প্যানক্রিয়াটাইটিস কি?
পাচক এনজাইম এবং হরমোন প্যানক্রিয়াস থেকে নিঃসৃত হয়। কখনও পাচক এনজাইম প্যানক্রিয়াসের ভিতরের স্তরকে হানি পৌঁছায় এবং প্রদাহের সৃষ্টি করে, এই প্যাথোলজিকাল অবস্থাকে প্যানক্রিয়াটাইটিস বলে। এটা তীব্র বা দীর্ঘসময় ধরে হতে পারে। এটা হজম সংক্রান্ত অসুখের মধ্যে অতো সাধারণ নয়, এবং এইজন্য এই অবস্থায় তৎক্ষনাৎ হাসপাতালে চিকিৎসার প্রয়োজন।
এর প্রধান লক্ষণ ও উপসর্গগুলি কি কি?
কিছু সাধারণ লক্ষণ ও উপসর্গগুলি হলো:
- তীব্র পেটের উপরিভাগে এবং পিঠে ব্যথা।
- পেট ফুলে যাওয়া।
- বমি ভাব।
- দ্রুত হৃদস্পন্দন।
- বমি হওয়া।
- জ্বর।
- ডায়েরিয়া।
- ওজন কমে যাওয়া।
- শ্বাসের অভাব।
- অগ্নাশয় বা গলব্লাডার নালী বন্ধ হয়ে যাওয়া।
- পতন।
- অতিরিক্ত ঘাম হওয়া।
এর প্রধান কারণগুলো কি কি?
প্যানক্রিয়াটাইটিসের সাধারণ কারণগুলি হলো :
- মদ্যপান।
- গলব্লাডারে পাথর।
- অগ্নাশয়ের বংশগত সমস্যা।
- ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া।
- পেটে আঘাত পাওয়া।
- প্যানক্রিয়াটিক ক্যান্সার।
- হাইপারগ্লাইসেমিয়া এবং হাইপারট্রাইগ্লাইসেরিডেমিয়া।
- মাম্পস।
এটি কিভাবে নির্ণয় ও চিকিৎসা করা হয়?
দুই প্রকারের প্যানক্রিয়াটাইটিস দেখা যায়- তীব্র এবং দীর্ঘমেয়াদী। যখন পেটে হঠাৎ এবং মারাত্বক আঘাত পৌঁছায় তখন তীব্র প্যানক্রিয়াটাইটিস হয়। এর ফলে কিডনি কাজ করা বন্ধ করে দিতে পারে বা হার্টফেল হতে পারে। প্রচুর মদ্যপানের কারণে দীর্ঘমেয়াদী প্যানক্রিয়াটিটিস দেখা দেয়। এটা দীর্ঘসময় ধরে থাকে এবং এর ঠিক হওয়ার সম্ভাবনাও খুবই কম থাকে। কিছু অনুসন্ধানের সাথে শারীরিক পরীক্ষাও করা হয় ব্যাধি নির্ণয় নিশ্চিত করার জন্য।
নিম্নলিখিত উপায়ে প্যানক্রিয়াটাইটিসের নির্ণয় করা হয়:
- এমআরআই স্ক্যান- এই পরীক্ষায় অগ্নাশয় নালীর ছবির সাহায্যে চিকিৎসক এই ব্যাধির প্রকৃত কারণ জানতে পারেন।
- পেটের আল্ট্রাসাউন্ড- এটা গল ব্লাডারে পাথর নির্ণয় করতে সাহায্য করে।
- সিটি স্ক্যান- এটা গ্রন্থির 3-ডি ছবি নিতে সাহায্য করে।
- কিছু আরো পরীক্ষা আছে যেমন এক্স- রে, এবং অ্যামিলেজ মাত্রার রক্তপরীক্ষা করা হয় প্যানক্রিয়াটাইটিসের নির্ণয় নিশ্চিত করতে।
নির্ণয়ের পর বিভিন্ন পদ্ধতিতে চিকিৎসা করা হয় যেমন:
- অস্ত্রোপচার- সাধারণত পাথর পাবার পর গল ব্লাডার বাদ দেওয়া হয়। আরো যদি সম্ভব হয়, অগ্নাশয়ের খারাপ অংশও বাদ দেওয়া হয়।
- এন্ডোস্কোপি- গল ব্লাডারে পাথর দূর করতে করা হয়।
- ইনট্রাভেনাস ফ্লুইডস্- প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।
- অ্যনালজেসিক্স (ব্যথা কমার ওষুধ) যন্ত্রনার থেকে মুক্তি পাবার জন্য।
হাসপাতাল থেকে একবার তীব্র প্যানক্রিয়াটাইটিস নিয়ন্ত্রণে এসে গেলে আপনার দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় যে পরিবর্তনগুলো করা দরকার, সেগুলো হলো:
- মদ্যপান ছেড়ে দেওয়া।
- তৈলাক্ত খাবার এড়িয়ে চলা।