ক্লান্তি কি?
ক্লান্তিকে সবথেকে ভালো বর্ণনা করা যায় আলস্য ও অবসাদ হিসাবে। যাদের মধ্যে এই উপসর্গগুলো এবং নিদ্রালুভাব দেখতে পাওয়া যায় তাদেরকে ক্লান্তিগ্রস্ত বলা যায়। এই নিষ্ক্রিয়তা এবং আলস্য হতে পারে মানসিক অথবা শারীরিক, যা ঐ ব্যক্তির অন্তর্নিহিত শারীরিক বা মানসিক সমস্যার ইঙ্গিত হতে পারে।
এর প্রধান লক্ষণ এবং উপসর্গগুলো কি কি?
ক্লান্তিগ্রস্ত ব্যক্তি সাধারণত একটু অন্যমনস্ক থাকেন এবং খুব ধীরে চলাফেরা করেন। অন্যান্য যে উপসর্গ দেখা যেতে পারে সেগুলি হল মেজাজের দ্রুত পরিবর্তন, শ্রান্তি, জীবনীশক্তির অভাব এবং দুর্বল চিন্তাশক্তি লক্ষ্য করা যায়। এছাড়া ক্লান্তিগ্রস্ত ব্যক্তির মধ্যে তৎপরতার অভাবও দেখতে পাওয়া যায়।
এর প্রধান কারণগুলি কি কি?
শারীরিক কিছু অসুস্থতা, যেমন জ্বর বা ফ্লু, দুর্বলতা এবং ক্লান্তিভাব সাধারণভাবেই দেখতে পাওয়া যায়। এছাড়াও অন্য যেসব অসুখের ক্ষেত্রে এটি দেখা যায় সেগুলি হল:
- হাইপারথাইরয়েডিসম বা উচ্চ-থাইরয়েডের সমস্যা।
- হাইপোথাইরয়েডিসম বা নিম্ন-থাইরয়েডের সমস্যা।
- স্ট্রোক।
- গর্ভাবস্থা।
- অত্যধিক মদ্যপান।
- জ্বর।
- মেনিনজাইটিস।
- মস্তিষ্কে আঘাত।
- কিডনির সমস্যা।
- লাইম রোগ।
- শরীরে জলশুন্যতা, কম ঘুম বা অসম্পূর্ণ পুষ্টি।
- মানসিক সমস্যা, যেমন, বিষণ্ণতা, উদ্বেগ, গর্ভাবস্থা-পরবর্তীকালীন বিষণ্ণতা বা প্রি-মেনস্ট্রুয়্যাল সিনড্রোম বা মাসিকচক্রের পূর্ববর্তীকালীন সমস্যা।
- অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট ও অন্যান্য কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া।
কিভাবে এটি নির্ণয় করা হয় এবং এর চিকিৎসা কি?
ক্লান্তি নির্ণয়ের জন্য রোগীর সম্পূর্ণ চিকিৎসাগত ইতিহাস ও শারীরিক পরীক্ষা প্রয়োজনীয়। হৃদযন্ত্র ও ফুসফুসের পরীক্ষাও করা হতে পারে। এছাড়াও চিকিৎসক রোগীর মানসিক সচেতনতা ও অন্ত্রের শব্দ ও ব্যথার পরীক্ষা করতে পারেন। সম্ভাব্য কোন অসুখের জন্য রোগী ক্লান্তিতে ভুগছেন তা জানতে একাধিক টেস্ট ও ইমেজিং স্টাডি বা প্রতিবিম্বকরণ করা হয়ে থাকে।
ক্লান্তির চিকিৎসা করার আগে, এর অন্তর্নিহিত কারণ নির্ণয় করা প্রয়োজন। কারণ জানা গেলে তার উপর নির্ভর করে এর চিকিৎসা শুরু করা যায়। চিকিৎসক এর জন্য ওষুধ দিতে পারেন, যেমন মানসিক সমস্যার কারণে ক্লান্তি হলে এন্টিডিপ্রেসেন্ট দেওয়া হয়। যথেষ্ট জলপান, পরিমিত ঘুম, সুষম খাদ্যগ্রহণ ও মানসিক চাপ কমানোর মতো কিছু সহজ পদ্ধতি ক্লান্তি নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।