ডিপ ভেইন থ্রম্বোসিস (ডিভিটি) কি?
ডিপ ভেইন থ্রম্বোসিস (ডিভিটি) হল একটা অবস্থা যেখানে কোন একটি গভীর শিরার মধ্যে থেকে রক্ত জমাট বাঁধে, সাধারণত পায়ে। এটা যে কাউকে প্রভাবিত করতে পারে, মূলত যারা 60 বছরের উপরে। ভারতে এই রোগ হওয়ার মাত্রা হল 8%-20%।
এর প্রধান লক্ষণ এবং উপসর্গগুলো কি কি?
এর প্রধান উপসর্গ হল পা ফুলে যাওয়া। খুবই বিরল ক্ষেত্রে, দুই পায়ের ফুলে যেতে দেখা যায়।
এর অন্যান্য উপসর্গগুলির মধ্যে রয়েছে:
- পায়ে ব্যথা।
- পায়ের উপরে লালচে বিবর্ণতা।
- পায়ে গরম অনুভব করা।
যদি এই উপসর্গগুলিকে উপেক্ষা করা হয়, তাহলে রক্তের জমাট স্থানচ্যুত হতে পারে, এবং রক্তস্রোতের মাধ্যমে ফুসফুস অবধি বইতে থাকে এবং রক্ত চলাচল রোধ করে, যা পালমোনারি এম্বলিজমের কারণ হয়।
পালমোনারি এম্বলিজমের উপসর্গগুলির মধ্যে রয়েছে:
- হঠাৎ করে নিঃশ্বাস নেওয়ার সমস্যা।
- বুকে ব্যথা যা গভীর নিঃশ্বাস নেওয়া এবং কাশির সাথে আরো খারাপ হয়।
- মাথা ঘোরা।
- নাড়ির স্পন্দনের বৃদ্ধি।
- রক্ত কাশি হওয়া।
এর প্রধান কারণগুলি কি কি?
যে কোন জিনিস যা রক্ত চলাচল রোধ করে তা ডিভিটির কারণ হতে পারে। এর প্রধান কারণগুলি হল:
- ভেইনে কোন আঘাত।
- অস্ত্রোপচার।
- গুরুতর অসুস্থতা যেমন ক্যান্সার, হার্টের রোগ অথবা তীব্র সংক্রমণ।
- নির্দিষ্ট ওষুধগুলি।
- দীর্ঘ সময়ের নিষ্ক্রিয়তা।
কিছু ঝুঁকির বিষয়গুলি যা ডিভিটি হওয়ার সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে দেয়:
- বংশগত তঞ্চন ব্যাধি।
- গর্ভাবস্থা।
- জন্ম নিয়ন্ত্রণকারক ওষুধ ব্যবহার করা।
- স্থূলতা।
- ধূমপান করা।
- হৃদস্পন্দন বন্ধ হওয়া।
- ইনফ্লামাটরি বাওয়েল ডিজিজ।
এটি কিভাবে নির্ণয় এবং চিকিৎসা করা হয়?
রোগীর মেডিকেল ইতিহাস এবং প্রভাবিত পায়ের শারীরিক পরীক্ষার উপর মূলত নির্ণয় নির্ভর করে। ওষুধের ইতিহাসও নেওয়া হয়। অন্যান্য নির্ণয়ের ধাপগুলির মধ্যে রয়েছে:
- ডি-ডাইমার পরীক্ষা।
- আল্ট্রাসাউন্ড।
- ভেনোগ্রাফি।
- সিটি বা এমআরআই স্ক্যান।
- পালমোনারি এঞ্জিওগ্রাফি।
এমন কিছু পরীক্ষাও আছে যা ডিভিটির অন্তর্নিহিত কারণ সনাক্ত করতে পারে:
- রক্ত পরীক্ষা।
- বুকের এক্স-রে।
- ইসিজি।
ডিভিটি চিকিৎসা করার লক্ষ্য হল ব্যথা এবং জ্বালাভাব থেকে রেহাই দেওয়া। ওষুধগুলি, বিশেষত রক্ত পাতলা করার এজেন্টগুলিকেই শ্রেয় মনে করা হয়।
প্রতিরোধক ধাপগুলি:
- যদি আপনি শয্যাশায়ী হন, যতটা সম্ভব তাড়াতাড়ি চলাফেরা করুন। যত তাড়াতাড়ি আপনি এটা করবেন, ততই ডিভিটি হওয়ার সম্ভাবনা কমতে থাকবে।
- অনেকক্ষণ বসে থাকার কারণে হওয়া কঠিনতা ঠিক করার জন্য পায়ের পেশির ব্যায়াম করুন।
- ঢিলাঢালা জামাকাপড় পড়ুন যাতে চলাফেরা এবং রক্ত চলাচলের বাঁধা এড়ানো যায়।
- সক্রিয় জীবনযাপন করুন।
- যখন আপনি রক্ত-পাতলা করার ওষুধ খাচ্ছেন তখন কোনরকম রক্তপাত হয় কিনা সেদিকে নজর রাখুন।