উঠবেন যে সংস্কৃতে এটিকে ‘‘অমৃত’’ বলা হয়েছে, যার অর্থ ‘‘অমরত্বসুধা’’। এই উদ্ভিদের অসাধারণ গুণের দিকে তাকিয়ে আমার মনে হয়, পুরাণে ‘‘দেবতারা’’ যা পান করে চিরকালীন যৌবন এবং স্বাস্থ্যের অধিকারী হতেন বলে বর্ণিত আছে, তা হয়তো ছিল এই গুলঞ্চ বা গিলয়।
গুলঞ্চ হচ্ছে একটি লতানে উদ্ভিদ, যার কাণ্ড দুর্বল এবং রসালো। কাণ্ডের রং হচ্ছে সাদা থেকে ধূসর এবং তা 1-5 সেমি পর্যন্ত মোটা হতে পারে। গুলঞ্চের পাতা দেখতে হৃদয়ের (হার্ট) আকারের এবং তাতে মেমব্রেন (ঝিল্লি) আছে। তাতে গ্রীষ্মকালে সবজেটে-হলুদ রঙের ফুল ফোটে আর গুলঞ্চের ফল সাধারণত শীতকালে দেখা যায়। গুলঞ্চের সবুজ রঙের আঁটিযুক্ত ফল (ড্রুপ) হয়ে থাকে যা পাকলে লাল বর্ণ ধারণ করে। গুলঞ্চের কাণ্ডেই অধিকাংশ নিরাময়যোগ্য গুণ আছে, তবে পাতা, ফল, এবং শিকড় বা মূলেও অল্পবিস্তর গুণ আছে।
গুলঞ্চের কিছু প্রাথমিক তথ্য:
- বৈজ্ঞানিক নাম: টিনোস্পোরা কর্ডিফোলিয়া
- পরিবার: মেনিসপার্মেসিয়া
- সাধারণ নাম: গিলয়, গুড়ুচি, গুলবেল, হার্ট-লিভড মুনসিড, টিনোস্পোরা
- সংস্কৃত নাম :: অমৃত, তন্ত্রিকা, কুণ্ডলিনী, চক্রলক্ষ্মীণি
- ব্যবহৃত অংশ: কাণ্ড, পাতা
- আদিতে কোথায় উদ্ভূত এবং ভৌগৌলিক বণ্টন: আদিতে ভারতীয় উপমহাদেশে পাওয়া যেত গুলঞ্চ লতা কিন্তি চিনেও পাওয়া যায়।
- বলকারী: উষ্ণ