হেপাটাইটিস-এ কি?
হেপাটাইটিস-এ হলো একটি ভাইরাস ঘটিত সংক্রমণ, যার কারণে লিভার ফুলে ওঠে। এই রোগটি সাধারণত পাঁচ বছরের কম বয়েসের বাচ্চাদের মধ্যে দেখা যায় আর এই রোগের কোনও উপসর্গ দেখা দেয় না। যদিও, এই রোগের প্রবলতা বয়েসের সঙ্গে সঙ্গে বাড়ে। সাধারণত, এই সংক্রমণ খুব স্বল্প সময়ের জন্যই স্থায়ী হয় এবং খুব কম ক্ষেত্রেই মৃত্যু ঘটে।
এর প্রধান লক্ষণ ও উপসর্গ কি কি?
ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার 2 - 4 সপ্তাহের মধ্যেই সংক্রমণের লক্ষণগুলি দেখা দিতে শুরু করে।সাধারণত যে উপসর্গগুলি দেখা যায়:
- হলুদ রঙের প্রস্রাব
- চোখের সাদা অংশ হলদেটে হয়ে যাওয়া
- জ্বর
- দুর্বলতা
- পাতলা পায়খানা
- বমি বমি ভাব
- খিদে কমে যায় (আরও পড়ুন: ক্ষুধা হ্রাসের কারণ)
- গাঁটে ব্যথা
খুব কম ক্ষেত্রেই, এই রোগটি লিভারকে গুরুতরভাবে প্রভাবিত করে এবং বিকল হওয়াক কারণ ওঠে। (আরও পড়ুন: লিভার বিকলতার উপসর্গ)
এর মূল কারণ কি কি?
হেপাটাইটিস-এ সংক্রমণ মূলত হেপাটাইটিস-এ ভাইরাস (এইচএভি) নামক একটি ভাইরাসের করণে হয়। অসুখটি মূলত, এই ভাইরাস সম্বলতি মলের দ্বারা সংক্ৰমিত খাদ্য এবং জল গ্রহণ করলে ছড়িয়ে পড়ে।
এই সংক্রমণ এক ব্যক্তির থেকে অপর ব্যক্তির মধ্যে ছড়িয়ে যেতে পারে:
- অসুস্থ ব্যক্তির দ্বারা রান্না করা খাবার খেল।
- অবিশুদ্ধ জল পান করার কারণে।
- যৌন মিলন অথবা নিজ যত্ন সামগ্রীর মাধ্যমে সংক্রমিত ব্যক্তির সাথে ব্যক্তিগতভাবে সংস্পর্শে আসা।
কাশি, স্পর্শ, আলিঙ্গন ও স্তন্যপানের মাধ্যমে সংক্রমিত হওয়া সম্ভব নয়।
কিভাবে রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা করা হয়?
আপনি যে উপসর্গগুলি উপলব্ধি করছেন, শারীরিক পরীক্ষা এবং রক্ত পরীক্ষার ভিত্তিতে আপনার ডাক্তার হেপাটাইটিস-এ সংক্রমণ নির্ণয় করবেন। হেপাটাইটিস-এ ভাইরাসের বিরুদ্ধে মোকাবিলা করার জন্য শরীরের যে অ্যান্টিবডি তৈরি করেছে, রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে তা চিহ্নিত করা হয়। হেপাটাইটিস-এ সংক্রমণের কোনও নির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই, শুধুমাত্র উপসর্গগুলির তীব্রতার ভিত্তিতে চিকিৎসা করা হয়। সাধারণ চিকিৎসায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, পর্যাপ্ত পরিমাণ বিশ্রাম এবং ডায়রিয়া ও বমির ফলে শরীর থেকে যে তরল বেরিয়ে গিয়েছে, তার ভারসাম্য ফিরিয়ে আনতে প্রচুর পরিমাণে বিশুদ্ধ জল পান করা।
সংক্রমণের কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই আরোগ্য লাভ দেখা যাবে। সাধারণত, লিভার ফেইলিওরের ক্ষেত্রে হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেওয়া হয়।
আপনি নিজেকে এই রোগ থেকে সংক্ৰমিত হওয়ার থেকে বাঁচাতে পারেন:
- বিশুদ্ধ জল পান
- সঠিকভাবে পরিষ্কার ও রান্না করা খাবার গ্রহণ
- খোসা না ছাড়িয়ে সবজি এবং ফল খাওয়া এড়ানো
- সুঁচ কারওর সাথে ভাগাভাগি করে ব্যবহার করা এড়ানো
- সংক্ৰমিত ব্যক্তির সাথে যৌন মিলন এড়িয়ে চলা (আরও পড়ুন: নিরাপদ যৌন অনুশীলন)
- শৈশবেই হেপাটাইটিস-এ ভাইরাসের টীকা নেওয়া উচিত