লিভার বড় হওয়া (বর্ধিত লিভার) কি?
সাধারণ ভাইরাস সংক্রমণ থেকে হার্ট ফেলিওর বা হৃদস্পন্দন বন্ধ হওয়ার মতো গুরুতর চিকিৎসাগত অবস্থায় লিভার বড় হয়ে গেলে তাকে তখন বর্ধিত লিভার বা হেপাটোমেগালি বলা হয়। সাধারণত, অন্তর্নিহিত কারণের চিকিৎসা হেপাটোমেগালি সারাতে সাহায্য করে।
এই রোগের প্রধান লক্ষণ এবং উপসর্গগুলি কি কি?
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, লিভার বড় হয়ে যাওয়ায় কোন উপসর্গ দেখা যায় না, কিন্তু উপসর্গগুলি স্পষ্ট হতে পারে অভ্যন্তরীণ অসুস্থতা বা রোগের কারণে। এর কয়েকটি উপসর্গ নীচে উল্লেখ করা হল:
- পেটে ব্যথা
- বমি বমি ভাব
- জন্ডিস
- অবসাদ এবং দুর্বলতা
এর প্রধান কারণগুলি কি কি?
শরীরের একাধিক কার্যকলাপে লিভারের যেহেতু কেন্দ্রীয় ভুমিকা রয়েছে, এইসব কার্যকলাপের পরিবর্তনের কারণে একাধিক রোগ হতে পারে, যার ফলে লিভার বৃদ্ধি পায়।
হেপাটোমেগালির খুব সাধারণ কারণগুলি হল:
- লিভারের রোগ
- জীবাণুঘটিত ফোড়া - ই. হিস্টোলাইটিকা সংক্রমণের কারণে লিভারে পূঁয-ভর্তি গর্ত তৈরী হয়।
- হেপাটাইটিস
- সিরোসিস
- ফ্যাটি লিভার বা মেদবহুল লিভার
- হেমোক্রোমাটোসিস - শরীরে অতিরিক্ত লৌহ জমা হওয়া
- লিভারে সিস্ট হওয়া
- লিভারের হেমাঞ্জিওমাস - লিভারের রক্তবাহী শিরা-উপশিরার বিকৃতি
- পিত্তকোষে প্রতিবন্ধকতা
- অ্যামালয়ডোসিস
- উইলসন রোগ - শরীরে অতিরিক্ত তামা জমা হওয়া
- অন্যান্য রোগ
- লিভার ক্যান্সার
- লিম্ফোমা
- লিউকেমিয়া
- হার্ট ফেলিওর
- পেরিকার্ডিটিস
- সংক্রমণ, যেমন ম্যালেরিয়া এবং টাইফয়েড
এটি কিভাবে নির্ণয় করা হয় এবং এর চিকিৎসা কি?
নিম্নলিখিত নির্দিষ্ট কিছু পরীক্ষার দ্বারা এই রোগের অন্তর্নিহিত কারণ নির্ণয় করা হয়।
- রক্ত পরীক্ষা
- সম্পূর্ণ রক্ত গণনা (সিবিসি)
- লিভারের কার্যকারিতা পরীক্ষা
- রক্তরসে প্রোটিনের মাত্রা
- হেপাটাইটিস এ,বি,সি,ডি এবং ই অ্যান্টিজেন/অ্যান্টিবডির মাত্রা পরীক্ষা
- ইমেজিং স্টাডিজ বা প্রতিবিম্বিতকরণ দ্বারা পরীক্ষা
- পেটের সোনোগ্রাফি
- কম্পিউটার দ্বারা পেটের টোমোগ্রাফি (সিটি) স্ক্যান
- ম্যাগনেটিক রিজোনেন্স ইমেজিং (এমআরআই) স্ক্যান
-
লিভার বায়োপসি - এটি লিভার কোষগুলির অভ্যন্তরীণ কোষীয় গঠন জানতে (হেপাটোসাইট) এবং রোগ নির্ণয় করতে সাহায্য করে
লিভার বৃদ্ধি পাওয়ার কারণের উপর হেপাটোমেগালির চিকিৎসা সম্পূর্ণভাবে নির্ভরশীল। যদি রোগের কারণ সংক্রমণ হয়, অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া যেতে পারে; হৃদযন্ত্রের রোগের ক্ষেত্রে,অভ্যন্তরীণ অবস্থার চিকিৎসার প্রয়োজন; কখনও কখনও এটি সম্পূর্ণরূপে নিজে থেকে ঠিক হয়ে যায় বা কখনও সহায়ক এনজাইম বা উৎসেচকের প্রয়োজন হয়। যদি ক্যান্সারের কারণে লিভার বৃদ্ধি পায় তখন সার্জারি বা কেমো-রেডিয়েশন থেরাপির প্রয়োজন হয়।