সাইকোসিস কাকে বলে?
সাইকোসিস হল একটি অত্যন্ত গুরুতর মানসিক অসুস্থতা যার ফলে আক্রান্ত ব্যক্তি হ্যালুসিনেশন (দৃষ্টিভ্রম) বা ডিলিউসনে (বিভ্রম) ভোগেন এবং বাস্তব জগতের সঙ্গে যোগসূত্র হারিয়ে ফেলেন। এটি একটি কঠিন সমস্যা যার দ্রুত চিকিৎসা হওয়ার প্রয়োজন কারণ সাইকোসিসের রোগীরা নিজের ও আশেপাশের মানুষদের জন্য বিপদ সৃষ্টি করতে পারেন।
এর প্রধান লক্ষণ ও উপসর্গগুলি কি কি?
সাইকোসিসের অনেক নির্ধারক লক্ষণ এবং উপসর্গ আছে। তার মধ্যে কিছু হল:
- ঘুমের অভাব অথবা অতিরিক্ত ঘুম (নিদ্রা চক্রের ব্যাঘাত)।
- অবসাদ বা বিষণ্নতা।
- উদ্বেগ।
- দৃষ্টিভ্রম।
- বিভ্রম।
- মনযোগের সমস্যা।
- পরিবার ও বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে দূরত্ব সৃষ্টি।
- আত্মহত্যার চিন্তাভাবনা অথবা প্রচেষ্টা।
এর প্রধান কারণগুলি কি কি?
সাধারণত বংশে মানসিক সমস্যার ইতিহাস আছে এমন মানুষের সাইকোসিস ঘটার সম্ভাবনা বেশি। কয়েকটি ক্রোমোজোমের রোগের ফলেও সাইকোসিস হতে পারে। অন্যান্য সম্ভাব্য কারণগুলি হল:
- মাদক সেবন।
- ঝঞ্ঝাটপূর্ণ এবং অবসাদগ্রস্থ পরিবেশ।
- মস্তিষ্কের টিউমার।
- পার্কিনসন্স বা হান্টিংটন্স রোগের মত মস্তিষ্কের রোগগুলি।
- বাইপোলার ব্যাধি।
- ডিলিউসনাল ব্যাধি।
- সাইকোটিক ডিপ্রেশন।
- স্কিজোফ্রেনিয়া।
এটি কিভাবে নির্ণয় এবং চিকিৎসা করা হয়?
আক্রান্ত ব্যক্তির পর্যবেক্ষণ ও উদ্দীপকের প্রতি তার প্রতিক্রিয়ার উপর যেকোন রকম সাইকোটিক বা মনোরোগের ব্যাধির নির্ণয়করণ নির্ভর করে। চিকিৎসক রোগীকে অবস্থাটির পরবর্তী সাহায্য ও মূল্যায়নের জন্য মনোচিকিৎসকের কাছে পাঠাতে পারেন।
এই সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিকে অ্যান্টিসাইকোটিক প্রকৃতির ওষুধ দেওয়া হয় যা দৃষ্টিভ্রম ও বিভ্রম কমাতে এবং বাস্তব জগৎ ও অবাস্তবের মধ্যে নিশ্চিত পার্থক্য বোঝাতে সাহায্য করে।
কাউন্সেলিং ও সাইকোথেরাপির পরামর্শও দেওয়া হয়ে থাকে, এবং এইরকম সমস্যায় এগুলি সাহায্য করে, বিশেষত বাইপোলার ও সাইকোটিক অসুস্থতায় যেখানে একজন কাউন্সেলরের সাথে নিয়মিত সাক্ষাৎ রোগীকে স্বাচ্ছন্দ্য এবং বাস্তবের সঙ্গে যুক্ত থাকার অনুভূতি দেয়।
সাইকোসিসের সঙ্গে লড়াই একটি কঠিন প্রক্রিয়া, এর জন্য প্রয়োজন দৃঢ়সংকল্প মনোভাব এবং আক্রান্ত ব্যক্তিকে একটানা সাহায্য ও সহায়তা প্রদানের জন্য পরিবারের সদস্যদের থেকে সহযোগিতা, কারণ এইরকম পরিস্থিতিতে সাধারণত রোগী ও তার পরিবারের সদস্যদের মধ্যে দূরত্বের সৃষ্টি হয়।