ডিপথেরিয়া কি?
ডিপথেরিয়া একটি ব্যাকটেরিয়া সংক্রামিত রোগ, যা করিনেব্যাকটেরিয়াম ডিপথেরিয়ার কারণে হয়ে থাকে। ডিপথেরিয়া সাধারণত শীতকালে হয় এবং এটি 1-5 বছরের বাচ্চাদের বেশি প্রভাবিত করে। এই সংক্রমণের ফলে গলার পিছন দিকটি পুরু আস্তরন দ্বারা ঢেকে যায় যার ফলে খাবার খেতে বা গিলতে খুব সমস্যা হয়। যদিও ব্যাকটেরিয়াটি বিশেষত নাক ও গলায় প্রভাব ফেলে, তবে কিছু ক্ষেত্রে এটি ত্বকেও সংক্রমণ ঘটাতে পারে।
এর প্রধান লক্ষণ ও উপসর্গগুলি কি কি?
সাধারণত উপসর্গগুলি ব্যকটেরিয়াল সংক্রমণের 1 থেকে 7 দিনের মধ্যেই দেখা দিতে পারে। ডিপথেরিয়ায় যে সাধারণ উপসর্গগুলি লক্ষ করা যায় সেগুলি হলো:
- জ্বর।
- ঠাণ্ডা লাগা।
- খুব বেশিদিন ধরে কাশি থাকা।
- মুখ দিয়ে লালা বের হওয়া।
- গলায় ব্যথা হওয়া।
- খাবার গিলতে অসুবিধা হওয়া।
- নাক দিয়ে রক্তপাত বা জল ঝরা।
- ত্বকে ক্ষত সৃষ্টি বা কালশিটে পড়া।
এর প্রধান কারণ কি কি?
যেহেতু রোগটি ব্যাকটেরিয়ার কারণে সৃষ্ট, তাই সংক্রামিত ব্যক্তির কাশি বা হাঁচির মাধ্যমে শ্বাসযন্ত্রে ছড়িয়ে পরে। যেহেতু ব্যাকটেরিয়াটি শ্বাসযন্ত্রের মধ্যে প্রবেশ করে তাই, এটা সাধারণত গলায় ও নাকে উপসর্গগুলির প্রকাশ ঘটায়।
ব্যাকটেরিয়াটি ত্বকে ঘা বা ফমিটস এর মাধ্যমেও ছরিয়ে পরতে পারে (বস্তুত সংক্রামিত ব্যক্তির মাটি ঘাটার ফলে মাটিতে ব্যাকটেরিয়ার প্রবেশ)।
কিভাবে এর নির্ণয় ও চিকিৎসা করা হয়?
ডিপথেরিয়া প্রাথমিকভাবে একটি শারীরিক পরীক্ষা দ্বারা নির্ণয় করা যেতে পারে, যা চিকিৎসককে গলার পিছনে মৃত টিস্যুর ও ধূসর বর্ণের আস্তরন পরীক্ষা করতে সাহায্য করবে। এছাড়াও অন্যান্য পরিক্ষাগুলি নিচে দেওয়া হল:
- সংক্রমণ পরীক্ষা করার জন্য গলনালির শ্লেষ্মার নমুনা সংগ্রহ।
- সিরোলোজিকাল পরীক্ষা এবং রক্ত পরীক্ষা যেমন সম্পূর্ণ রক্তের গণনা, ডিপথেরিয়ার অ্যান্টিবডি, ডিপথেরিয়া অ্যান্টিজেন ইত্যাদি।
সময়মত এই রোগটি নির্ণয় করা গুরুত্বপূর্ণ, তাই বেচে থাকা নিশ্চিত করতে দ্রুত প্রাথমিক চিকিৎসা করা জরুরী।
ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের ফলে টক্সিনের উৎপাদনকে বাধা দিতে ও ভবিষ্যতের ক্ষতি এড়াতে অ্যান্টি টক্সিনের ব্যবহার ডিপথেরিয়ার চিকিৎসার সাথে জড়িত।
যে ব্যাকটেরিয়ার কারণে রোগটি হয়েছে তাকে দমন বা নিস্ক্রিয় করতে অ্যান্টিবায়টিকের ব্যবহার করা হয়।
এই ওষুধগুলির ব্যবহারের সঙ্গে, অন্যান্য উপায় ব্যবহার করে অস্বস্তিগুলি কমাতে হবে, এগুলি হল:
- ফ্লুইডস বাই IV (শিরার মাধ্যমে প্রদান করা হয়)।
- বিছানায় বিশ্রাম গ্রহন করা।
- নিশ্বাস নিতে টিউবের ব্যবহার।
- বাতাস চলাচলের পথ পরিষ্কার করা।
সাধারণত চিকিৎসক যতক্ষণ পর্যন্ত নিশ্চিত হন যে ব্যক্তিটি আর সংক্রমণ ছড়াতে পারবে না ততক্ষণ ডিপথেরিয়ায় সংক্রামিত ব্যক্তিকে আলাদা রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়।