এমফাইসেমা কি?
এমফাইসেমা বা এমফিসেমা হলো এক ধরনের ক্রনিক অবস্ট্রাক্টিভ পালমোনারি ডিজিজ (সিওপিডি), যা ফুসফুস টিসুকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। এমফাইসেমার কারণে শ্বাসকষ্ট হয় এবং একজন ব্যক্তিকে তার রোজকার বিভিন্ন কাজকর্ম এবং খেলাধুলোয় বাধা দিতে পারে। এর সঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী ব্রংকাইটিস এবং লাগাতার কাশির মতো আরও অন্যান্য শ্বাসের অসুখ দেখা দিতে পারে। এমফাইসেমাতে ফুসফুসে অবস্থিত অ্যালভিওলি (বায়ুথলি] ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
এর প্রধান লক্ষণ ও উপসর্গগুলো কি কি?
এমফাইসেমার প্রধান উপসর্গগুলো নীচে বলা হলো:
- শ্বাসের অভাব
- শ্বাসহীনতা
- লাগাতার কাশি
- ক্লান্তি
- বুকের আকৃিততে পরিবর্তন (ছাতি ওপরের দিকে ওঠা)
- পর্যাপ্ত অক্সিজেনের অভাবে চামড়ায় নীল ছোপ
এর প্রধান কারণগুলো কি কি?
নিম্নলিখিত কারণে এমফাইসেমা হয়:
- দীর্ঘ সময় ধরে হাওয়াতে ভেসে বেড়ানো উত্তেজক পদার্থের সংস্পর্শে আসা।
- ধূমপান
- প্রচণ্ড বায়ু দুষণের সংস্পর্শে আসা
- বিরল ক্ষেত্রে, এমফাইসেমা জিনগত কারণে হতে পারে।
ধূমপান এমফাইসেমার সবচাইতে বিপজ্জনক কারণ। প্যাসিভ স্মোকের সংস্পর্শে এলেও কারওর এই রোগ হতে পারে। খনি শিল্পের কাজ করা ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে এমফাইসেমা পেশাগত ঝুঁকি হতে পারে।
এটি কিভাবে নির্ণয় ও চিকিৎসা করা হয়?
লাংগস ফাংশন টেস্ট বা ফুসফুসের কার্যকারিতা পরীক্ষার মাধ্যেম এমফাইসেমা নির্ণয় করা হয়। এই পরীক্ষাগুোলর মাধ্যমে ব্যক্তির শ্বাস নেওয়ার গতি এবং কতটা পরিমাণ অক্সিজেন গ্রহণ করতে পারে, তা জানা যায়। রোগ নির্ণয়ের অন্যান্য পরীক্ষা হলো এক্স-রে ও সিটি স্ক্যান।
এমফাইসেমার পুরোপুরি নিরাময়ের চিকিৎসা এখনও উপলব্ধ নয় এবং এই অসুখ শুধুমাত্র উপসর্গ অনুযায়ী নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।
ফুসফুসের প্রদাহ কমাতে চিকিৎসক প্রদাহ-রোধী ওষুধ দিতে পারেন।
বুকের ছাতির সংক্রমণে অ্যান্টিবায়োটিকস দেওয়া হয়।
গুরুতর সমস্যা থাকলে অক্সিজেন দিয়ে চিকিৎসা করা হয়।
কিছু রোগ প্রতিরোধক পদ্ধতি রয়েছে, যেগুলি নেওয়া যেতে পারে, এই অসুখ বাড়াবাড়ি ও গুরুতর আকার না নেয়। এগুলি হলো:
- ধূমপান বন্ধ করা
- বায়ু দূষকের সংস্পর্শে না আসা
- শ্বাস নেওয়ার মাস্ক ব্যাবহার করা।
- নিয়মিত ব্যায়াম করা
- ছাতির সংক্রমণ থেকে সুরক্ষায় টীকা নেওয়া।