কাওয়াসাকি ডিজিজ কাকে বলে?
বিশ্বজুড়ে হৃদরোগের একটি মুখ্য কারণ হল কাওয়াসাকি ডিজিজ। মূলত শিশুরা এই রোগে আক্রান্ত হয়, যাদের অধিকাংশের বয়স 5 বছরের নীচে। এর মধ্যে, 70 শতাংশ ঘটনা 3 বছর বা তার কম বয়সী শিশুদের মধ্যে ঘটে। তাড়াতাড়ি সনাক্ত করে চিকিৎসা করা হলে শিশুর বৃদ্ধিতে এই রোগটি কোন প্রভাব ফেলে না। যদিও এটি একটি ভয়ঙ্কর অবস্থা তবে এটি অত্যন্ত বিরল।
এটির প্রধান লক্ষণ এবং উপসর্গগুলি কি কি?
কাওয়াসাকি ডিজিজ লক্ষণ এবং উপসর্গগুলি একটি বৈশিষ্ট্যসূচক প্রস্তের সাথে উপস্থিত হয়:
- 5 দিন বা তার বেশি জ্বর থাকা।
- ফুস্কুড়ি।
- হাত এবং পা ফোলা।
- চোখের সাদা অংশে অস্বস্তি বা চুলকানি এবং লাল ভাব (আরো পড়ুন: লাল চোখের চিকিৎসা)।
- ঘাড়ের লসিকাগ্রন্থির ফুলে যাওয়া।
- মুখ, ঠোঁট ও গলায় অস্বস্তি এবং প্রদাহ।
চোখের সংক্রমণটি নন-পুরুলেন্ট (পূঁজহীন) এবং উভয় চোখে উপস্থিত হয়। প্রায় সবসময় নিচের এবং উপরের অঙ্গগুলির মধ্যে ফোলা ও ফুস্কুড়ি উপস্থিত হয়। সারা দেহের ধমনীতে প্রদাহ সৃষ্টি হয়।
হৃদযন্ত্রের করোনারি ধমনীর প্রদাহের ফলাফল বিপজ্জনক। ধমনীর ভিতরের মসৃণ পেশীগুলি এর ফলে দুর্বল হয়ে পড়তে পারে এবং তা রক্তবাহ ফুলিয়ে তুলতে পারে যাকে অ্যানিউরিজম বলা হয়। অ্যানিউরিজম ক্রমশ বাড়তে থাকলে তা একসময় ফেটে যেতে পারে।
এর প্রধান কারণগুলি কি কি?
কাওয়াসাকি ডিজিজের কোন পরিষ্কার কারণ জানা নেই। বিভিন্ন গবেষণা থেকে পাওয়া তথ্য বলে যে এটি একটি ভাইরাস দ্বারা সৃষ্ট রোগ হতে পারে। তাছাড়া, কিছু শিশুর এই রোগের প্রতি একটি জিনগত প্রবণতা থাকতে পারে।
এটি কিভাবে নির্ণয় এবং চিকিৎসা করা হয়?
কাওয়াসাকি ডিজিজ সনাক্তকরণের কোন নির্দিষ্ট পরীক্ষা নেই। সুতরাং, নির্ণয়টি বিশেষভাবে রোগশয্যা সম্পর্কিয় হয়, যা হল, অন্যান্য সকল সম্পর্কযুক্ত রোগগুলিকে বাদ দেওয়া। শরীরের রক্তবাহের উপর কাওয়াসাকি ডিজিজের প্রভাব পর্যবেক্ষণ করার জন্য ডাক্তার ইসিজি, এঞ্জিওগ্রাফি ইত্যাদি পরীক্ষা করতে পারেন। যদি হৃদযন্ত্রের ধমনীগুলির উপর এর কোন ক্ষতিকর প্রভাব দেখতে না পাওয়া যায় তবে বলা যায় যে শিশুটি সম্ভবত সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠবে। এটি 95 শতাংশ রোগীর ক্ষেত্রে ঘটে।
ব্যথা, জ্বর ও ফোলা উপশমের জন্য ওষুধের সাথে চিকিৎসা শুরু করা হয়। এটি অ্যাসপিরিনের সাথে নিরাপদে করা যেতে পারে, যা রক্তে জমাট বাঁধাও বন্ধ করতে পারে। এছাড়া প্রায় 12 ঘণ্টা ধরে ধমনীতে ইমিউনোগ্লোবিউলিন A সরবরাহ করা হয়। যেসব শিশুরা ভালোভাবে সাড়া দেয়না তাদের স্টেরয়েড দেওয়া হয়।