রিপ্রোডাকটিভ সিস্টেম ইনফেকশন (জন্মদায়ক পদ্ধতি সংক্রমণ) কি?
রিপ্রোডাকটিভ সিস্টেম ইনফেকশন (জন্মদায়ক পদ্ধতি সংক্রমণ) মহিলা ও পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রে জনন নালীকে আক্রান্ত করে। এটি সাধারণত শরীরের মধ্যে বসবাসকারী মাইক্রোবের দ্বারা সৃষ্ট হতে পারে অথবা সেগুলি অন্যস্থান থেকেও আসতে পারে। এই সংক্রমণ যৌন প্রেরিত ও অযৌন প্রেরিত উভয় প্রকারের হতে পারে। মহিলাদের ক্ষেত্রে দ্বিতীয়টি বেশি দেখা যায়।
এর প্রধান লক্ষণ ও উপসর্গগুলি কি কি?
সংক্রমণের সম্ভাবনা মহিলাদের মধ্যে বেশি থাকে কারণ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এর উপসর্গ থাকে না বা থাকলেও তা জানা যায় না। যাইহোক, মহিলাদের ক্ষেত্রে যোনি থেকে নিঃসরণ হল এর সবচেয়ে বড় উপসর্গ। মহিলাদের মধ্যে রিপ্রোডাকটিভ সিস্টেম ইনফেকশনের অন্যান্য লক্ষণগুলি হল:
- জননেন্দ্রিয়ে ব্যথা।
- মূত্রত্যাগের সময় জ্বালাভাব বা চুলকানি।
- যোনিতে ঘা।
- মাসিকচক্রের সময় ব্যথা অনুভব।
- তলপেটে ব্যথা।
- যৌনমিলনের সময় ব্যথা অনুভব।
পুরুষদের ক্ষেত্রে রিপ্রোডাকটিভ সিস্টেম ইনফেকশনের উপসর্গগুলি হল:
- লিঙ্গ থেকে মৎসগন্ধযুক্ত তরলের নির্গমন।
- প্রদাহ এবং চুলকানিভাব।
- ব্যথা।
- ত্বকে ঘা।
এর প্রধান কারণগুলি কি কি?
এই সংক্রমণ তার কারণ অনুযায়ী বিভিন্নভাগে বিভক্ত:
- যৌন সংক্রামণের ফলে সৃষ্ট রোগ, যেমন চ্যানক্রয়েড, ক্লেমেডিয়া, গনোরিয়া, হারপিস, সিফিলিস, এবং হিউম্যান ইমিউনোডেফিসিয়েন্সি ভাইরাস (এইচআইভি) সংক্রমণ।
- এন্ডোজেনের সংক্রমণ, যা সাধারণত মহিলাদের জনননালীর অভ্যন্তরে থাকা জীবাণুগুলির অতিরিক্ত মাত্রায় বৃদ্ধির কারণে হয়, যেমন, ভালভোভ্যাজাইনাল ক্যান্ডিডিয়েসিস, ব্যাকটেরিয়াল ভ্যাজাইনোসিস।
- ইয়াট্রোজেনিক সংক্রমণ, যা সাধারণত চিকিৎসাব্যবস্থায় গাফিলতির জন্য হয়, যেমন সঠিক পদ্ধতিতে প্রসব না করানো এবং অসুরক্ষিত গর্ভপাত।
এটি কিভাবে নির্ণয় এবং চিকিৎসা করা হয়?
অবস্থাটির উপসর্গগুলির উপর ভিত্তি করে রোগ নির্ণয় করা হয়। শারীরিক পরীক্ষা পুরুষ এবং মহিলা উভয়ের রিপ্রোডাকটিভ ট্র্যাক্ট ইনফেকশনের নির্ণয় করতে একটি সাধারণ পদক্ষেপ।
শারীরিক পরীক্ষা ছাড়া, ডাক্তার যোনি থেকে নিঃসৃত তরলের আণুবীক্ষণিক পরীক্ষা, মূত্র পরীক্ষা, তলপেটের সোনোগ্রাফি এবং মহিলাদের ক্ষেত্রে উপসর্গগুলির সঠিক কারণ জানার জন্য শ্রোণী অঞ্চলের পরীক্ষা করতে দিতে পারেন।
ডাক্তার উপসর্গগুলির অন্তর্নিহিত কারণ জানার জন্য মূত্র বিশ্লেষণ, লিঙ্গ থেকে নির্গত তরলের আণুবীক্ষণিক পরীক্ষা এবং পুরুষদের তলপেট এবং শ্রোণী অঞ্চলের সোনোগ্রাফি করতে দিতে পারেন।
সংক্রমণের সঠিক কারণের উপর ভিত্তি করে চিকিৎসাটি ভিন্ন হতে পারে। সাধারণত অবস্থাটির উপসর্গ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়ে থাকে। চিকিৎসক অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল ওষুধ, যেমন সেফট্রিঅ্যাকশন, এরিথ্রোমাইসিন, এবং অ্যামোক্সিসিলিন, প্রভৃতি ওষুধের পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
কিছু প্রতিষেধক ব্যবস্থা হল:
- একাধিক যৌন সংসর্গ এড়িয়ে চলা।
- নিজের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার প্রতি যত্নশীল হওয়া।
- যৌন সংক্রমণের দ্বারা ঘটিত রোগের ব্যাপারে সামাজিক শিক্ষাগ্রহণ এবং কন্ডোম ব্যবহার করা।