টক্সিক এপিডারমাল নেক্রোলাইসিস কি?
টক্সিক এপিডারমাল নেক্রোলাইসিস (টিইএন) একটি বিরল এবং মারাত্মক প্রকারের রোগ প্রতিরোধমূলক রোগ, যা নির্দিষ্ট কিছু ওষুধ প্রয়োগের ফলে ঘটে থাকে অথবা চামড়া উঠে যাওয়ার মতো সংক্রমণের ফলে সৃষ্টি হয়। এটি যেকোন বয়সের ব্যক্তিদের আক্রান্ত করতে পারে, তবে বৃদ্ধ মানুষ ও স্বল্প রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাযুক্ত ব্যক্তিদের কাছে এই রোগ বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। আবার, টিইএন খুব সাধারণত পুরুষদের থেকে মহিলাদের শরীরে বেশি দেখা যায়। এই রোগের ক্ষেত্রে অবিলম্বে দ্রুত চিকিৎসার প্রয়োজন হয়।
এর প্রধান লক্ষণ ও উপসর্গগুলি কি কি?
টিইএনের উপসর্গগুলির শ্রেণীবিভাগগুলি হল
প্রাথমিক উপসর্গ
- কাশি।
- ব্যথা।
- চোখের মধ্যে জ্বালাদায়ক অনুভুতি।
- মাথাযন্ত্রণা।
- জ্বর।
পরবর্তী পর্যায়ের উপসর্গগুলি হল
- শরীরের সাথে মুখেও বেগুনী বা লাল র্যাশ দেখা দেওয়া।
- জিভে এবং মুখে ফোলাভাব।
- মুখগহ্বরে, চোখে ও যোনির চারপাশে ফোস্কা হওয়া।
- চামড়া উঠে যাওয়ার কারণে ত্বকে জ্বালাভাব।
এর প্রধান কারণগুলি কি কি?
যেসব ওষুধগুলি সাধারণত টিইএনের জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী সেগুলি হল
- সালফোনামাইডস।
- এলোপুরিনল।
- স্টেরয়েডবিহীন প্রদাহনাশক ওষুধ।
- মৃগী-নাশক ওষুধ, যেমন ফেনাইটয়েন, লেমট্রিজিন, ও কার্বামেজিপিনের মতো ওষুধের ব্যবহার।
অন্যান্য রোগগুলি, যেমন হিউম্যান ইমিউনোডেফিসিয়েন্সি ভাইরাস (এইচআইভি) ও হারপেস সিমপ্লেক্স টিইএনের কারণ হতে পারে।
কিভাবে এই রোগ নির্ণয় করা হয় ও এর চিকিৎসা কি?
টিইএন নির্ণয়ের প্রথম পদক্ষেপ হিসাবে ব্যক্তির শারীরিক পরীক্ষা করা হয়। ষ্টিভেনস-জনসন সিন্ড্রোমের (এসজেএস) সম্ভবনা খুঁজে বের করতে, শরীরের কতটা অংশে এটি ছড়িয়ে পড়েছে তা দেখা হয়। যদি শরীরের উপরিত্বকের 30% এর বেশি স্থানে এটি ছড়িয়ে পড়ে, তাহলে এসজেএস হয়েছে বলে ধরা হয়। ত্বকের বায়োপসি ও হিসটোপ্যাথোলজিক্যাল পরীক্ষা করে চিকিৎসাগত নির্ণয়টিকে নিশ্চিত করা হয়।
তৎক্ষ্ণাৎ ব্যবস্থা হিসাবে বর্তমানে ব্যবহৃত ওষুধগুলি বন্ধ করে দেওয়া হয়। অন্যান্য চিকিৎসাগত ব্যবস্থাপনাগুলি হল
- বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে সহায়তামূলক যত্ন।
- আক্রান্ত অঞ্চলে পোড়াস্থানে ব্যবহারের ড্রেসিং দেওয়া।
- ব্যথা-কমানোর ওষুধ ব্যবহার।
- সংক্রমণ প্রতিরোধে শিরায় প্রদানের অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার।
- সাইটোটক্সিক পক্রিয়ায় বাধা দিতে শিরায় প্রদানের মাধ্যমে ইমিউনোগ্লোবিউলিন প্রয়োগ করা।
- সাময়িকভাবে প্রলেপ দেওয়ার ক্রিম ব্যবহার।