সয়বিন বা সয়াবিন হল একটা ভোজ্য বীজ যা শুঁটি জাতির অন্তর্গত। সয়াবিন গাছে এগুলো উৎপন্ন হয় যার ক্ষুদ্র আবরণ (খোসা) আছে যার মধ্যে এই বীজগুলো থাকে। এই বীজগুলো আকারে গোলাকার এবং যখন কাঁচা থাকে সেগুলোর রং সবুজ এবং যখন সেগুলো শুকোয় হলুদ এবং বাদামী রঙে পরিবর্তিত হয়।
সয়াবিন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, বিশেষতঃ চীনে উদ্ভূত হয়েছে বলে মনে করা হয়। এটা তারপর ধীরে ধীরে জাপান এবং বিশ্বের অন্যান্য প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে। বর্তমানে, সয়াবিন সব জায়গায় চাষ করা হচ্ছে। ইউনাইটেড স্টেটস বিশ্বে শীর্ষস্থানীয় সয়াবিন উৎপাদক দেশ। এরপর ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা এবং চীনের স্থান। ভারতে, বৃহত্তম সয়াবিন উৎপাদক রাজ্যগুলি হল মধ্য প্রদেশ, মহারাষ্ট্র এবং রাজস্থান।
সয়াবিন নানা রকমের সয়া-ভিত্তিক খাবার যেমন সয়া দুধ এবং টোফু তৈরি করার জন্য ব্যবহৃত হয়। এটা বিভিন্ন মাংস এবং দুগ্ধজাত দ্রব্যের পরিবর্ত হিসাবেও ব্যবহৃত হয়। এশিয়ার দেশগুলিতে, গাঁজানো খাবারগুলির প্রধান উপাদান হিসাবে সয়া ব্যবহৃত হয় যেমন সয়া সস, টেম্পে, গাঁজানো বিনের মণ্ড, এবং মিসো। সয়াবিন তেল নিষ্কাশন করার জন্যও সয়াবিন ব্যবহার করা যেতে পারে। একবার, সয়াবিন তেল যদি নিষ্কাশিত হয়, অবশিষ্ট অংশ যাকে সয়াবিন খাবার বলা হয়, অত্যন্ত প্রোটিন সমৃদ্ধ, সয়া প্রোটিন উৎপাদন করতে অথবা পশুদের একটা খাবার হিসাবে ব্যবহৃত হতে পারে।
সয়াবিন বিভিন্ন ভিটামিন, খনিজ এবং প্রোটিনে অতিশয় পুষ্টিকর। এগুলো ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে, ওজন কমাতে এবং হৃৎপিণ্ডের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করতে পারে। সয়াবিন ঘুমের গোলমাল রোধ করতে এবং হজমশক্তি উন্নত করতেও ব্যবহৃত হতে পারে। সয়াবিন আরাঁধা অবস্থায় খেলে বিষাক্ত হয়। অতএব খাবার আগে এটা অবশ্যই যথাযথভাবে রান্না করতে হবে।
সয়াবিন সম্পর্কে কয়েকটি মৌলিক তথ্য
- উদ্ভিদবিজ্ঞানসম্মত নাম: গ্লাইসিন ম্যাক্স
- জাতি: ফ্যাবেশি
- প্রচলিত নাম: সয়াবিন, সয়া
- সংস্কৃত নাম: সোয়ামাষ (সয়ামাসা)
- ব্যবহৃত অংশ: সয়াবিনের বাইরের খোল ভক্ষণীয় নয়, সুতরাং ভিতরের বিনগুলি পাওয়ার জন্য সেগুলোর খোল ছাড়ানো হয়।
- দেশীয় অঞ্চল এবং ভৌগোলিক বিস্তৃতি: সয়াবিন হচ্ছে ভারতে দ্রুততম ফলনশালী শস্যগুলির অন্যতম এবং একটা খরিফ শস্য হিসাবে ফলানো হয়। ভারতে ভূপাল হচ্ছে সয়াবিনের বৃহত্তম উৎপাদক।
- কৌতূহলোদ্দীপক তথ্য: গৃহযুদ্ধের সময়, কফি বীজের পরিবর্তে মানুষ সয়াবিন ব্যবহার করত, যেহেতু সেগুলো দুষ্প্রাপ্য ছিল।