রান্নার স্বাদ বৃদ্ধি করে রসুন। আবার তার নিরাময়কারী বৈশিষ্ট্য এবং স্বাস্থ্যের উপকারের জন্য রসুন ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। এর স্বতন্ত্র তীক্ষ্ণ ঝাঁঝালো স্বাদ এবং গন্ধের জন্য সারা বিশ্বে পাচক'রা এর কদর করেন। আদিতে রসুনের উৎস ছিল মধ্য এশিয়া। তারপর এর স্বাদ ও গন্ধের কারণে এবং ঔষধি গুণের জন্য এর ইতিহাস খুবই বিস্তৃত। ইউএসডিএ (মার্কিন যুক্তরাজ্যের কৃষি বিভাগ) অনুযায়ী রসুন প্রাচীনতম ফসল যা বহু কাল ধরেই চাষ করা হচ্ছে।
সুমেরিয়ানরা খৃষ্টপূর্ব 2100 সালে রসুনের ব্যবহার করেছেন। ঔষধি গুণ এবং ক্ষুধাবৃদ্ধি গুণের জন্য প্রাচীন ভারতীয়রা এর ব্যবহার করেছেন। আপনি জানলে অবাক হবেন যে গ্রীস দেশে রসুনকে দেবতার যথোপযুক্ত অর্ঘ বলে মানা হত। কোন কোন ঐতিহাসিকদের মতে, প্রাচীন গ্রীসের অলিম্পিক খেলোয়াড়রা তাদের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করতে রসুন খেতেন।
সারা বিশ্বের মুখ্য সভ্যতাগুলিতে, ইরান সহ, রসুনের ব্যবহার এবং তার নিরাময়কারী প্রভাব নিয়ে কিংবদন্তী রয়েছে। তিব্বত, ইজরায়েল, পারস্য, ব্যবিলন, ইত্যাদি নামের তালিকাটি দীর্ঘ। আশ্চর্য নয়, তার গুণের জন্য রসুনকে দুনিয়ার স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা "প্রাকৃতিক অ্যান্টি-বায়োটিক", "উদ্ভিদের কবচ" এবং "রাশিয়ান পেনিসিলিন" নাম দিয়েছেন। আপনার জেনে হয়তো ভাল লাগবে যে প্রাচীন ইজিপ্ট'এ স্বাস্থ্য-সম্বন্ধীয় উপকারের জন্য রসুনকে একটি মূল্যবান সম্পদ বলে মনে করা হত। তথ্য বলছে যে পাথরে খোদাই করা "ইজিপ্টিয়ান ট্যাবলেট" শিলালিপিতে লেখা আছে যে সমস্ত ক্রীতদাসরা পিরামিড তৈরি করেছিলেন তাদের খাদ্যের পুষ্টিকর সম্পূরক হিসাবে রসুন ব্যবহৃত হয়েছিল। ক্রীতদাসদের খাবারের জন্য রসুন যোগার করার জন্য ইজিপ্টশিয়ানরা বিপুল সম্পদ ব্যয় করেছিলেন।
আপনি জানতেন কি?
আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে ছয় রকমের স্বাদের কথা বলা আছে। যেমন, কটু স্বাদ, নোনতা স্বাদ, মিষ্ট স্বাদ, তিক্ত স্বাদ, ধারক (অ্যাস্ট্রিনজেন্ট) স্বাদ এবং অম্ল স্বাদ। অম্ল স্বাদ বাদে রসুনে আর বাকি পাঁচটি স্বাদই উপস্থিত।
রসুন সম্পর্কে কিছু মৌলিক তথ্য
- বৈজ্ঞানিক নাম: এ্যালিয়াম সেটিভাম
- পরিবার: এ্যলিয়াসি / এ্যমারিলিডেসি (লিলিয়েসি)
- সাধারণ নাম: রসুন, লসুন
- সংস্কৃত নাম: লসুনা
- যে অংশ ব্যবহার করা হয়: কন্দ, কচি অঙ্কুর (রান্নার সবজি)
- আদি অঞ্চল এবং ভৌগলিক বিতরণ: রসুনের আদি নিবাস এশিয়া যেখানে ভারতবর্ষেও এর চাষ হত। এছাড়া চিন, ইজিপ্ট, ইউরোপ, ইরান এবং মেক্সিকোতেও পাওয়া যেত।
- কর্মশক্তি: গরম